ধুলিহর প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুরে পল্লী বিদ্যুতের বকেয়া বিলের কারন দেখিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের নামে উৎকোচ আদায়ের চেষ্টাকালে এক কর্মকর্তা লাঞ্চিত হয়েছে। এ ঘটনাকে ওই কর্মকর্তা ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ নিয়ে রীতিমত পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, ব্রহ্মরাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের মাঠ কর্মী নাঈম ইসলাম বৃহস্পতিবার সকালে পোশাক ছাড়াই সাদা পোশাকে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের দালাল উমরাপাড়া গ্রামের নুর আলী কারিকরের পুত্র শফিকুল ইসলামকে সাথে নিয়ে কালেরডাঙ্গা গ্রামের কয়েক বাড়িতে বকেয়া বিলের কারন দেখিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যায়। এ সময় বিল পরিশোধ থাকা স্বত্বেও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ভয় দেখিয়ে অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন করে। এদের মধ্যে কালেরডাঙ্গা গ্রামের বাবর আলী সরদারের স্ত্রী নাছিমা খাতুনের নিকট থেকে পাঁচশত টাকা, হবিবর রহমানের স্ত্রী সালমা খাতুনের নিকট থেকে পাঁচশত টাকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ভয় দেখিয়ে উৎকোচ গ্রহন করে বলে এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে। তবে ওইসব গ্রাহকরা জানায়, তাদের সবার বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ থাকার পরও ঝামেলা এড়াতে ভয়ে টাকা দিয়েছি। একইভাবে কালেরডাঙ্গা গ্রামের ব্যাংক কর্মকর্তা মৃত হায়দার আলীর পুত্র ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক অলিউর রহমান সুমনের বাড়িতে এক মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার খাড়া মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যায়। এ সময় সুমন বাড়িতে না থাকায় তার স্ত্রী রুনা সব বিল পরিশোধ মর্মে তাদেরকে জানালেও কর্নপাত না করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে। একাধিকবার অনুরোধ জানালে মাঠ কর্মী নাঈম ইসলাম দালাল শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে এক হাজার টাকা ঘুষ দাবী করে। ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। একপর্যায়ে সুমনের স্ত্রী রুনাকে নাঈম ইসলাম অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকলে পাশের বাড়ির লোকজন ছুটে আসলে অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পালানোর চেষ্টা করে। পালাতে গিয়ে নাঈম ইসলাম পড়ে গিয়ে কিছুটা আহত হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে চলে এসে কর্তব্য কাজে বাঁধা দান ও তার উপর হামলা হয়েছে বলে সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে অভিযোগ করে। খবর পেয়ে সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনার পরপরই পল্লী বিদ্যুতের লোকজন দালাল শফিকুল ইসলামকে সাথে নিয়ে সুমনের বাড়ির বৈদ্যুতিক মিটারটি জোরপূর্বক খুলে নিয়ে এসেছে বলে জানা গেছে। এদিকে আসল ঘটনা ধামা-চাপা দিয়ে একজন নিরীহ মানুষকে হয়রানীর চেষ্টায় পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মাঝে দারুন ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মিথ্যা হামলার ঘটনা সাজিয়ে সুমনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। সুমন জানায়, আমার সব বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ রয়েছে। বাক-বিতন্ডা ছাড়া কিছুই হয়নি। অথচ থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে হয়রানী করার চেষ্টা চলছে। অপরদিকে ব্রহ্মরাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের মাঠ কর্মী নাঈম ইসলাম জানায়, উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগটি সঠিক নয়। ইউনিফর্ম ছাড়া দায়িত্ব পালন করা যায় কিনা এমন প্রশ্নেরও কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। তবে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর তিনি সরাসরি এড়িয়ে যান। সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল হাশেম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।