জাতীয়

দেশে ৭০ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে

By Daily Satkhira

September 18, 2021

দেশের খবর : দেশের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান ড. ফেরদৌসী কাদরী। শুক্রবার সকালে তার র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার-২০২১ প্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে তিনি একথা জানিয়েছেন।

দেশে এখন করোনা সংক্রমণ কমে এসেছে উল্লেখ করে ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, ‘বিশ্বের প্রতিটি দেশেই এ সংক্রমণ বেড়ে গিয়ে আবারও কমছে। কমার পেছনে অন্যতম কারণ হলো অ্যান্টিবডি। ভাইরাসটির বিরুদ্ধে আমাদের দেশেই ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।’

তিনি বলেন, সংক্রমণ থেকে মুক্ত হতে সবাইকে নিয়মিত হাত ধুতে হবে, মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়া টিকা কার্যক্রমকে গতিশীল করার পাশাপাশি আরও ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কলেরার টিকা নিয়ে গবেষণা এবং সহজলভ্য করার কাজ করেছেন ড. ফেরদৌসী কাদরী। লাখো মানুষের জীবন বাঁচানোর টিকা আবিষ্কারে তার ভূমিকা রয়েছে।

‘দেশে বর্তমানে করোনার সংক্রমণ কমেছে কিন্তু এতে খুব বেশি আশান্বিত হওয়ার কিছু নেই’ মন্তব্য করে ফেরদৌসী কাদরী বলেন, অনেক দেশেই সংক্রমণ এভাবে কমে আবার বেড়ে যাওয়ার নজির রয়েছে। তাই করোনার সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। সবচেয়ে বেশি দরকার ব্যাপক হারে টিকা দেওয়া।

বিশ্বের অনেক দেশের সাংবাদিকই সংলাপে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে জাপানের এনএইচকে গণমাধ্যমের আইকো ডোডেন জানতে চান, বিশ্বে টিকা নিয়ে যে এক অসম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা অর্থনৈতিক নাকি রাজনৈতিক, নাকি ধনী রাষ্ট্রের একচ্ছত্র আধিপত্যের নমুনা—এমন প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌসী কাদরী বলেন, হয়তো এসব কারণ আছে। কিন্তু বিপরীতে মানবিকতারও অনেক উদাহরণ আছে। যেমন, আমরা কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে টিকা পাচ্ছি। এটা অনন্য উদ্যোগ। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত গবেষণার কাজে পশ্চিমা অনেক দেশ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। তাই পুরো বিশ্ব বন্ধুহীন হয়ে গেছে, এমনটা ভাবা চলবে না।’

বাংলাদেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা রোগীর সংখ্যা দুই হাজারের নিচে। কিন্তু ফিলিপাইনে তা এখনও ১৮ থেকে ২০ হাজার। বাংলাদেশের এ সাফল্যের নেপথ্যে কী রয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রতি সংক্রমণ কিছুটা কম। এটা নিয়ে এখনই উপসংহারে আসার মতো কিছু বলা যাবে না। বাংলাদেশ সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। মানুষের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা বেড়েছে। পাশাপাশি টিকার চলমান উদ্যোগ আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সামাজিক দূরত্ব, হাত ধোয়ার অভ্যাস বজায় রাখতে হবে।

‘বাংলাদেশ একটি টিকাবান্ধব দেশ’ মন্তব্য করে ফেরদৌসী কাদরী বলেন, আমাদের ইপিআই কর্মসূচির সুনাম রয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৩১ আগস্ট র‌্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব ট্রাস্টি ২০২১ সালের পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। বিজ্ঞানী ফিরদৌসী কাদরী ছাড়াও এ বছর পাকিস্তানে দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখায় দেশটির অন্যতম বৃহৎ এক ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান মোহাম্মদ আমজাদ সাকিব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাস্তুচ্যুত শরণার্থীদের জীবন পুনর্গঠনে কাজ করা স্টিভেন মুনচি-ও এ পুরস্কার পেয়েছেন।