খেলা

তামিমের সেঞ্চুরি সত্বেও শেষ মূহুর্তে পাকিস্তানের কাছে পরাজয়ে

By Daily Satkhira

May 28, 2017

ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা জয়ের ধারা বাংলাদেশ ধরে রাখতে পারত প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেও। পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম ইকবালের দেখানো পথে ব্যাটে বলে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেছিল তারা। কিন্তু শেষ কয়েক ওভারে এসে ফাহিম আশরাফের ব্যাটিং তাণ্ডবে জয় হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের। শনিবার বার্মিংহামের এজবাস্টনে পাকিস্তানের বিপক্ষে তারা হেরেছে ২ উইকেটে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ পেয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ তারা ভারতের বিপক্ষে খেলবে ৩০ মে। এর আগেই পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং ও বোলিং অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। তামিমের সেঞ্চুরির সঙ্গে ইমরুল কায়েসের ফিফটি এবং মুশফিকুর রহিম ও মোসাদ্দেক হোসেনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেটে ৩৪১ রান করে তারা।

বাংলাদেশের শুরুটা হোঁচটে হয়েছিল। জুনাইদ খানের বলে মাত্র ১৯ রানে সৌম্য সরকার বাবর আজমের ক্যাচ হন। এর পর ক্রিজে দাঁড়িয়ে যান তামিম ও ইমরুল। দ্বিতীয় উইকেটে ১৪২ রানের শক্তিশালী জুটি গড়েন তারা।

হাফসেঞ্চুরি পাওয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ইমরুল। ৬২ বলে ৮ চারে ৬১ রানে সাদাব খানের শিকার তিনি। তবে তামিম অপর প্রান্তে ঝড় অব্যাহত রেখেছিলেন।

মুশফিকের সঙ্গে মাত্র ৪০ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে ফিরতে হয় তাকে। সাদাব তাকে ফেরান। জুনাইদের ক্যাচ হওয়ার আগে তামিম ৯৩ বলে ৯ চার ও ৪ ছয়ে ১০২ রান করেন।

মুশফিক ৩টি করে চার ও ছয়ে হাফসেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৩৫ বলে ৪৬ রানে তিনি জুনাইদের শিকার হলে দুর্বার রানের গতি কিছুটা কমে যায়।

হাসান আলী তার এক ওভারে মাহমুদউল্লাহ (২৯) ও সাকিব আল হাসানকে (২৩) ফেরালে পরের ব্যাটসম্যানরা বড় অবদান রাখতে পারেনি। মোসাদ্দেক ১৫ বলে ২৬ রানের ছোট ঝড়ো ইনিংস খেলেন।

পাকিস্তানের জুনাইদ খান তার শেষ ২ ওভারে আরও দুটি উইকেট নিয়ে দলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। ৯ ওভারে ৭৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। দুটি করে পান হাসান ও সাদাব।

শেষদিকের ব্যাটসম্যানরা বড় কোনও অবদান রাখতে না পারলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে দলীয় ইনিংসটা মজবুত ছিল বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ব্যর্থ।

রানের পাহাড়ে চড়তে গিয়ে পাকিস্তান ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায়। তাসকিন আহমেদের বলে মাত্র ৮ রানে মুশফিকের ক্যাচ হন পাকিস্তানি ওপেনার। পরের ওভারে মাশরাফি মুর্তজা পান দ্বিতীয় উইকেট। এবারও মুশফিক গ্লাভসবন্দি করেন বাবর আজমকে (১)।

আহমেদ শেহজাদ ও মোহাম্মদ হাফিজ তাদের ব্যাটিং লাইনআপকে কিছুটা মেরামত করতে সফল হন। ৫৯ রানের জুটি গড়েন তারা। এ শক্ত জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ৪৪ রানে শেহজাদকে বোল্ড করেন তিনি।

এর পর শোয়েব মালিককে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান হাফিজ। ৭৯ রানের জুটি গড়েন তিনি। তবে হাফসেঞ্চুরি করতে পারেননি হাফিজ। ৪৯ রানে তাকে ক্রিজ ছাড়া করেন শফিউল ইসলাম। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ৫ রানে মোসাদ্দেকের শিকার তিনি। ১৬৮ রানে পাকিস্তান ৫ উইকেট হারালে আরেকটি প্রতিরোধ গড়ে। শোয়েব মালিক হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইমাদ ওয়াসিমকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু ৭২ রানে মালিককে ফিরিয়ে বড় বাধা দূর করে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যানকে আউট করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এর পর ৭ রানের ব্যবধানে সাদাব (৭) ও ইমাদ (৪৫) উইকেট হারান। সাদাবকে রানআউট করার পর নিজের ওভারে ইমাদকে শিকার বানান মিরাজ।

তখন পাকিস্তানের দরকার ছিল ৪৪ বলে ৯৩ রান। কিন্তু হাসান আলীকে নিয়ে বিস্ফোরক এক ইনিংস খেললেন ফাহিম। মাত্র ২৬ বলে ৪টি চার ও ৩ ছয়ে হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। দুজনে এ চাপ সামলে দেন স্বাচ্ছন্দ্যে। ৬.৫ ওভারে ৯৩ রানের অপরাজিত জুটি গড়েন তারা।

মিরাজ-সাকিব-মাশরাফিরা তাদের বিশেষ করে ফাহিমের ব্যাটের লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ হন। শেষ ২ ওভারে ২৪ রান দরকার পড়লে তাসকিন তার নবম ওভারে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছিলেন। কিন্তু শেষ ওভারে ১৩ রান নিতে খুব বেশি ভুগতে হয়নি ফাহিম-হাসান জুটির। মাশরাফির ওই ওভারে প্রথম তিন বলেই প্রয়োজনীয় রান তুলে ফেলে পাকিস্তান। ফাহিম ৪টি করে চার ও ছয়ে ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন, খেলেছেন ৩০ বল। হাসান ১৫ বলে ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৪৯.৩ ওভারে ৮ উইকেটে পাকিস্তান করে ৩৪২ রান।

বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন।