খেলার খবর : ওমানের টপ অর্ডার ব্যাটাররা ভীষণ চাপে রেখেছিল বাংলাদেশকে। ক্যাচ মিস কিংবা উইকেট না আসায় অস্বস্তিতে ছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তবে সাকিব আল হাসান আর মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ বোলিংয়ে উল্টো চাপে পড়ে ওমান। শেষ পর্যন্ত তারা ১২৭ রান করতে সক্ষম হয়। আর ম্যাচটা ২৬ রানে জিতে বাংলাদেশ টিকে রইলো বিশ্বকাপে।
লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই আসে ১২ রান। তবে দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন মোস্তাফিজ। আকিব ইলিয়াসকে ফিরিয়ে দেন প্রথম বলেই। উইকেট হারিয়েও হাল ছাড়েনি ওমান। ৫ ওভারে তুলে নেয় ৪০ রান। ৬ষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই ফিরতে পারত যতীন্দর সিং।
মোস্তাফিজের বলে ক্যাচ ফেলে দেন মাহমুদউল্লাহ। তবে যতীন্দরকে না পারলেও একই ওভারে ফিজ ফিরিয়ে দেন কাশিয়াপ প্রজাপতিকে। ১০ ওভার শেষে ওমানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭০ রান। দলীয় ৮১ রানে ফেরেন জিশান মাকসুদ।
১২ রান করা জিশানকে ফেরান মেহেদী। নিজের তৃতীয় ওভারে সাকিব ফিরিয়ে দেন বিপজ্জনক হতে থাকা জিতেন্দরকে। ৩৩ বলে ৪০ রান করে আউট হন জিতেন্দর। ১৫ তম ওভারে এক শ ছাড়ায় ওমানের রান। তবে দ্রুত আরও তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন সাইফউদ্দিন ও সাকিব।
তিন উইকেটের দুটিই নেন সাকিব। এমনকি হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন সাকিব। ১০৫ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ওমান। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে নেয় ২৬ রানে।
এর আগে ওমানের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। একাদশে সৌম্য সরকারের জায়গায় দলে আনা হয় মোহাম্মদ নাঈমকে। ওমানের পেস আক্রমণের সামনে বেশ সতর্কভাবে শুরু করে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলেই লিটনকে ফিরিয়ে উল্লাসে মাতেন ওমানি পেসার কলিমুল্লাহ।
তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান লিটন। জীবন পেয়েও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন লিটন। পরের ওভারে বিলাল খানের লেগবিফোরের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে লিটনকে বিদায় করে ওমান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আসে বাংলাদেশের প্রথম বাউন্ডারি। পরের ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ধাক্কা দেন ফাইয়াজ বাট। দুর্দান্ত এক ফিরতি ক্যাচে ফিরিয়ে দেন তিন নম্বরে উঠে আসা মেহেদী হাসানকে। রানের খাতায় খুলতে পারেননি এই অলরাউন্ডার।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাবধানী হয়ে খেলতে শুরু করেন নাঈম ও সাকিব। তবে একের পর এক ডটে চাপ বাড়ছিল রানরেটে। প্রথম ৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল ২৯। এরপর ব্যক্তিগত ১৮ রানে জীবন পান নাঈম। ক্যাচ মিস করে নাঈমকে ছয় উপহার দেন যতীন্দর সিং। বাজে ফিল্ডিং প্রদর্শনীতে পরের ওভারে দ্বিতীয়বার জীবন পান নাঈম।
বোলিংয়ে শুরু থেকে ছন্দে থাকলেও, ফিল্ডিং ও ক্যাচিংয়ে শুরু থেকেই ভালো করতে পারেনি ওমান। ওমানি ফিল্ডারদের ভুলের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস এগিয়ে নেন নাঈম-সাকিব। ১০ ওভারে এ দুজন দলকে নিয়ে যান ৬৩ রানে। ধীরে ধীরে রানের গতিও বাড়ান এ দুজন। বিশেষ করে ব্যাট হাতে সাকিব ছিলেন বেশ সাবলীল। ১২ তম ওভারে চার-ছয়ে ১৭ রান নিয়ে স্ট্রাইক রেটও কিছুটা বাড়িয়ে নেন সাকিব-নাঈম। ১৪ তম ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ একশ ছাড়ায়।
একই ওভারে ফিরে যান সাকিব। শুরু থেকে বাজে ফিল্ডিং করা ওমান সাকিবকে ফেরায় দুর্দান্ত এক রান আউটে। আকিব ইলিয়াসের সরাসরি থ্রুতে ফেরেন ২৯ বলে ৪২ রান করা এই অলরাউন্ডার। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নুরুল হাসান সোহানও। ফিরছেন ৩ রান করে। তবে প্রান্ত আগলে ফিফটি পূরণ করে নেন নাঈম। ১ রান করে আউট হয়ে যান আফিফ হোসেনও।
শেষ দিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান নাঈমও। ৪৯ বলে ৬৪ রান করেন এই ওপেনার। দলের সংগ্রহে তেমন অবদান রাখতে পারেননি মুশফিকও। ৬ রান করে ফিরেছেন ফাইয়াজ বাটের বলে নাসিম খুশিকে ক্যাচ দিয়ে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৫৩ রান।