মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার এখন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে।
সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ প্রতিবেশী দেশগুলো কাতারের সাথে সম্পর্ক ছেদ করায় বেশ বিপাকে পড়েছে ছোট দেশ কাতার।
২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক দেশ কাতার। এর বাইরে কাতার সম্পর্কে মানুষ কতটা জানে?
এখানে কাতার সম্পর্কে পাঁচটি তথ্য তুলে ধরা হলো, যেগুলো আপনি হয়তো জানেন না।
প্রথমত: কাতারে জনসংখ্যায় নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি। দেশটির মোট জনসংখ্যা ২৫ লাখের মতো।
কিন্তু এর মধ্যে নারীর সংখ্যা সাত লাখের কম। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কাতারে হঠাৎ করে জনসংখ্যা বৃদ্ধি।
২০০৩ সালে দেশটিতে মোট জনসংখ্যা ছিল সাত লাখের নিচে। কিন্তু ২০১৬ সালে মোট জনসংখ্যা হয়েছে প্রায় ২৫ লক্ষ।
অভিবাসী শ্রমিকদের দ্বারা কাতারে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। গত দশ বছরে বিপুল পরিমাণে বিদেশী শ্রমিক কাতারে এসেছে।
এদের বেশিরভাগই যুবক এবং পুরুষ। ফলে মোট জনসংখ্যায় নারী-পুরুষ ভারসাম্য নেই।
দ্বিতীয়ত: গত এক দশকে লন্ডনে প্রচুর সম্পদ কিনেছে কাতার।
কয়েকমাস আগে কাতারের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, যুক্তরাজ্যে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ৪৫ থেকে ৫১ বিলিয়ন ডলারের মতো।
তিনি জানান, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আরো পাঁচ বিলিয়ন পাউন্ডের মতো সম্পদ ক্রয়ের ইচ্ছা আছে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটির।
তৃতীয়ত: পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মাথাপিছু আয়ের দেশ কাতার।
ছোট এ দেশটিতে তেল ও গ্যাসের বিশাল মজুতের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।
২০১৬ সালের এক হিসেবে দেখা যায়, কাতারে মাথাপিছু আয় প্রায় এক লাখ ত্রিশ হাজার ডলার।
কাতারের পরে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইউরোপের দেশ লুক্সেমবার্গ। তাদের মাথাপিছু আয় কাতারের চেয়ে ২০ হাজার ডলার কম।
তবে কাতারের সম্পদ বণ্টন বেশ অসামঞ্জস্য। দেশটির সাবেক আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানির সম্পদের পরিমাণ ২.৪ বিলিয়ন ডলার।
কিন্তু কাতারে একজন অভিবাসী শ্রমিকের মাসিক আয় ৩৫০ ডলার।
চতুর্থত: কাতার একটি রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেশটি শিল্পকলার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে।
দেশটি নামী-দামী বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। কাতার আমিরের বোন চিত্রকর্মের জন্য বছরে এক বিলিয়ন ডলারের মতো ব্যয় করেছে বলে জানা যায়।
রাজধানী দোহায় ইসলামিক আর্ট জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রায় ১৪০০ বছরের নানা ধরনের চিত্রকর্ম এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে।
পঞ্চম: শিল্পকর্মের প্রতি কাতারের আগ্রহ জাদুঘর থেকে বিস্তৃত হয়ে খোলা জায়গায় এসেছে।
যারা দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়েছেন তাদের চোখে বিশাল আকৃতির একটি ভাল্লুকের শিল্পকর্ম চোখে পড়েছে নিশ্চয়ই।
প্রায় এক দশক আগে সুইজারল্যান্ডের একজন ভাস্করের তৈরি এ ভাস্কর্যটি ব্রোঞ্জের তৈরি এবং এর ওজন প্রায় ২০টন।
২০১১ সালে নিউইয়র্কে এক নিলাম থেকে প্রায় সাত মিলিয়ন ডলার খরচ করে এ ভাস্কর্যটি ক্রয় করে কাতার সরকার।