নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কলারোয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতায় আবারো অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার বিঘা জমির ইরি ধান। উপজেলা চেয়ারম্যানের ঘেরের পানি মেশিন লাগিয়ে বিলে তুলে দেওয়ায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রায় ২ হাজার প্রাক্তিক চাষী। যদিও উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু এবিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
সরেজমিনে কলারোয়া উপজেলার মুড়ালীকাটি এলাকায় গেলে ভুক্তভোগীরা জানান, গত বছরের আগস্ট মাসে স্থানীয়ভাবে চাষ কমিটি গঠনের মাধ্যমে ৯লক্ষাধিক টাকা খরচ করে আমন চাষের যোগ্য করে তুলেছিল। সেখানে চাষীরা ধান চাষও করেছিলেন। বিলের দক্ষিণ পাশে কলারোয়া উপজেলার চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুর মৎস্যঘের দুটিতে পানি নেওয়ার জন্য ২ হাজার কৃষকের পেটে লাথি মেরে বাঁধ কেটে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন মুড়ালীকাটির বিলটি। ফলে ২ হাজার কৃষকের ধান পচে গিয়েছিল।
এটি নিয়ে প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যানের কর্মচারী আব্দুল আলিম বাদী হয়ে চাষীদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দায়ের করে। তারপরও তারা স্বপ্ন দেখেছিল অন্তত ইরি মৌসুমে ব্লক করে ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন। কিন্তু এবার চেয়ারম্যান ঘেরে ধান চাষ করার জন্য মেশিন লাগিয়ে ঘেরের পানি বিলে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। ফলের আড়াই বিঘা বিল পানিয়ে তলিয়ে যাবে। আর কৃষকরা ইরি ধানও ঘরে তুলতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। এবিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেও লাভ হয়নি। উল্টো বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শণ করে যাচ্ছেন তিনি জানিয়েছেন চাষীরা। বিশেষ করে তার ঘেরের কর্মচারীরা চাষীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানিসহ নানান হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। মুরারীকাটি গ্রামের উজির আলী দফাদারের পুত্র ইবাদুল জানান, উক্ত বিলে তার তিন বিঘা জমি রয়েছে। গত আমনের সময় ঋণ নিয়ে ধান চাষ করেও ধান ঘরে তুলতে পারেনি। ভেবেছিলাম বছরে একটি ধান তুলতে পারবো। কিন্তু চেয়ারম্যান মেশিন লাগিয়ে তার ঘেরের পানি বিলে তুলে দিচ্ছেন। মনে হয় এবার ইরিধানও তুলতে পারবো না। একই এলাকার মৃত. সেবজানের পুত্র নুর ইসলামসহ অনেক চাষী একই অভিযোগ তুলে বলেন,বর্ষা মৌসুমে তার কাটিয়ে দেওয়া পানিতে তলিয়ে যায় আমাদের হাজার হাজার বিঘা ধানের ক্ষেত। ইরি মৌসুমে আবারো উল্টো নিজের ঘেরের পানি উত্তোলন করে দিয়ে আমাদের পথে বসানোর পায়তারা চালাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। কলারোয়া পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান লাল্টু ঘেরে পানি মেশিন দিয়ে সেচে বিলের মধ্যে তুলে দিচ্ছেন। আমার এ বিল শুকিয়ে ধান চাষ করার জন্য সেচ কমিটি গঠন করেছি। কিন্তু একদিকে আমার সেচ করছি। অন্যদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান মেশিন লাগিয়ে তার ঘেরের পানি বিলে তুলে দিচ্ছেন। এতে করে বিল পুনরায় পানিয়ে ডুবে যাচ্ছে। ফলে কৃষকদের সদ্য রোপনকৃত ইরি ধান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবিষয়ে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন, ঘেরের মধ্যে যাদের জমি রয়েছে। তারা ধান চাষ করবে। সে কারনে পানি বিলের দেওয়া হচ্ছে। আবার শ্যালো মেশিন লাগিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু শোনা কথায় সংবাদ প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাস্তবতা তুলে ধরুন। কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, বিষয়টির সমাধান হয়েছে। গতকাল উপজেলা চেয়ারম্যান এবং চাষীদের নিয়ে বসে পানি নিস্কাশনের একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে।