শ্যামনগর প্রতিনিধি :শ্যানগরের কৈখালী এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪ কর্মচারী নিয়োগে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্ধ কোটি টাকার অর্থ বানিজ্যর অভিযোগ উঠেছে। কম্পিউটার ল্যাব এ্যাসিসট্যান্ট, অফিস সহায়ক; সহ নৈশপ্রহরী, ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য চারজনকে ৫০ লক্ষ টাকার অর্থের বিনিময়ে আগেই চুড়ান্ত করা হয় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন রেশমা বেগম,
আসমা, মারুফা বেগমসহ অনেকে। চুড়ান্ত হওয়া প্রার্থী ও স্কুল কমিটির সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের সমঝোতা ও চুক্তি অনুযায়ী আর্থিক লেনদেনের কাজও আগেভাগে মিটমাট হয়ে গেছে। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বৈধতা দিতে গত ইং ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রোববার বেলা দশটায় এসব পদের অনুকুলে আবেদনকারীদের যথারীতি লোক দেখানো পরীক্ষা নেয়া হয়।
এদিকে আয়া পদে দরখাস্তকারী প্রার্থী শক্ত হওয়ায় মারুফা বেগম নামের এক প্রার্থীর আবেদনপত্র বাতিলপুর্বক পরীক্ষা কেন্দ্রে তাকে উপস্থিতির হতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে । শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান সম্প্রতি কৈখালী এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চারটি পদে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। স্বচ্ছভাবে নিয়োগের প্রচারনা চালিয়ে ঐসব পদের জন্য আবেদন করতে স্থানীয়দের মধ্যে কয়েকজন আবেদন করেন। আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় লিখিত সহ মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে চুড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের ঘোষণাও দেন উক্ত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ উঠেছে গত ইং ১৩ ফেব্রুয়ারি রোববার শ্যামনগর উপজেলা সদরে নকিপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় সকল পরিক্ষার্থীদের উপস্থিত হয়ে উক্ত নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই চুড়ান্ত হয়ে যান অর্ধ কোটি টাকার বিনিময়ে আগেভাগে ঠিক করা নিয়োগ প্রাপ্ত চারজনের নাম। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ইতিমধ্যে চারটি পদের জন্য ৫০ লাখ টাকার চুক্তিত চারজনকে চুড়ান্ত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে । নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুসরণের অংশ হিসেবে রোববার শুধুমাত্র নামে আবেদনকারী প্রার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া ও দিন ধার্য্য করা হয় বলে জানান অন্য প্রার্থীরা। আর বিষয়টি জানাজানি হলে রেশমা, আসমা, মারুফা বেগমসহ কয়েক আবেদনকারী পরীক্ষা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার আগেই সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয় ও শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। এসময় অভিযোগে তারা দাবী করেন অফিস সহায়ক ও কম্পিউটার ল্যাব এ্যাসিসট্যান্ট পদেও জন্য প্রতি জনের নিকট থেকে ১৪ লক্ষ টাকা করে এবং অপর দুটি পদের জন্য মনোনীতদের নিকট যথাক্রমে ১০ লক্ষ টাকা করে নিয়েছে উক্ত প্রতিষ্টানেের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। আর বিষয়টি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আগেই জানা জানির কারণে রেশমা, আসমা মারুফাসহ কয়েকজন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে লোক দেখানো এমন নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ জানিয়ে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে আবারও পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি করেন। অভিযোগকারীদের দাবি বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক ও কম্পিউটার ল্যাব এ্যাসিসট্যেন্ট পদের জন্য মাথাপিছু ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে দিলীপ ও জাহিদ নামের দু’জনকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি চুড়ান্ত করেছে। এছাড়া প্রতিটি পদের জন্য ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে নৈশপ্রহরী হিসেবে নিমাই মন্ডল ও আয়া পদের জন্য পল্লী চিকিৎসক রতন মিস্ত্রির স্ত্রী মিনতী রানীর চাকুরী পুর্ব নির্ধারিত। অর্ধ্ব কোটি টাকার নিয়োগ প্রক্রিয়া অতিশয় গোপনে সম্পন্ন করতে গত বৃহস্পতিবার প্রার্থীদের অনুকুলে প্রবেশপত্র পাঠানো হয় বলেও দাবি সংশ্লিষ্টদের। এদিকে আয়া পদের প্রার্থী মারুফা বেগম অভিযোগ করেছে যুক্তিসংগত কোন কারন ছাড়াই তার আবেদনপত্র বাতিল করা হয়। প্রধান শিক্ষকের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়া সহ চাহিদা মত টাকা দিতে সম্মত না হওয়ার কারনে তার প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি। মারুফা বেগমসহ অন্যদের দাবি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বাইরে প্রশাসনের তত্বাবধানে উক্ত পদগুলোর জন্য আবেদনকারীদের সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক। অর্ধ্ব কোটি টাকার লেনদেনের লোক দেখানো পরীক্ষা বন্ধে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয় সহ কতৃপক্ষের আন্তরিক হস্তক্ষেপও দাবি করেন ভুক্তভোগীরা ।এদিকে আরও অভিযোগ উঠেছে প্রবেশপত্র না পাওয়া প্রার্থীরা উধ্বর্দন কতৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানোর খবরে প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার মুটোফোনে তাদের ডেকে পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে প্রবেশপত্র সগ্রহ করতে বললেও তারা অস্বীকার করেন। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারের ব্যক্তিগত মুটোফোন একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জি এম রেজাউল করিম বলেন, টাকার লেনদেনের মাধ্যমে প্রার্থী চুড়ান্ত করার বিষয়ে আমার জানা নেই। চেষ্টা করছি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরীক্ষার মাধ্যমে সৎ ও মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আক্তার হোসেনর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।