মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটায় কৃষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কৃষকরা। বুধবার (৩১ মে) দুপুরে কামারাবাদ নটাডাঙ্গা বিলের কৃষকরা এ মানববন্ধনে অংশ নেয়। সূত্রে জানা যায়, কামারাবাদ ঘেরটি বাংলা ১৪২৩ সালে বৈশাখ মাস হইতে ৩০ শে চৈত্র ১৪২৭ সাল পর্যন্ত ৫ বছরের জন্য নগরঘাটা গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে মো. মহিবুল্লাহ ও মৃত আনছার আলী গাজী’র ছেলে আব্দুল আওয়াল গাজীর কাছে লীজ প্রদান করেন। সম্প্রতি উক্ত ঘেরটির বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নিলে তা বাঁধা দেয় জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু। এ ব্যাপারে পাটকেলঘাটা থানায় অভিযোগ করার পর মাপ জরিপ শেষে বাধ সংস্কারের অনুমতি দেওয়া হয়। বুধবার সকালে স্কেভেটর মেশিনের দ্বারা বাঁধ নির্মাণকালে কৃষক ও শ্রমিকদের উপর হামলা চালায় বিশ্বজিৎ সাধুর পুত্র ইন্দ্রজিৎ সাধু, ভাগ্নে অমিত সাধু ও আব্দুর রহমানসহ ২৫/৩০ জন লাঠিয়াল বাহিনী। এসময় তারা ধারালো দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ঘেরের দুটি ঘর ও স্কেভেটর মেশিন ভাংচুর করে এবং ব্যাটারী ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ জোর পূর্বক খুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর স্থানীয় জমির লীজ গ্রহিতা, জমির মালিক, স্থানীয় কৃষক ও শ্রমিকরা সাতক্ষীরা জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধুর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন মো. আব্দুল হান্নান, তবিবুর রহমান, বজলুর রহমান, অয়েজ উদ্দীন গাজী প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ভূমিদস্যু বিশ্বজিৎ সাধু জেলা কৃষকলীগের সভাপতির ক্ষমতাবলে এ এলাকার কৃষকদের জমি দখল, জোর পূর্বক জমি লীজ গ্রহণ এবং ধানের জমিতে লোনা পানি তুলে ফসলের ক্ষতিসাধন ও কৃষকদের সর্বশান্ত করে যাচ্ছে। তার লীজ নেওয়া ঘেরে অপরিকল্পিতভাবে লোনা পানি তুলে মাছ চাষ করায় এ এলাকার কৃষকরা ধান চাষ করতে পারেনা। এ এলাকার কৃষকরা বছরে একটি ধানের ফসল পায় সেটি থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। এসব ব্যাপারে কৃষকরা প্রতিবাদ করলে তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর হামলা করে। তিনি এ এলাকার জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি লীজ গ্রহণ করে সময়মতো টাকা পরিশোধ করেনা। টাকা চাইলে খুন জখমসহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও হামলার হুমকি দেয়। জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু বলেন, ‘আমার ঘেরের মধ্যে একটি ঘেরের ভেঁিড় বাঁধছিল আব্দুল হান্নান। আমি রাতে খবর পেয়ে বিষয়টি প্রশাসনের নলেজে দেই। রোজা রমজান মাস হওয়ার কারণে সকাল ৯টা পর্যন্তও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমার ছেলে ও ভাগ্নেসহ আমাদের আশ-পাশের কিছু লোকজন ও দলীয় নেতা নেতাকর্মী সেখানে যায়। তখন তারা পালিয়ে যায়। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি তিনি অস্বিকার করেন।’ এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী কৃষক ও সচেতন মহলের দাবী যারা কৃষকের ক্ষতি করে নিজের আখের গোছায় তারা কৃষকের কি কল্যাণ করবে ? এ ঘটনায় ভূমিদস্যু বিশ্বজিৎ সাধুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে স্থানীয় কৃষক ও জমির মালিকরা।