আজকের সেরা

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত শাহ আলমের গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম

By Daily Satkhira

September 17, 2016

ডেস্ক রিপোর্ট: বাবা মা আর স্বজনদের বুক ফাঁটা আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে গ্রামের বাতাস। দূর দূরান্ত থেকে আত্মীয় অনাত্মীয়রা আসছেন, তারাও যোগ দিচ্ছেন শোকের মিছিলে। সকাল থেকে এমনই এক চিত্র বিরাজ করেছে কালিগঞ্জের চাম্পাফুল ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা শেখ শামসুর রহমানের বাড়িতে। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এ গ্রামের ছেলে শাহ আলম। সেই শোক বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে। বিজ্ঞাপন চিত্র নির্মাতা উজিলভি অ্যান্ড ম্যানটার বিডি অ্যাডভারটাইসমেন্ট এর কর্মকর্তা শাহ  আলম  শেষ ঈদ করেছেন ঢাকায় বোনের সাথে। তারপর ফিরে গেছেন কর্মস্থলে। কথা ছিল বিজ্ঞাপনী শুটিং শেষ করে বাড়িতে ফিরবেন শাহ আলম। তা আর হয়নি। শুক্রবার ক্রিকেট তারকা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে  কক্সবাজার ইনানি সৈকতে  নামিয়ে ঢাকা ফিরো  যাবার পথে এই দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে শাহ আলমের প্রাণ। গ্রামের বাড়িতে তার দেহ পৌছেছে, কিন্তু সে তো খাটিয়ায় শায়িত বরফাচ্ছাদিত নিষ্প্রাণ এক নিথর দেহ। কান্না জড়িত কন্ঠে ওর মামা কলেজ ছাত্র শাকিল খান বললেন শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে শাহ আলমের বিধ্বস্থ দেহ  মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছালো বাড়ির আঙ্গিনায়। ততক্ষণে গ্রামজুড়ে মানুষের চোখ অশ্রুতে ভরে উঠেছে। বুক চাপড়িয়ে ওর মা লতিফুন বেগম বিলাপ করছেন। বলছেন ‘শাহ আলম কোথায় গেলি তুই বাবা’। ওর বাবার আকুতি ঈদে বাড়ি আসলে ওকে মরতে হতো না। মাত্র দেড়বছর আগে শ্যামনগরের খানপুর গ্রামের মেয়ে রুমা খাতুনকে বিয়ে করেছিলেন শাহ আলম। ঢাকার যাত্রাবাড়িতে বড়বোন সাবিনার বাসায় থাকেন ওরা। রুমা শোকে পাথর হয়ে গেছেন। দুই ভাই এক বোন শাহ আলমরা। বড় ভাই রাশেদুল ইসলাম নিজ এলাকায় ব্যবসা করেন। বড় বোন সাবিনার বিয়ে হয়েছে।

পুরো বাড়ি জুড়ে এখন শোকের মাতম। দলে দলে আসছেন গ্রামের মানুষ। বলছেন ‘ওর মতো এমন ভালো ছেলে আর হয় না’। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শেষ করে বরেয়া মিলনী হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন শাহ আলম। তারপর কালিগঞ্জ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকার হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞানে মাস্টার্স  করে সিএ করেছেন শাহ আলম। দুপুরে শাহ আলমের জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে বাড়ির পাশে রাজাপুর মসজিদের আঙ্গিনায়। শেষ ভাদ্রের ভরা বৃষ্টির  মধ্যেও জানাযায় হাজির হন অগনিত মানুষ। ছিলেন চাম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রউফ, ইউপি সদস্য শাহিনুল খান, মো. আবুবকর, আবদুস সাত্তার ছাড়াও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। তাদের আক্ষেপ অকালেই অপঘাতে চলে গেলো ছেলেটি। শাহ আলম এখন পারিবারিক গোরস্থানে অন্তিম শয়ানে।