আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ৬ নং তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদানে বাঁধা প্রদান, অস্ত্র ও সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে নজিরবিহীন তান্ডব চালিয়ে ভোটারদের হাতুড়িপেটা করে জখম করাসহ নির্বাচন উত্তর সহিংসতা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর, মারপিট করে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করায় তালা ইউনিয়ন পরিষদের বিতর্কিত নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতিকের প্রার্থী এস.এম নজরুল ইসলাম। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে এস.এম নজরুল ইসলাম বলেন, প্রথম দফায় ইউপি নির্বাচনে তালা ইউপির ১১টি ইউনিয়নে ২০ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে তালা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মধ্য আটারই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র ও আটারই এজেএইচ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র দুটি সকাল ৮টা থেকে ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত আটারই গ্রামের খোকন সানার ছেলে সরকারি তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী শিমুল সানার নেতৃত্বে ৮০-৯০ জন দেশীয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা দখল করে নেয়। মধ্য আটারই ভোটকেন্দ্রে আমার কোন এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এজেএই বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রটিতে এজেন্ট ঢুকলেও মাসুম সরদার নামের লাঙ্গল প্রতিকের এজেন্টকে হাতুড়িপেটা করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। সরদার জাকির ও মশিয়ার বাহিনীর লালিত সন্ত্রাসীরা রাস্তায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় যাতে আমার লাঙ্গল প্রতিকের লোকজন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে। তাছাড়া কেন্দ্রে যারা প্রবেশ করে তাদেরকে সরদার জাকিরের নৌকা প্রতিকে ভোট দিতে বাধ্য করে। ভোর বেলায় আটারই ঋষিপাড়ায় শিবপদ দাসের পুত্রকে সন্ত্রাসী শিমুল সানার নেতৃত্বে হাতুড়ি পেটা করে। আটারই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহিলা ভোটকেন্দ্রে লাঙ্গল প্রতিকের এজেন্টদের প্রবেশ ফরম ও ভোটার তালিকা কেড়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলে। সারাদিন এই কেন্দ্র দুটি দখল করে একতরফাভাবে জনগণকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিরোধী প্রার্থী সরদার জাকির নৌকা প্রতিকে ভোট নেয়। ভোটচলাকালীন আমার কর্মী আটারই গ্রামের মোহাম্মদ গাজীর ছেলে রাসেল গাজী লঙ্গল প্রতিকে ভোট দিয়ে বের হলে তাকে শিমুল সানার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা হাতুড়িপেটা করে। ভোটের দিন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার ফলে লাঙ্গল প্রতিকের সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেনি।
লিখিত বক্তব্যে আরও জানানো হয়, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার দিকে জেয়ালা নলতা গ্রামের হাসানকে সন্ত্রাসী জিয়া নিকারী হাতুড়িপেটা করে আহত করে। এতে ঐ অঞ্চলের লাঙ্গলের সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেনি। ভোটের দিন ২০ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী সরকার জাকিরের বাড়ির পাশে বারুইহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রটিতে রেইনকোর্ট পরিহিত ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী রামদা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে লাঙ্গল প্রতিকের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে মারপিট করে বের করে দিয়ে নিজেরা ভোট প্রদান করে। এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির ফলে লাঙ্গলের ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে পারেনি এখানেও। ভোটের দিন মুড়াকলিয়া গ্রামের মোজাহার সরদারকে কুপিয়ে জখম করে নৌকার প্রার্থীর ভাড়াটে সন্ত্রাসী লাভলু ও কামালসহ ১০-১২ জনের সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী। ভোট পরবর্তী সন্ধ্যায় সরদার জাকির, মশিয়ার সরদারসহ সন্ত্রাস বাহিনী আমার সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি অস্ত্রের মহড়া দেয়, ঘরবাড়ি ভাংচুর, মৎস্য ঘেরে লুটপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠাণে লুটপাটকরা সহ শত শত কর্মীকে মারপিট করে জখম ও হাজার হাজার মানুষকে গৃহবন্দি করে রাখে। এই সন্ত্রাসীদের হাত থেকে নারী ও শিশু কেউই রেহায় পাচ্ছে না। ২১ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে তালা শাহপুর বাজারে লাঙ্গল প্রতিকে ভোট প্রদান করায় বারুইহাটি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোমিন মোড়লের ছেলে আবুল হোসেনকে অমানবিকভাবে রড়, হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এই সন্ত্রাসী জাকিরকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে অস্ত্রধারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি কেন্দ্রের ফলাফল তদন্তপূর্বক বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করতে প্রধানমন্ত্রীসহ দেশবাসীর কাছে তুলে ধরে সঠিক বিচার দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে তালা ইউনিয়নের কয়েকশ বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তারা একই দাবীতে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধ করেন। ##