নিজস্ব প্রতিনিধি : যৌতুকের দাবিতে দু’ সন্তানের জননীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানাধীন আমানুল্লাহপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের শ্বাশুড়ি বিল্ব বালা দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তালা উপজেলার আটারুই গ্রামের সূর্যকান্ত দাস জানান,
তার মেয়ে শিপ্রা দাসের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে পাটকেলঘাটা থানাধীন অনিল দাসের ছেলে ভ্যানচালক গোবিন্দ দাসের বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের চার বছর ও দু’ বছর বয়সের দু’টি মেয়ে আছে।
বিয়ে পর থেকে যৌতুকের দাবিতে গোবিন্দ ও তার পরিবারের সদস্যরা শিপ্রার উপর নির্যাতন চালাতো। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিস হয়েছে কয়েকবার। এরপরও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় শিপ্রা বাদি হয়ে ২০১৯ সালে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা(পিটিশন-১৪৪/১৯) করেন।
আদালত জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়।বেগতিক বুঝে জামাতা গোবিন্দ ও তার পরিবারের স্বজনরা কুমিরা ইউপি চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে পরিষদে শালিসের মাধ্যমে মুচলেকা দিয়ে শিপ্রাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে একটি দিনের জন্যও শিপ্রাকে বাপের বাড়িতে আসতে দেয়নি গোবিন্দ ও তার পরিবারের সদস্যরা। জ্যাঠামহাশয় নন্দ দুলাল দাস ছয় মাস আগে মারা গেলেও শিপ্রাকে আসতে দেওয়া হয়নি। সূর্যকান্ত দাস আরো জানান, গত পহেলা জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে শিপ্রার গালের মধ্যে কাপড় ঢুকিয়ে দিয়ে নির্যাতন করা হয়। কোনভাবে সে মুখ খেকে কাপড় সরিয়ে তাকে(বাবা) ফোন দেয়। ফোন রিসিভ না হওয়ায় ছোট বোন রেখাকে তার উপর নির্যাতনের কথা জানায়। একপর্যায়ে সকাল ১১টার দিকে গোবিন্দর এক প্রতিবেশির ফোন পেয়ে দুপুরে ১২টার দিকে বেহাই এর বাড়িতে[ যেয়ে শিপ্রাকে বারান্দার উপর মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তার গলায় ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে গোবিন্দ, তার বাবা অনিল দাস ও ভাই মান্দার দাস পারিয়ে যায়। তবে পুলিশ গোবিন্দ দাস এর মা বিল্ব বালা দাসকে গ্রেপ্তার করে। রবিবার বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে শিপ্রার লাশ পাটকেলঘাটা শ্মশানে দাফন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোবিন্দ দাস এর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার রায় জানান, শিপ্রাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় শিপ্রার বাবা সূর্যকান্ত দাস বাদি হয়ে শিপ্রার স্বামী গোবিন্দ দাস, শ্বশুর অনিল দাস, শ্বশুড়ি বিল্ব বালা দাস, দেবর মান্দার দাস এর নাম উল্লেখ করে রবিবার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বিল্ব বালা দাসকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।#