আসাদুজ্জামান ঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগরে চাঁদার দাবিতে চিংড়ি ঘেরে ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও মারপিটের বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা অভিযোগ ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের ভেটখালী গ্রামের মৃত আলহাজ¦ আবু নুর আলমের ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার সালাউদ্দীন আহমেদ অনি। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, রমজাননগর ইউনিয়নের কালিঞ্চি গ্রামে একতা ফিস নামে আমাদের ৮০ বিঘার একটি চিংড়ি প্রকল্প আছে। গত ইং ১৯৮৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে আমরা সেখানে একটি স্থায়ী পাকা গেটের মাধ্যমে চিংড়ি ঘেরটি দীর্ঘ ৩২ বছর পরিচালনা করিতেছি। এই এলাকার মানুষের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের সু-সম্পর্ক বিদ্যমান। বিগত সময়ে এলাকাবাসীর সাথে আমাদের কোন বিষয়ে মনোমালিন্য হয়নি। এলাকাবাসী তাদের পানি নিস্কাশনের জন্য ওভার পাইপের মাধ্যমের আমাদের গেটটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করে আসছিল। বিগত ১০-১২ বছর পূর্বে আমাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তির উপর নির্মিত ওই গেটের পাশে একটি মসজিদ এবং কবর স্থান নির্মিত হয়। সেখানেও আমরা আর্থিক সহযোগিতা এবং ওই মসজিদ নির্মানে আমরা মাটিও সরবরাহ করেছি।
চিংড়ী ঘেরের পানির ড্রেনের দ্বারা আজ পর্যন্ত মসজিদ ও কবরস্থানের কোন ক্ষতি সাধন হয়নি। এমতাবস্থায় ঘের এলাকায় কয়েকজন স্বার্থন্বেষী ও কুচক্রী মহল আমার ও আমার বড় ভাইয়ের কাছে মোটা অংকের চাঁদাদাবি করেন। আমরা তাদের কিছু কিছু দাবি পূরণ করলেও গত কয়েকমাস পূর্ব থেকে তারা আমাদের ওই পৈত্রিক সম্পত্তিতে নির্মিত চিংড়ি ঘের থেকে উৎখাত করার জন্য আদাজল খেয়ে লাগে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পরবর্তী কয়েকদিনের আকাশ বন্যার কারণে মসজিদ ও কবরস্থানের পাশে জলবাদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তারা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ করার মানষে চিংড়ি প্রকল্পটি বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে হয়রানি মূলক অভিযোগ দিয়ে নাজেহাল করছেন। এরই জের ধরে গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ শুক্রবার দুপুরে তারা আমাদের মৎস্য প্রকল্পের গেট ভাংচুরের পর তা মাটি চাপা দিয়ে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে দেন এবং চিংড়ি ঘেরে ব্যাপক লুটপাট করেন। স্থানীয় কালিঞ্চি এলাকার আব্দুল মাজেদ, আব্দুল গফুর, কেরামত আলী, আলম, মেহেদী বাবু, মিজানুর রহমান মিজান, মহসীন আলী, আব্দুল আলিম বাবু, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুস সালাম, মোহাম্মদ আলী, সামছুর রহমান, আব্দুর রহিম, আছাদুর রহমান ও শহীদ গাজী সরাসরি লাঠিসোঠা নিয়ে উক্ত স্থানে নগ্ন হামলায় নেতৃত্ব দেন। এ ঘটনায় আমরা শ্যামনগর থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করি। এ মামলায় তারা জামিন নিয়ে চিংড়ি ঘেরের বাসায় পেট্রোল দিয়ে অগ্নি সংযোগ করেন ও ঘেরের বাসা পুড়িয়ে দেন।
তিনি আরো বলেন, উল্লিখিত সংঘবদ্ধ চক্রটি সুন্দরবনে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের বাড়ি একেবাবের সুন্দবন সংলগ্ন হওয়ায় তারা চাঁদাবাজিসহ নানা অপর্কম করে থাকেন। তাদের দাবি মোতাবেক চাঁদা না দিতে পারায় শুরু হয় বিভিন্ন চক্রান্ত। আমরা তাদের দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় তারা আমাদের বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র শুরু করেন। তিনি আরো বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। সালাউদ্দীন আহমেদ অনি সংবাদ সম্মেলন থেকে এসময় ওই চক্রটির বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ তাদের দীর্ঘ দিনের চিংড়িঘের ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের প্রতিকারের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।##