সাতক্ষীরা

মেয়র চিশতির বিরুদ্ধে আইন ভেঙে সাতক্ষীরা পৌরসভায় ঠিকাদারীর প্রমাণ মিলেছে !

By daily satkhira

March 23, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরা পৌর মেয়রের তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে ১০ কাউন্সিলের করা অভিযোগের বেশ কয়েকটির সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। যদিও কিছু ভুঁইভোড় অনলাইনে গতকাল থেকে প্রচার করা হচ্ছে যে, তদন্তে কোন অভিযোগই প্রমাণ হয়নি।

এ প্রসঙ্গে একাধিক পৌর কাউন্সিল বলেন, কারও বিরুদ্ধে আইন ভাঙার একটি অভিযোগ প্রমাণ হলেও তাকে সেজন্য শাস্তি পেতে হয়। অথচ একাধিক অনিয়মের প্রমাণ যার বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে তাকে নির্দোষ সাজিয়ে হাস্যকর গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে সাতক্ষীরায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস স্বাক্ষরিত একটি পত্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পানি বিল মওকুফের অভিযোগ প্রমানিত হলেও কাউন্সিলরগণ সুপারিশ করেছেন। ১৪২৩ হতে ১৪২৮ সন পর্যন্ত হাট বাজার ইজারা মূল্য, ভ্যাট বকেয়ার চুক্তিপত্রের অভিযোগ প্রমানিত। ট্রেড লাইসেন্সের ফি এককভাবে হ্রাস করার অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে।

প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) আইন, ২০১০ এর ১৯ এর (২) (ছ) নং ধারা অনুসারে পৌরসভা মেয়র বা কাউন্সিলর কর্তৃক পৌরসভার কোন ঠিকাদারী কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু মেয়র তাজকিন আহমেদ পৌরসভা থেকে ঠিকাদারির জন্য ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করেন। যা ওই তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদন ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।

যদিও এবিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কোন সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। অথচ একটি চক্র পৌর মেয়র নির্দোষ- এমন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বলে কাউন্সিলরগণ দাবি করেছেন।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত করেছি। প্রতিবেদনও পাঠিয়েছি। এটি তো আভ্যন্তরীণ বিষয়। মেয়রের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা এমন সংবাদ বিভিন্ন অনলাইন প্রচার হচ্ছে এবিষয়ে তিনি বলেন, এটি ঠিক না। মন্ত্রণালয় থেকে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। তাছাড়া দোষী কি নির্দোষ সেটিও এখনো প্রমাণিত হয়নি। অনলাইন পত্রিকাগুলো কোন প্রমাণ ছাড়া এধরনের সংবাদ প্রকাশ করে ঠিক করেনি। আমরা প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় পুনরায় তদন্ত করতেও পারে।

এবিষয়ে পৌর কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান বলেন, কমপক্ষে ১০টি খাতে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে কারো সঙ্গে পরামর্শ না করে গরীব লোকজনকে আর্থিক সাহায্য বাবদ ১ কোটি ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ, ব্যক্তিস্বার্থে ৮০ লাখ টাকার পানির বিল মওকুফ, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য পৌরসভার টাকায় গাড়ির তেল কেনাসহ প্রমোদ ভ্রমণ, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে পৌরসভার আর্থিক ক্ষতি, বিধি ভঙ্গ করে পৌরসভার বিভিন্ন হাট-বাজার ইজারা দেওয়া এবং অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য বাজেট ছাড়াই টেন্ডার দেওয়া উল্লেখযোগ্য। এসব বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তদন্তের সিদ্ধান্ত আসার আগেই একটি চক্র তাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। তদন্তের আমাদের অভিযোগের মধ্যে অনেকগুলোর সত্যতা পেয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৩ জানুয়ারি ২০২২ সাতক্ষীরা পৌরসভার ১১জন কাউন্সিলর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে মেয়র চিশতীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গুলোর যথাযথ তদন্তেন জন্য মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দ্রুত তদন্ত কাজ শুরু করবে বলে জানাগেছে।