নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণের জন্য ব্যালটপেপার,ব্যালট বক্সসহ নির্বাচনী সামগ্রী প্রতিটি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। বুধবার দুপুর আড়াইটা থেকে নির্বাচনী সামগ্রী প্রদান শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারগণ নির্বাচনী সামগ্রী বুঝে নিয়েছেন। তবে ব্যালট পেপার দেওয়া হবে বৃহষ্পতিবার সকালে। এদিকে,নির্বাচনী কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী নিয়োজিত রেখেছে প্রশাসন।
সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৩টি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১২৬টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭১৯টি এবং অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৫৫টি। পুরুষ ভোটার এক লাখ ৩৪ হাজার ২২৪ জন এবং নারী ভোটার এক লাখ ৩২ হাজার ৪২৯ জন। সদর উপজেলায় ১৩ ইউনিয়নে মোট ভোটার দুই লাখ ৬৬ হাজার ৬৫৩ জন।
নির্বাচন অফিস সূত্রে আরও জানা যায়,আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতিটি কেন্দ্রে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে ৪জন পুলিশ সদস্য ও দুজন সশস্ত্রসহ ১৭ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বরত থাকবেন। ১৩টি ইউনিয়নে ৫জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। পাশাপাশি ৩প্লাটুন বিজিবি সদস্য ও ৩ প্লাটুন র্যাব সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার নাজমুল কবীর জানান,সুষ্টু নির্বাচনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। ভোটাররা যাতে তাদের ভোটাধিকার নির্বিঘেœ প্রদান করতে পারেন,তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়ন বাদে বাকি ১৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে-বাঁশদহা, কুশখালি, বৈকারী, ঘোনা, শিবপুর, ভোমরা, ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর, আগরদাড়ি, ঝাউডাঙ্গা, বল্লী, লাবসা ও ফিংড়ি। ১৩টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বদ্বীতা করছেন। দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেনা। তবে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে বৈকারী, কুশখালী, শিবপুর, ফিংড়ী ও ধুলিহর ইউনিয়ন ব্যতিত বাকি ৯ ইউনিয়নে সরাসরি বিএনপির পদে থাকা দলীয় নেতা-কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে, ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন বাদে বাকি ১২টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া ফিংড়ী, ঘোনা, বৈকারী ও বাশদাহ ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী রয়েছে। এদিকে, আগরদাঁড়ি, ঘোনা ও বৈকারীসহ কয়েকটি ইউনিয়নে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে। আর দুটি ইউনিয়নে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
সদর উপজেলার বাঁশদহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল খালেক (টেলিফোন), এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান (চশমা), বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম মোশাররফ হোসেন (আনারস), মো: নাজমুল হাসান (মোটর সাইকেল), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: মফিজুর রহমান (নৌকা), মো: ময়নুর রহমান (দুটি পাতা), জাতীয় পার্টির শেখ শরিফুজ্জান (লাঙ্গল) প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। সদর উপজেলার কুশখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, মুহাম্মদ আব্দুল গফফার (টেলিফোন) মো: আবুল কালাম আজাদ (ঢোল), মো: ইকবাল হোসেন (টেবিলফ্যান) মো: কবির উদ্দীন মন্ডল (ঘোড়া) মো: গোলাম মোস্তফা (অটোরিক্সা), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: তাজউল ইসলাম (নৌকা), ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মো: মনিরুল ইসলাম (আনারস), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো: মুনছুর আলী সরদার (লাঙ্গল), মো: শফিকুল ইসলাম (রজনীগন্ধা), ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: সাইফুদ্দীন পলাশ (চশমা) ও মো: হুমায়ুন কবির (মোটর সাইকেল)।
লাবসা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ইউপি বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল আলিম (আনারস), মোহাম্মাদ শাহীন হোসেন (মোটর সাইকেল) ও থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো: নজরুল ইসলাম (নৌকা)। বল্লী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।তারা হলেন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো: খায়রুল ইসলাম (মোটর সাইকেল), বল্লি ইউনিয়নের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: বজলুর রহমান (নৌকা), উপজেলা বিএনপির সদস্য মো: মহিতুল ইসলাম (আনারস) ও শেখ হাবিবুর রহমান (চশমা)।
আগরদাড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোহম্মদ লুৎফর রহমান (ঘোড়া), মো: কবীর হোসেন (টেবিল ফ্যান), মো: নুরুল ইসলাম (আনারস), থানা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো: মঈনুল ইসলাম (নৌকা), ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান মো: মজনুর রহমান (চশমা), শাহিদ (মোটর সাইকেল) ও হাবিবুর রহমান (অটোরিক্সা)।
ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, জয়দেব কুমার ঘোষ (আনারস), আওয়ামী লীগের সমর্থিত বর্তমান চেয়ারম্যান মো: আজমল উদ্দীন (নৌকা) ও বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম (মোটর সাইকেল)।
ঘোনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো: আব্দুল কাদের (মোটর সাইকেল), বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো: কামরুজ্জামান (আনারস), সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান মো: ফজলুর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক পেয়ে মো: বদরুজ্জামান (লাঙ্গল) ও মো: সদর উপজেলার পশ্চিম জামায়াতের সেক্রেটারি মোশাররাফ হোসেন (চশমা)। বৈকারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
তারা হলেন, ইউনিয়ন পরিষদে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ আবু মো: মোস্তফা কামাল (মটর সাইকেল), সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান চেয়ারম্যান মো: আসাদুজ্জামান (নৌকা) ও জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী মো: জালাল উদ্দীন (আনারস)। ভোমরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী (মোটর সাইকেল), মো: মমিমুল ইসলাম (ঘোড়া), মো: সামছুল আলম (চশমা), মো: সাহেব আলী (আনারস) ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম (নৌকা)।
শিবপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাাদক এসএম আবুল কালাম আজাদ (আনারস), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো: ইমাদুল হোসেন (হাতপাখা) ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী (নৌকা)।
ফিংড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বেলাল হোসেন (হাতপাখা), জামাতের মো: আজাদুল ইসলাম (চশমা), মো: লুৎফর রহমান (আনারস), আওয়ামী লীগের মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান মো: সামছুর রহমান (নৌকা) ও মো: সেলিম রেজা গাজী (মোটর সাইকেল)।
ধুলিহর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, মো: ফজলুর রহমান (চশমা), আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান মো: মিজানুর রহমান (নৌকা), মো: মিজানুর রহমান চৌধুরী (আনারস) ও স. ম. মসিউর রহমান (মোটর সাইকেল)। ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
তারা হলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো: আলাউদ্দীন (নৌকা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো: এবাদুল ইসলাম (হাতপাখা), থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মো: নূরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান মো: শহিদুল ইসলাম (আনারস)।#
১০.১১.২১