অর্থনীতর খবর : ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে (প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ৫/৫ এ স্যার সৈয়দ রোডের নিলয় টাওয়ার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে থাকা র্যাবের একাধিক কর্মকর্তা তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাসেল ও তার স্ত্রীর বাসায় র্যাবের অভিযান এখনো চলছে। অভিযান শেষে র্যাব এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিং করবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি ইভ্যালির অনলাইন প্লাটফর্মে তিন লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকার পণ্য অর্ডার করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পাননি উল্লেখ করে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেন। যেখানে ইভ্যালির আরও বেশ কজন কর্মকর্তাকে ‘অজ্ঞাতনামা’ দেখিয়ে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গুলশান থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক অনিন্দ তালুকদার বলেন, আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার নম্বর- ১৯।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আরিফ বাকের গত ২৯ মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে ইভ্যালিতে মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি পণ্য অর্ডার করেন। এগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও তারা দেয়নি। ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ারে ফোন দিয়ে সমাধান পাওয়া যায়নি। অফিসে গিয়ে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বললে খারাপ ব্যবহার করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও রাসেলের সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন তিনি। তার সঙ্গে ইভ্যালি চরম দুর্ব্যবহার করেছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী আরিফ বাকের বলেন, দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে থানা থেকে জানানো হয় আমার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি হয়েছে। তবে মামলার কপি আমি এখনো হাতে পাইনি।
এছাড়া গত ২৫ আগস্ট সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আরার আদালতে ইভ্যালির বিরুদ্ধে আরেকটি প্রতারণা ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন একজন গ্রাহক। মামলায় ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের নাম উল্লেখ করা হয়। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার বাসিন্দা মো. রাজ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
বহুল আলোচিত-সমালোচিত এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ ৪০৩ কোটি টাকা। আর ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। ৩৩৮ কোটি টাকাই কোম্পানির কাছে নেই।
এদিকে, গত মঙ্গলবার ইভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বাধীন আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি। এদিন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।