দেশের খবর : উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) আইন মানেন না অভিযোগ করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের ‘প্রাপ্য দায়িত্ব ও অধিকার’ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন।
রোববার (৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, ‘সাংবিধানিক নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। অথচ প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক ক্যাডারের কর্মচারীরা আইনের চর্চা না করে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদকে অকার্যকর করে রেখেছেন, যা শুধুমাত্র আইন অমান্যই নয় বরং বিভিন্ন স্তরে কর্মরত ২৬টি ক্যাডারের কর্মচারীদের প্রতিও অবহেলা। আমরা আইনের চর্চার পক্ষে। কিন্তু প্রশাসনিক ক্যাডারের কর্মচারীরা আইন অনুসরণ করছেন না।’
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র একটি ক্যাডারের কর্মচারীদের আইন না মানার কারণে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা আজ কর্ম, মর্যাদা ও ব্যক্তিত্বহীন হয়ে পড়েছি। এমনকি এ ব্যাপারে হাইকোর্ট ১০ কর্মদিবসের মধ্যে রুলের জবাব দিতে নির্দেশনা জারি করলেও কোনো জবাব দেওয়া হয়নি, যা আদালতের প্রতিও অবজ্ঞা।’
করোনাকালে স্থানীয় সরকারের ৬৫ হাজার জনপ্রতিনিধির মধ্যে মাত্র ২০ জন সদস্য অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিল দাবি করে হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, ‘অনিয়মের কারণে তাদের (জনপ্রতিনিধি) অপসারণ করা হয়েছে। অথচ সরকারি কর্মচারীদের অবিরাম আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বললে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের বিচার বিভাগীয় চার্জ গঠনের আগেই নির্বাহী আদেশে অপসারণ করা হয়, যা সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী।’
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নই। জনপ্রতিনিধি ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সঙ্গে আমরা একযোগে আইন অনুযায়ী কাজ করতে চাই। কিন্তু নির্বাহী কর্মকর্তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন।’
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আরও বলেন, ‘কিছু অধিদপ্তরের ডিজি আইন অমান্য করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দায়িত্বে যুক্ত করছেন, যার মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা নিরূপায় হয়ে পড়ছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি আদায়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী ১১ নভেম্বর থেকে দেশের বিভাগগুলোতে সফর করবেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় ও অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করবেন তারা।
এরমধ্যেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি না করা হলে আগামী ১৬ জানুয়ারি দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের নিয়ে ঢাকায় সমাবেশ করা হবে। পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান বীরুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।