আশাশুনি

আশাশুনিতে পুলিশের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

By Daily Satkhira

June 05, 2017

মোস্তাফিজুর রহমান, আশাশুনি ব্যুরো প্রধান : আশাশুনি থানার এএসআই আবু রাসেল নিজেই মোবাইল কোর্ট বসিয়ে উপজেলার বিভিন্ন মৎস্য আড়ৎ থেকে জরিমানার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। উপজেলার মৎস্য ব্যবসায়ী, আড়ৎদার ও চাষীদের মধ্যে নেমেছে হতাশার ছোয়া। অভিযোগ সূত্রে বিভিন্ন মৎস্য আড়তে গিয়ে জানা যায়, আশাশুনি থানার এএসআই আবু রাসেল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার বিভিন্ন মৎস্য আড়তে গিয়ে বাগদা চিংড়িতে পুশ করা অবস্থায় ব্যাপারীদের আটক করে। কিন্তু সে তাদেরকে থানায় না নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে জরিমানার কথা বলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের কাদাকাটি হাজীরহাট মৎস্য আড়তে শনিবার সকালে বাগদা চিংড়ি পুশ করার অভিযোগ পাওয়া গেলে আশাশুনি থানা পুলিশের এএসআই আবু রাসেল মৎস্য আড়তে অভিযান চালিয়ে পুশকৃত বাগদা চিংড়ি আটক করে। কিন্তু আটকের পর এএসআই আবু রাসেল পুশকৃত বাগদা চিংড়ি সাড়ে ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয় বলে জানায় স্থানীয়রা। এব্যাপারে মৎস্য ব্যবসায়ী নওয়াপাড়া গ্রামের পঞ্চানন নাথ মাছ পুশের কথা স্বীক্ষার করে বলেন আশাশুনি থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পুশকৃত মাছ আটক করেছিলো কিন্তু তারপর কি হয়েছিলো আমি জানিনা। আপনারা আড়ৎদারের সাথে কথা বলেন।

আড়ৎদার কাদাকাটি গ্রামের মোঃ শাহিন রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাছ পুশ করার সময় আশাশুনি থানা পুলিশের এএসআই আবু রাসেল অভিযান চালায়। এসময় সাড়ে ১২হাজার টাকায় তৎক্ষণাৎভাবে বিষয়টি মীমাংশা ও মাসিক ১০হাজার টাকা থানাকে দিতে হবে বলে তিনি জানান। উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের পাইথালী মৎস্য আড়তে ২৫মে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালিয়ে ব্যাপারী সুকুমারকে হ্যান্ড ক্যাপ পরিয়ে আটক করে। সুকুমার জানায় আটকের পর স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ড মেম্বর আলতাফ হোসেন সানা, পুলিশিং কমিটির সভাপতি বিজন দে ও আড়ৎদারদের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৪০হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করে আমাকে মুক্ত করে। অন্যদিকে রমজানের আগের দিন উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বসুখালীতে আইয়ুব আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর বাড়িতে কিছু মাছ পুশ করা অবস্থায় তাকে সহ মাছ আটক করে। এসময় স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ড মেম্বর ফারুক হোসেনর বড়ভাই আজিবর হোসেন ও সাবেক মেম্বর শাহবাজ পিয়াদা এর মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা জরিমানার নামে আত্মসাত করে বলে জানান জাহাঙ্গীর। সে আরও জানায় এএসআই আবু রাসেল জাহাঙ্গীরের নিকট থেকে জোর করে কোন টাকা নেওয়া হয়নি বলে আবু রাসেল তার নিকট থেকে লিখিত নেয়। জানা গেছে এর আগেও একই গ্রামের রায়সুল ইসলামের বাড়ি থেকে একই ভাবে নগদ ৭০হাজার টাকা ও বিশ কেজি খাওয়ার মাছ আদায় করে। এব্যাপারে এএসআই আবু রাসেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন আমি কিছুই জানিনা। বিষয়টি নিয়ে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুষমা সুলতানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি কেউ মাছ পুশ করে এবং এমন তথ্য উপজেলা প্রসাশন জানতে পারে তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অথবা উপজেলা মৎস্য অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকে সাজা দিবেন। কিন্তু থানা পুলিশ যদি বেআইনি ভাবে পুশ করা মাছ ও আসামি ছেড়ে দেয় এবং তা প্রমাণ হয় তবে তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তার দায়ভার থানা পুলিশকে নিতে হবে। উপজেলার মৎস্য ব্যবসায়ী, আড়ৎদার ও চাষীরা জানান, কোম্পানিতে পুশ বা পুশ বিহীন বাগদা মাছের দাম একই, যে কারণে ব্যবসায়ীরা বাগদা মাছে পুশ চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকার সচেতন মহলের দাবি সরকার কোম্পানিগুলোকে পুশ মাছ কেনতে বন্ধ করলে আর কেউ মাছে পুশ করবে না। তাই কোম্পানির কাছে তাদের দাবি যেন তারা পুশ মাছ কেনা বা বেচা বন্ধ করে।