নিজস্ব প্রতিনিধি : দীর্ঘদিন নির্বাচন না দিয়ে অগঠনতান্ত্রিকভাবে চলছে সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী(দাহ্য পদার্থ বহনকারী ব্যতিত) ট্রাক্টর ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটির কার্যক্রম। টানা ১৩ বছর ধরে কোন নির্বাচন না দিয়ে শুধু মাত্র কাগজ কলমে নির্বাচন দেখিয়ে ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রন করে আসছেন প্রভাবশালী কতিপয় নেতা। শুধুমাত্র কাগজ কলমে কমিটি দেখিয়ে দিনের পর দিন ইউনিয়ন থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন অবৈধভাবে পদদখলকারীরা।
শ্রমিকদের উন্নয়নে কোন কাজ না করেও প্রতি মাসে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদকসহ কমিটির অন্যান্যরা মোটা অংকের ভাতা গ্রহণ করে যাচ্ছেন। ভূয়া আপ্যায়ন খরচ দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতানোরও অভিযোগ রয়েছে অর্থ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্য খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন ও পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাধারণ শ্রমিকরা জানান, সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী(দাহ্য পদার্থ বহনকারী ব্যতিত) ট্রাক্টর ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং খুলনা-৭৬৪) ২০১০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০১০ সালের নির্বাচনে আব্দুর রকিব – কাদু কমিটি নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও কোন নির্বাচন না দিয়ে অনুমোদিত গঠনতন্ত্রের ১৯ ধারা ও অন্যান্য ধারা উপধারা বিধিবিধান অনুসরন না করে অগঠনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাগজে কলমে দেখানো এবং পাতানো নির্বাচন সম্পন্ন করেন।
এরপর ২০১৯ সালে অগঠনতান্ত্রিক ভাবে কোন নির্বাচন না হলেও ইউনিয়নের ত্রি বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন দাবি করে পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেন খালেক-কাদু কমিটি। গত ১ মার্চ ২০১৯ তারিখে আব্দুল খালেক – কাদের কাদু কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও উক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে ইউনিয়ন। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধিত ২০১৮ এর ১৭৯ (১)(ঞ) ধারা এবং ট্রেড ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রের ১৯ ধারা লঙ্ঘন করে উক্ত কমিটি অবৈভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ২০২২ সালে আবারো পূর্বের ন্যায় অবৈধভাবে কমিটি গঠনের নাটক মঞ্চস্থ করার পায়তারা চালাচ্ছেন তারা। আর এ উদ্দেশ্যে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারী অগঠনতান্ত্রিকভাবে সাধারণ সভা না করে কাগজে কলমে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে ভূয়া নির্বাচনী তফশীল ঘোষনা করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রের ১৯ ধারা মোতাবেক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কোন নির্বাচন কমিটি গঠিন হয়নি। নির্বাচনের দিন, তারিখ, স্থান ও সময় নির্ধারিতও করা হয়নি। অথচ আকস্মিকভাবে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি তাদের পছন্দের লোকদের দ্বারা নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনী তপশীল প্রচার ও প্রকাশ করে খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন ও পরিচালক এর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। যা সম্পূর্ণ ভূয়া ও জাল জালিয়াতির সামিল। শ্রমিকরা আরো জানান দীর্ঘদিন ইউনিয়নের নির্বাচন না দিয়ে অগঠনতান্ত্রিকভাবে কমিটি গঠন করে শ্রমিকদের অর্থ তছরূপ করে যাচ্ছেন ওই নেতারা। ইতোমধ্যে ইউনিয়নের ২টি ট্রাক বিক্রয় করা হয়েছে। শ্রমিকদের নামে উত্তোলিত অর্থও তছরুপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকরা। তারা অবিলম্বে গঠনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের দাবি জানান এবং স্বেচ্ছাচারিভাবে ইউনিয়ন দখলে রাখা নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এবিষয়ে ইউনিয়নের সভাপতি ও জেলা শ্রমিকলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক বলেন, ইউনিয়নে এসে সেক্রেটারির সাথে বসে চা খান। সে সময় সেক্রেটারি বিস্তারিত জানাবে। এছাড়া আমি তো অসুস্থ। সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের কাদুর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন কথা না বলে পাশে উপস্থিত থাকা সভাপতির কাছে ফোন ধরিয়ে দেন। ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান ময়না এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলে এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চাচ্ছি না।