নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সম্পন্ন হলো পুলিশের কনস্টেবল পদে। সাড়ে ৬ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন ৪১ জন। নিয়োগকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি,সবধরণের প্রভাব মুক্তভাবে যথাযথ যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের। আর নিয়োগ পাওয়া কনস্টেবলরা পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে পেরে উচ্ছ্বসিত।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জানা যায়,সাতক্ষীরায় ৪১টি পদের বিপরীতে আবেদন করে ছিলেন সাড়ে ছয় হাজার জন। এরমধ্যে মাঠ পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করেন ১ হাজার ৬ শ’ ৪০ জন। তার মধ্যে লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন ৩শ’ ৮ জন। উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১শ’ ১৩ জন। ২৪ নভেম্বর মৌখিক ও মনস্তাত্বিক পরীক্ষায় ৪১ জনকে চুড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ করা হয়। ফলাফল ঘোষিত হয় সোমবার সন্ধ্যার দিকে। সরকারি চাকরি পেতে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠে প্রতিনিয়ত। তবে সাতক্ষীরায় ৭টি ধাপে স্ব্চছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয় াহয়েছে কনস্টেবলদের। চাকরি নামক সোনার হরিণ পেয়ে ব্যাপক খুশি নিয়োগ পাওয়া কনস্টেবলরা। তাদের আশা, চাকরির উপার্জনে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে পারবেন তারা।
চাকরি পাওয়া সদর উপজেলার দেবনগর গ্রামের নাজমা খাতুন জানান,তারা ২ বোন । তিনি বড়। ভাইনা থাকাতে প্রতিবেশিরা বাবাকে প্রায়ই বলত বিয়ে দিতে। কিন্তু আমি বাবাকে বলতাম, আমাকে নিয়ে তোমাকে তাড়াহুড়ো করতে হবেনা। আমি ঠিকই তোমাদের উপার্জন করে খাওয়াব। বাবা বলতেন,চাকরি পেতে গেলেতো টাকা লাগে। আজকে বাবার এই আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমি নিজ যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি।
ঘুষ ও তদবির ছাড়াই চাকরি পাওয়াতে খুশি অভিভাবকেরা। যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়ায় নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে কলারোয়ার খলসি গ্রামের আনোয়ারা খাতুন জানান,ছেলে আজিজুল ইসলামকে নিয়ে খুবই হতাশ ছিলাম। ও কলেজে পড়ে। ভাবতাম,১৫/২০ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। স্বামী যা আয় করে,নুন আনতে পান্তাফুরায়। কিন্তু আজ প্রমাণিত হয়েছে, চাকরি বিনা পয়সাতেও হয়।
জেলার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৪১ জনকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে । এরমধ্যে অনুসরণ করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা,পোষ্য কোটা ও নারী কোটা। মাত্র ১শ’ টাকাখরচ করে চাকরি পেয়েছে ৪১ জনতরুণ-তরুণী।
তিনি আরও জানান, সাতক্ষীরায় ৪১টি পদের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন সাড়ে ছয় হাজার জন। এর মধ্যে ১৪,১৫ ও ১৬ নভেম্বর মাঠপরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করেন ১ হাজার ৬ শ’ ৪০ জন। পরবর্তীতে ১৭ নভেম্বর লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন ৩শ’ ৮ জন। তার মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১শ’ ১৩ জন। তাদের মধ্যে মৌখিক ও মনস্তাত্বিক পরীক্ষায় ২৪ নভেম্বর ৪১ জনকে চুড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ করা হয়েছে।