অর্থনীতি

বাসভাড়া দূরপাল্লায় ৩৮ ও মহানগরে ৪৫ পয়সা প্রতি কিলোমিটারে বাড়ল

By Daily Satkhira

November 07, 2021

অর্থনীতির খবর : দূরপাল্লার বা‌সের ভ‌াড়া প্রতি কি‌লো‌মিটা‌রে এক টাকা ৪২ পয়সা থে‌কে বে‌ড়ে এক টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়ল ৩৮ পয়সা। এছাড়া মহানগ‌রে বা‌সের ভ‌াড়া এক টাকা ৭০ পয়সা থে‌কে বে‌ড়ে দুই টাকা ১৫ পয়সা অর্থাৎ ৪৫ পয়সা বাড়ানো হলো। ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে আজই প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে বলে জানা গেছে। এদিকে ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণার পর রোববার বিকেল থেকেই গণপরিবহন চল‌বে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাস মালিকরা। বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ১১টার পর রাজধানীর মহাখালীতে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে বিআরটিএ ভবনে বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। পরিবহন মালিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠক শেষে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়। রোববার বিকেলে সংবাদ স‌ম্মেল‌নে নুর মোহাম্মদ মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সকালের ওই বৈঠকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলরত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া কিলোমিটারে যথাক্রমে ৭০ ও ৮০ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। একই সঙ্গে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লা রুটে চলাচলকারী ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া (ঢাকা মহানগর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগর ছাড়া) কিলোমিটারে ৫৮ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণে পরিবহন মালিক ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের বৈঠকে এই প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। তবে পরিবহন মালিকরা মহানগরীতে বাস ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা বাড়িয়ে তিন টাকা ৪০ পয়সা করার দাবি জানিয়েছিলেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ডাকে দেশজুড়ে কয়েকদিন ধরে পরিবহন ধর্মঘট চলে। এ অবস্থায় রোববার ভাড়া পুনর্নির্ধারণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাস মালিকেরা।

প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিষয়টি জানায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা আসে। রাতেই তা কার্যকর হয়। এর ফলে ডিজেল ও কেরোসিন তেলের নতুন দর হয় প্রতি লিটার ৮০ টাকা যা এতদিন ছিল ৬৫ টাকা।

এরপর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর পর ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন মালিক ও শ্রমিকরা। গত চারদিনের অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশ। ঘর থেকে যারা বের হয়েছেন, তারা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন। পথে পথে ছিল দুর্ভোগ। শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। ভর্তি ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা পড়েছেন আরও বিপাকে। কয়েক গুণ ভাড়া দিয়ে বিকল্প উপায়ে তারা কেন্দ্রে পৌঁছেন।

যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস না পেয়ে অফিসগামী যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, লেগুনা চলাচল করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ছিল। এ সুযোগে এসব যানবাহনে নেওয়া হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায়ই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভ্যান, কাভার্ডভ্যানে চড়েও যাচ্ছেন কর্মস্থল ও গন্তব্যে।

ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধিতে জীবনযাত্রার ব্যয় ও পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ট্রাক, বাসসহ পরিবহনের জ্বালানি হিসেবেই ডিজেলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। সংশ্নিষ্টরা বলছেন, ট্রাক ভাড়া বাড়লে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়ে যাবে। দাম বাড়বে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। চাপ পড়বে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর।