নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় এক প্রবাসীর স্ত্রীর চক্রান্তে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তার পরিবার। পরিবারটিকে সর্বশান্ত করতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেও ক্ষ্যান্ত হয়নি প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা ইয়াসমিন। অব্যাহত রয়েছে চক্রান্ত। বিভিন্ন দপ্তরে একের পর এক মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করাসহ মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে হয়রানি করে যাচ্ছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কালিগঞ্জ উপজেলার বিঞ্চুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর এলাকার মৃত. আবদুর রহমানের স্ত্রী ব্যাংক কর্মকতা আনজুমানারা এবং তার পরিবার।
জানা গেছে, বিগত ১৯৯৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শহরের রসুলপুর মৌজার মেহেদীবাগে ৩০৪৯ দাগে ৭.৪৭ শতক জমি ক্রয় করেন ব্যাংক কর্মকতা আনজুমানারা। ওই জমি দেখাশুনা করেন একমাত্র ভাই কাটিয়া এলাকার রাশিদ হাসান চৌধুরী। এরপর একই জায়গায় আরও ৭টি প্লটে জমি বিক্রয় করেন জমির মালিক আব্দুস সবুর। সর্বশেষ ‘জি’ প্লটটি বিক্রি করেন তিনি। সেই ‘জি প্লট’টি আরও তিনজনের হাতবদল হয়ে ৪র্থ ক্রেতা হিসেবে ২০১৮ সালে ক্রয় করেন লন্ডন প্রবাসী শফিউজ্জামানের স্ত্রী শামীমা ইয়াসমিন। শামীমা ইয়াসমিন যখন ওই জমি ক্রয় করেন তখন তার জমিতে চলাচলের জন্য কোন পথ না থাকায় তিনি ব্যাংকার আনজুমানারার কাছে তাদের জমির ওপর দিয়ে চলাচলের অনুমতি প্রার্থনা করেন। তার অনুরোধে মৌখিকভাবে তাদেরকে চলাচলের অনুমতি দেন আনজুমানারা। তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে শামীমা খাতুন তার জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে দিয়ে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি আনজুমানারার জমির প্রায় অর্ধশতক জায়গা দখল করে রাতের আধারে ঢালাই রাস্তা নির্মাণ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে শামীমা ইয়াসমিনকে অবৈধ দখল মুক্ত করার অনুরোধ করেন রাশিদ হাসান। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি তাদেরকে মারতে উদ্যোত হন এবং খুন-জখম ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে নিরুপায় হয়ে রাশিদ হাসান চৌধুরী মার্চের প্রথম সপ্তাহে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে কাটিয়া টাউন ফাঁড়ির ইনচার্জ উভয় পক্ষকে ফাঁড়িতে হাজির হওয়ার আহবান বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য। কিন্তু আনজুমানারার পক্ষ হাজির হলেও সাড়া দেননি শামীমা ইয়াসমিন। পরে সমাধান না পেয়ে রাশিদ হাসান চৌধুরী বাবু জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে আরও একটি অভিযোগ করেন। সেখানেও হাজির হননি শামীমা। সর্বশেষ গত শুক্রবার আবারও অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য শামীমাকে অনুরোধ তিনি উত্তেজিত হন। একপর্যায়ে সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিত-া চলাকালীন পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয় পক্ষকে যার যার বৈধ কাগজপত্রসহ পরদিন ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা সদর থানায় বসে বিষয়টি মিমাংসার প্রস্তাব দেন। পুলিশের সে প্রস্তাবে উভয় পক্ষ রাজি হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। কিন্তু শামীমা ইয়াসমিন ওই রাতেই প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে পত্র-পত্রিকায় একটি কুরুচিপূর্ণ সংবাদ পরিবেশণ করান। এরপরও পূর্ব নির্ধারিত মিমাংসার দিনে সাতক্ষীরা সদর থানায় আনজুমানার পক্ষ উপস্থিত হলেও সেখানে উপস্থিত হননি শামীমা ইয়াসমিন বা তার কোন প্রতিনিধি। সেসময় পুলিশের পক্ষ থেকে শামীমাকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তিনি তাতে সাড়া না দিয়ে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সেদিন আর থানায় উপস্থিত হননি। সেদিন শামীমা খাতুন মিমাংসা বৈঠকে অংশগ্রহণ না করায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন রাশিদ হাসান চৌধুরী বাবু। তবে এ বিষয়ে জানার জন্য শামীমাকে ফোন করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন জমি দখল করিনি। সবার যে পথ আমারও সে পথ। বরং রাশিদ হাসান আমার কাছে চাঁদা দাবি করেছেন। রাশিদ হাসান আপনার কাছে কত টাকা চাঁদা দাবি করেছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তোর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। এদিকে, শামীমা কর্তৃক দায়েরকৃত মামলায় অবান্তর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন রাশিদ হাসান বাবু। মামলার এজাহারে সকাল ৪ ঘটিকায় নাকি শামীমা ইয়াসমিনের কাছে চাঁদা দাবি করেছেন। কিন্তু স্থান উল্লেখ করেনি। এছাড়া তার পিতার মাথায় আঘাত করতে গেলে নাকি পিতা ফোলা জখম হয়েছেন। আঘাত করার আগেই কিভাবে জখম হলেন তার পিতা। ভুক্তভোগি রাশিদ হাসান বাবু এবিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ওই কুটকৌশলী নারী শামীমা ইয়াসমিনের চক্রান্তের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।