জাতীয়

১৭ বছর পর সাংবাদিক পরিচয়ে লুকিয়ে থাকা ফাঁসির আসামি গ্রেপ্তার

By Daily Satkhira

February 18, 2022

দেশের খবর: স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি ১৭ বছর ধরে ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে পালিয়ে বেড়ানোর পর ধরে পড়েছে র‌্যাবের জালে। সাভারের আশুলিয়া থেকেবৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আশরাফ হোসেন কামাল নামের ৪৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

হত্যা মামলায় মৃত্যদণ্ড পাওয়ার পর নিজেকে বাঁচাতে মিথ্য সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কীভাবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, তা উঠে এসেছে র‌্যাবের তদন্তে।

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি জানান, স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত আশরাফকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।কিন্তু ২০০৫ সালের ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই তিনি পালিয়ে ছিলেন। অবশেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সূত্র ধরে র‌্যাব তাকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী আশরাফের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। ১৯৯৮ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতেকোত্তর করে ২০০১ সালে সোনারগাঁওয়ে একটি সিমেন্ট কারখানায় কাজ শুরু করেন তিনি। ২০০৩ সালে সানজিদা আক্তারের সঙ্গে বিয়ের পর ওই সিমেন্ট কোম্পানির আবাসিক এলাকাতেই থাকা শুরু করেন তারা। তাদের একটি ছেলেও হয়। ২০০৩ সালে সানজিদা আক্তারের সঙ্গে বিয়ের পর ওই সিমেন্ট কোম্পানির আবাসিক এলাকাতেই থাকা শুরু করেন তারা। তাদের একটি ছেলেও হয়। পরে ২০০৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ওই আবাসিক এলাকা থেকে সানজিদার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয় ।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহবশত আশরাফকে গ্রেপ্তার করলেও ১৫ মাস বয়েসের শিশু সন্তানের কথা ভেবে ১২দিন পর সানজিদার বাবা সাদেক মিয়া আশরাফের জামিনের ব্যবস্থা করেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার একদিন পরই আশরাফ এলাকা ছাড়েন। পালিয়ে থাকার এ দীর্ঘ সময়ে তিনি নিজের সন্তানসহ কোনো স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। এর মাঝে ২০০৬ সালে আশুলিয়ায় পরিচয় গোপন করে আরেকটি বিয়ে করেন। ওই ঘরেও তার ১৩ বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।

এদিকে ২০০৫ সালের এপ্রিলে সানজিদার লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে চিকিৎসক জানান, শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে ওই তরুণীকে। সোনারগাঁ থানায় তখন হত্যা মামলা দায়ের হয়। পুলিশের তদন্তেও হত্যার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।তদন্ত শেষে পুলিশ ওই মামলায় অভিযোগপত্র দেয়। আশরাফের অনুপস্থিতিতেই তার বিচার চলে। ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

র‌্যাব কর্মকর্তা আল মঈন বলেন, সোনারগাঁ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বেশিরভাগ সময় আশুলিয়ায় ছিলেন আশরাফ। সেখানে তিনি কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন বলে পরিচয় দিয়ে যাচ্ছিলেন।এমনকি যুক্ত ছিলেন আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সঙ্গেও। তিনি মূলত বিভিন্ন ভূইফোঁড় সংবাদপত্র ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচরণ থেকে তাকে শনাক্ত করতে সমর্থ্য হয় র‌্যাব।