প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় লাল সবুজ সমিতির টাকা আত্মসাতকারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক এক দোকানঘর একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রয় করে ক্রেতাদের বিরুদ্ধে খুন জখমের হুমকি, মিথ্যাচার এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার পারকুমিরা গ্রামের সুশান্ত বিশ^াসের ছেলে ভুক্তভোগী বাসুদেব বিশ^াস।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তালা উপজেলা পুটিয়াখালী মৌজায় এস এ ১২৩২ দাগে ৬ শতক সম্পত্তির মালিক পাটকেলঘাটার বড়বিলা গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র মশিউর আলম সুমন। সুমন উক্ত সম্পত্তিসহ সেখানে নির্মিত দোকারঘরটি বিক্রয়ের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করলে আমি ও আকবর আলী বাজারদর অনুযায়ী ৪০লক্ষ টাকায় চুক্তি বদ্ধ হই।
দোকানঘরসহ উক্ত সম্পত্তি ক্রয়ের জন্য বিগত ২৪/০৬/২০২০ ইং তারিখে ১৩ জন সাক্ষীর স্বাক্ষরসহ ৩৫ লক্ষ টাকায় বায়নাপত্র সম্পাদন করা হয়।
এরপর থেকে উক্ত দোকানঘরসহ উক্ত সম্পত্তি আমাদের দখলে রয়েছে। এরই মধ্যে সুচতুর সুমন তার নামীয় উক্ত সম্পত্তি গোপনে তার মা ফজিলা খাতুনের নামে একটি হেবানামা দলিল করে দেন। এরপর তার মাকে দিয়ে উক্ত বিক্রিত সম্পত্তি পুনরায় পাটকেলঘাটা বাজারস্থ ভাগ্যকুল মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক শীবপদ ঘোষের নিকট চলতি বছরের ৬ অক্টোবর তারিখে ৪৮ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন।
তিনি বলেন, আমাদের দখলে থাকা উক্ত সম্পত্তিতে নির্মিত দোকানঘরটি গত ১০অক্টোবর তারিখে সংস্কার কাজ শুরু করলে উল্লেখিত মশিউল আলম সুমন, আকবর খান, জুয়েলসহ কতিপয় ব্যক্তিরা লাটি সোটা ও লোহার রড নিয়ে সেখানে এসে জখম ও হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করতে থাকেন এবং দোকানঘর অন্যত্র বিক্রয় করেছে মর্মে আমাদেরকে জানান।
অথচ সুমন যখন আমাদের কাছে সম্পত্তি বিক্রয় করে তখন উক্ত সম্পত্তি তার নিজ নামেই ছিলো। তিনি আরো বলেন, সমিতির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব রেজুলেশনের মাধ্যমে সুমনের উপর অর্পন করা হয়।
সুমনের এক সময় কিছু না থাকলেও লাল সবুজ সমবায় সমিতিতে বিগত ১৮/০৭/১৭ সালে যোগদানের পর থেকে সম্পদের পাহাড় গড়তে থাকেন। সমিতির টাকা হাতিয়ে নিয়ে বর্তমানে তিনি কোটিপতি বনে গেছেন। সমিতির ফান্ড থেকে ৪৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতের আধারে সমিতির প্রয়োজনীয় খাতাপত্র অফিসের আলমারী থেকে চুরি করে সুমন বাড়িতে নিয়ে যান।
সুমন তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে বড়বিলা গ্রামের আবির, রেজাউল ও আক্তারের ডিডকৃত ২শ বিঘার ঘের জোরপূর্বক দখল করে নেন। এছাড়াও সুমন এলাকায় একটি ক্যাডার বাহিনী গড়ে তুলে মাদক, জুয়া, দালালী, মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানী করছেন সাধারন নীরিহ মানুষকে।
তিনি ধানদিয়া, সরুলিয়া, মাগুরা, খলিষখালী, জালালপুরসহ অধিকাংশ ইউনিয়ন থেকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন কমিটি দেওয়ার নাম করে ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজীর কারনে চলতি বছরের ১৮জুলাই সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এলাকাবাসী সংবাদ সম্মেলন ও ১৮ জুলাই তারিখে মানবন্ধন করেন। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পাটকেলঘাটা থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি, মামলা ও অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া তিনি প্রকাশ্যে আমার ও আমার লোকজনদের খুন জখম, গুম ও ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। এসব অপকর্ম ঢাকতে এবং বিক্রিত সম্পত্তি পুনরায় বিক্রয় করে তা বৈধ করার উদ্দেশ্যে একটি মিথ্যা কাল্পনিক নাটক সাজিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে ১০ অক্টোবর একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ সম্মেলন করে সুমনের মা ফজিলা খাতুন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় বায়নাকৃত দোকানঘরসহ উক্ত সম্পত্তি দ্রুত রেজিস্ট্রি করে দেওয়া এবং সন্ত্রাসী সুমনসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।##