খেলা

বৃষ্টির কারণে রক্ষা পেল অস্ট্রেলিয়া!

By Daily Satkhira

June 03, 2017

স্পোর্টস ডেস্ক : চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরুতে জয় দেখছিল নিউজিল্যান্ড! অন্তত সেরকম আভাসই মিলছিল বার্মিংহামে। বৃষ্টির বাধায় ৩৩ ওভারে ২৩৫ রানের নতুন লক্ষ্যে খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়া ৯ ওভারে ৫৩ রান তুলতেই হারিয়ে বসে তিন উইকেট! ভাগ্যিস বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছিল- এমনটা ভাবতেই পারেন স্টিভেন স্মিথরা। আবার বৃষ্টি বাধা দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হয়েছে পরিত্যক্ত। ফলে ‘এ’ গ্রুপের এই দুই দলের খেলায় ১ পয়েন্ট করে ভাগাভাগি করেছে দুই দল।

এর আগে অবশ্য বেরসিক বৃষ্টি এসে মাঝে মন খারাপ করে দিয়েছিল বার্মিংহামের গ্যালারিতে বসা ক্রিকেটপ্রেমীদের। টিভির সামনে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের উত্তেজনাকর ম্যাচ দেখতে বসা দর্শকদের মনোযোগও যেন নষ্ট হলো তাতে। তবে বৃষ্টি থামতেই ক্রিকেটে সব রং-রূপ নিয়ে হাজির হলেন কেন উইলিয়ামসন ও জশ হ্যাজেলউড।

অসাধারণ ব্যাটিংয়ে মন জেতানো ইনিংসে উইলিয়ামসন করলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি। আর বিধ্বংসী বোলিংয়ে হ্যাজেলউড তুলে নিলেন ৬ উইকেট। তাতে বৃষ্টিতে ৪ ওভার কমে ৪৬ ওভারে নেমে আসা ম্যাচেও নিউজিল্যান্ড হলো অলআউট। ৪৫ ওভারে গুটিয়ে যাওয়ার আগে অবশ্য অস্ট্রেলিয়াকে দেয় তারা ২৯১ রানের কঠিন চ্যালেঞ্জ।

২০১৫ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং তত্ত্ব ছিল, শুরুতেই মারমুখী ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি। সেই কৌশলেই শুরু করেছে কিউইরা চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। মার্টিন গাপটিল থাকলেও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের জায়গাটা নিয়েছেন লুক রঞ্চি। গত বিশ্বকাপের মতো অতটা ধারালো না হলেও অস্ট্রেলিয়ার ওপর শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলেছে নিউজিল্যান্ড। গাপটিল আউট হওয়ার আগে ২২ বলে করেন যান ২৬ রান। রঞ্চি অবশ্য ব্যাটে ঝরিয়েছেন আগুন। মিচেল স্টার্ক-জশ হ্যাজেলউডদের ওপর ঝড় তুলে বল একের পর এক করলেন সীমানা ছাড়া।

এর মাঝেই শুরু হয় বৃষ্টি। ৯.৩ ওভারের সময় বৃষ্টি শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায় ম্যাচ। অনেকটা সময় বন্ধ থাকার পর খেলা কমে যায় ৪ ওভার। তার আগেই ক্রিজে চলে এসেছিলেন উইলিয়ামসন। রঞ্চির সঙ্গে জুটিটা দাঁড় করিয়ে ফেলেন কিউই অধিনায়ক। মারমুখী ভঙ্গিতে খেলা রঞ্চিকে থামান জন হ্যাস্টিং। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের হাতে ধরা পড়ার আগে ৪৩ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় খেলেন ৬৫ রানের ইনিংস।

থামেননি উইলিয়ামসন। সাবলীল ব্যাটিংয়ে বাড়িয়ে গেছেন দলের রান। প্রয়োজনে রক্ষণাত্মক হয়েছে তার ব্যাট, বল বুঝে আবার হয়েছেন আগ্রাসী। মন জুড়ানো ব্যাটিংয়ে তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরিও। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট না হলে ইনিংসটা আরও দূর বাড়িয়ে নিতেন তিনি নিঃসন্দেহে। তারপরও ৮ চার ও ৩ ছক্কায় সাজানো ৯৭ বলে ১০০ রানের ইনিংসটা নিউজিল্যান্ডকে দিয়েছে বড় রানের ভিত। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া রস টেলরের ৪৬ রানের ইনিংসটাও প্রশংসার দাবিদার।

তবে তাদের গড়ে দেওয়া ভিতটা কাজে লাগাতে পারেননি পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। নাইল ব্রুম (১৪), জেমি নিশাম (৬) ও কোরে অ্যান্ডারসনের (৮) মধ্যে একজন জ্বলে উঠলেও রান নিঃসন্দেহে ছাড়িয়ে যেত ৩০০। সেটা যে হয়নি, তার জন্য পুরোটা কৃতিত্ব পাবেন হ্যাজেলউড। কিউইদের লোয়ার মিডল অর্ডারের পর লেজের ব্যাটসম্যানদের তুলে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান পেসার পেয়েছেন ৬ উইকেট। বেশি রান (৬৯) খরচ করলেও হ্যাস্টিং পেয়েছেন রঞ্চি ও টেলরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।

এরপর অসিরা খেলতে নামলে ফের বৃষ্টি হানা দেয়। আর তাতে নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৩ ওভারে ২৩৫ রান। যদিও সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ৫৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে অসিরা। ওয়ার্নার ১৮, ফিঞ্চ ৮ ও হেনরিকস ১৮ রানে সাজঘরের পথ ধরেন। কিউইদের হয়ে দুটি উইকেট নেন অ্যাডাম মিলনে। একটি নেন ট্রেন্ট বোল্ট। তাই বৃষ্টি হানা না দিলে ভিন্ন কিছুই হয়তো দেখতে পেতো অস্ট্রেলিয়া। ভাগ্যিস বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল!