অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ১১ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে সাত বছর এবং দুর্নীতির দায়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে দুটি সাজা একসঙ্গে চলার কারণে তাকে সাত বছর জেল খাটতে হবে। মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
এছাড়া একই মামলায় অপর আট আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়। তারা হলেন নিরঞ্জন সাহা ও শাহজাহান।
জালিয়াতির মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ঋণের চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় মানি লন্ডারিংয়ের এর দায়ে এসকে সিনহাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন আদালতের বিচারক। এছাড়া একই মামলায় দুর্নীতির দায়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেন। দুটি সাজা একসঙ্গে চলার কারণে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে সাত বছর জেল খাটতে হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
মামলায় অপর দল্ডপ্রাপ্তরা হলেন—তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতি, ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ক্রেডিটপ্রধান গাজী সালাহউদ্দিন, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীম, সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎফুল হক, গুলশান শাখার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সফিউদ্দিন আসকারী, এস কে সিনহার কথিত পিএস রণজিৎ চন্দ্র সাহা, রণজিতের স্ত্রী সান্ত্রী রায়।
গত ২১ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক রায় প্রস্তুত করতে না পারায় আজ ৯ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। তার আগে গত ৫ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক অসুস্থ থাকায় রায় ঘোষণার তারিখ পেছানো হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর এই মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়।
তদন্তের সময় মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর কারণে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলার পলাতক আসামিরা হলেন- এসকে সিনহা, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী।
ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর তদন্ত করে একই বছরের ৯ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ।
মামলা চলাকালে বিচারপতি এসকে সিনহাসহ চারজন পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী আইনি মোকাবিলা করেননি। পলাতক অপর আসামিরা হলেন, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্তি রায় সিমি।