নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ার কুশোডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আসলামুল আলম আসলাম কর্তৃক ওয়ার্ড আ’লীগ নেতার সন্তানকে চাকুরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাত এবং বিভিন্ন ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উপজেলার কলাটুপি গ্রামের মৃত ছমেদ আলীর ছেলে ভুক্তভোগী আওয়ামীলীগ নেতা বাবর আলী সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি উপজেলার কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আমি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমি কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। কুশোডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম কলাটুপি সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে আমার পুত্রকে দপ্তর কাম নৈশ প্রহরী পদে চাকুরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য ১লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি অতি কষ্টে ধার দেনা করে করে তার হাতে ১লক্ষ ৪০ হাজার টাকা প্রদান করি। টাকা প্রদানের পর চেয়ারম্যান আসলাম আমার পুত্রকে চাকুরি দেননি।
টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমাকে খুন জখমসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শণ করেন। এছাড়া চেয়ারম্যান আসলাম পানিকাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার সুযোগে মোটা অংকের নিয়োগ বাণিজ্যসহ শিক্ষক আলমগীর হোসেন চাকুরী থেকে পদত্যাগ করার পরও তার নামে ১৩ মাসের বেতন উত্তোলন করে তা আত্মসাত করেন।
এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্যা রুমি খাতুন আদালতে মামলাও দায়ের করেন।
তিনি বলেন, চেয়ারম্যান আসলাম নিজেকে আওয়ামীলীগ দাবি করলেও তিনি একজন স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সদস্য। তার ভাই ইমাম হোসেন খান নাশকতা মামলার আসামী হয়ে বিগত ১০/১২/২০১৫ তারিখে কলারোয়া থানার বিস্ফোরক আইনে আটক হয়ে জেল খাটেন। ইমাম কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।
আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যানের একমাত্র ভাই হওয়ার সুবাদে ইমাম যুবদলের উচ্ছৃঙ্খল ক্যাডারের ভুমিকায় ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে কুখ্যাত রাজাকার কাদের মোল্যার ফাঁসিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় শাকদাহ বাজারে আ’লীগ অফিস ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ করে পুড়িয়ে ভূস্মিভূত করেন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধান মন্ত্রীর ছবি পদদলিত করেন।
এছাড়া ইমাম হোসেন প্রবীন আওয়ামীলীগ নেদুগাজী, ইশারত সরদারসহ অসংখ্যা আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মারপিট করে রক্তাক্ত করেন শুধু মাত্র ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নৌকায় ভোট দেওয়ার কারনে। তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান আসলাম বিরুদ্ধে পরিষদের বিধবা ভাতা, মাতৃভাতা, ভিজিডি এবং প্রতিবন্ধীভাতাসহ অনুদানের অর্থ আত্মসাতসহ সরকার প্রদত্ত ঘর দেওয়ার নাম করেও এলাকার অসহায় নিরিহ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া টাকার বিনিময়ে বিত্তশালীদের সরকারি ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন।
অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে তিনি শাকদাহ বাজারে বিলাশবহুল মাকেট, কলারোয়ার তুলশীডাঙ্গা সংলগ্ন খাদ্য গুদামের পাশে দুইতলা বাড়ি ক্রয় এবং নিজ বাড়িটিকেও আলীশান বাড়িতে রূপান্তর করেছেন। অথচ আমার মত দরিদ্র একজন আওয়ামীলীগ কর্মীর সন্তানকে চাকুরি দেওয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে তা আত্মসাত করেছেন। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ১৪টি প্রকল্পের কাজ না করে অর্থ আত্মসাথের অভিযোগে স্থাণীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালায়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। যা টিভি চ্যানেলসহ বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় একজন দরিদ্র আওয়ামীলীগ কর্মী হিসেবে ওই দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান আসলামের কবল থেকে তার টাকা উদ্ধার এব তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুজিদ, কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান মহিউদ্দীন, কুশোডাঙ্গা ইউনিয়ন আলীগের যুগ্ন সম্পাদক শিবাস্তিন মিত্র কালু, আ’লীগ নেতা ফজর আলীসহ এলাকাবাসী।