নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার নগরঘাটায় পরকীয়া প্রেমের জেরে স্বামীকে হত্যাকারী স্ত্রী এবং তার প্রেমিকের ফাঁসির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ছোটপুত্র সাব্বির হোসেন এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যও উপস্থিত ছিলেন।
এসময় নিহতের ছোটপুত্র পিতাকে হত্যায় জড়িত মা এবং মায়ের পরকীয়া প্রেমিকের দ্রুত ফাঁসির দাবি জানান। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান, নগরঘাটা মঠবাড়ী গ্রামের মোহাম্মাদ আলী মোড়লের পুত্র আবুল কালাম আজাদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১ মার্চ ২০২২ রাতে আমার ছোট ভাই গোলাম মোড়ল স্ট্রোক জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করে মর্মে আমার কাছে সংবাদ প্রদান করা হয়। আমিসহ স্থানীয়রা সেখানে গিয়ে আমার ছোট ভাইয়ের লাশের গলায় কালো একটি দাগ দেখতে পাই এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এরপর আমরা বুঝতে পারি তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরকীয়া প্রেমের বলি হতে হয়েছে আমার ভাইকে। নিজের স্ত্রী রেহেনা এবং রাব্বির অবৈধ প্রেমলীলায় বাধা দেওয়া তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার ভাইয়ের স্ত্রী রেহেনার সাথে যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার শিমুলিয়া গ্রামের জের আলী মোড়লের পুত্র রাব্বির সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে একাধিবার শালিস হলেও রেহেনা রাব্বির সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিন্ন করেনি।
এটি নিয়ে স্বামী স্ত্রী মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ১ মার্চ ২০২২ তারিখ রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে আমার ভাই গোলাম মোড়ল খাটে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লে স্ত্রী রেহেনা এবং তার প্রেমিক রাব্বিসহ তার সহযোগিরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এছাড়া মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাত করে জখম করে। হত্যার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে স্ট্রোক করে মারা গেছে মর্মে প্রচার দিতে থাকে আমার ভাইয়ের স্ত্রী রেহেনা পারভীন। যদিও রেহেনা ও তার প্রেমিকের উদ্দেশ্যে সফল হয়নি। পুলিশ রেহেনা এবং রাব্বিকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ২টি কনডম, দড়ি এবং ইনজেকশনের সিরিঞ্জ উদ্ধার করেছে। গোলাম মোড়ল ও রেহেনা খাতুন দম্পত্তির ২ ছেলে সাগর হোসেন (১৮) ও সাব্বির হোসেন (১৫)। আত্মীয়তার সম্পর্ক ধরে যশোরের ঝিকরগাছার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা গোলাম রাব্বির (৩০) সাথে রেহেনা পারভীনের পরকীয়া সম্পর্ক থাকায় প্রায়ই রাব্বি তাদের বাড়িতে আসতো। ঘটনার রাতে রাব্বি তাদের বাড়িতে ছিলো। হত্যার ঘটনায় আমি বাদী হয়ে ৩জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করি। কিন্তু মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আসামীরা তাদের আতœীয় স্বজনদের মাধ্যমে নানা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। রেহেনার আতœীয়রা মোটা অংকের অর্থ নিয়ে মাঠে নেমেছেন তাদের কে নির্দোষ প্রমাণিত করতে। এমনকি মামলার বাদী অর্থ্যাৎ আমাকেও নানানভাবে হয়রানির চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মামলায় দুজন আসামী আটক হলেও একজন বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি পরকীয়া প্রেমের জেরে হত্যা হওয়া ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার, সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।