সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নির্বাচন বানচালের কোনো চক্রান্ত বরদাস্ত করা হবেনা

By daily satkhira

March 24, 2022

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, প্রেসক্লাবের ২২ মার্চ তারিখের বার্ষিক সাধারন সভা ও সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে ‘সাংবাদিক ঐক্য’ নামের একটি কথিত সংগঠনের মেইল(satkhirajournalistunity@gmail.com)থেকে প্রেসক্লাবের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে সদস্যদের মেইলে চরম মিথ্যাচার, মনগড়া তথ্য সম্বলিত প্রেসবিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে সদস্যদের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসমস্ত তথ্য তারা কেবল মেইলে পাঠিয়ে খ্যন্ত হচ্ছে না, তারা তা আবার দু’একটি পত্রিকায় প্রকাশ এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও ওইসমস্ত পত্রিকার অনলাইন ভার্সানে এবং বিভিন্ন ফেসবুক তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। যেটি প্রেসক্লাবের মত একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য চরম মর্যদাহানিকর। যা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বার্ষিক সাধারণ সভার সার্বিক ঘটনা ও পরিস্থিতির বিষয়ে প্রেসক্লাবের সদস্যরা সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল। তারপরও ওইদিনের ঘটনার বিষয়ে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে প্রকৃত তথ্য আপনাদের জানাতে চাই। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বশেষ ১৫ মার্চ তারিখের সভায় অনুমদিত ১০১ জন সদস্যকে যথানিয়মে সাধারণ সভায় উপস্থিত ও বকেয়া চাঁদা পরিশোধের জন্য সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সুজন স্বাক্ষরিত চিঠি দেয়া হয়। সেই চিঠির আলোকে সকল সদস্যরা সাধারন সভায় হাজির হন। দীর্ঘসময় পর সাধারন সভায় মিলিত হতে পেরে উচ্ছসিত সদস্যরা সভাস্থলে উপস্থিত হতে কিছুটা দেরী করেন। তাছাড়া প্রেসক্লাবের কিছু সদস্য কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় পত্রিকা না থাকা ও গঠনতান্ত্রিক নিয়মে ০৫.০৯.২০২১ তারিখে সদস্যপদ বাতিল হওয়া তিনজন সদস্যের বার্ষিক বকেয়া চাঁদা গ্রহনের জন্য অর্থ সম্পাদককে চাপ দিতে থাকেন। যেহেতু অনেক আগে তাদের সদস্যপদ বাতিল হয়েছে এবং ১০১ জনের তালিকায় তাদের নাম না থাকায় তাদের চাদা নেয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। মিমাংশিত এই বিষয়টি ইস্যু করে ৩২ জন সদস্য বার্ষিক চাঁদা প্রদান না করে সভাস্থলে হাজির হন। প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের ১০ এর ঘ) ধারা মতে বার্ষিক সাধারন সভার পূর্বে বকেয়া চাঁদা পরিশোধ করার কথা। এসময় প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী সভা শুরুর আগে তাদের সদস্য চাঁদা পরিশোধ এবং ১০১ সদস্যের বাইরে কাউকে সভাস্থলে না থাকতে অনুরোধ করে বক্তব্য দেন। কিন্তু সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সভাপতির বক্তব্যের মধ্যে ওই তিনজনের চাঁদা নিতে এবং তাদের সভায় রাখতে পরিকল্পিতভাবে সভাপতিতে আক্রমন করে বক্তব্য দিতে থাকেন এসময় সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী ও আবু আহমেদও নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে সভা ভন্ডুল করতে উদ্যত হন।

এসময় তাদের পক্ষীয় সদস্যরাও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র সদস্যদের অনুরোধে সদস্য চাঁদা পরিশোধ করেন এবং ওই তিনজন বাতিল হওয়া সদস্যকে সভাস্থল থেকে বাইরে পাঠাতে সম্মত হন। এরপর বৈধ সদস্যদের সদস্য চাঁদা পরিশোধ স্বাপেক্ষে ৭১ জন সদস্যের উপস্থিতিতে পূনরায় সভাপতি এজেন্ডা অনুযায়ি কার্যক্রম শুরু করে স্বাগত বক্তব্য দিতে শুরু করেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, বিগত নির্বাচনে পরাজিত হয়ে প্রেসক্লাবের কিছু সদস্য ‘সাংবাদিক ঐক্য’ নামের একটি সংগঠন তৈরি করে কিছু ‘বিপথগামী’ সদস্য একের পর এক প্রেসক্লাবের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকান্ড পরিচালনা করে চলেছেন। সভাপতির বক্তব্য চলাকালে আবারও আবুল কালাম আজাদ, আবু আহমেদ, সুভাষ চৌধুরীসহ কতিপয় সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং হট্টগোল করে সভা বানচালের চেষ্টা করেন। এরইমধ্যে অতি উৎসাহী হয়ে যমুনা টিভির আহসানুর রহমান রাজিব সামনের সারিতে থাকা প্রেসক্লাব সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, অর্থ সম্পাদকসহ সিনিয়র সাংবাদিকদের ‘এই ধর ধর’ বলে চেয়ার তুলে তেড়ে আসেন এবং মারতে উদ্যত হন। এহেন পরিস্থিতিতে প্রেসক্লাবের প্রবীন সদস্য প্রথম আলো’র নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, বীর মুক্তিযোদ্ধা কালিদাস রায়, যুগের বার্তার নির্বাহী সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোজাফ্ফর রহমান, সাবেক সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, সদস্য হাফিজুর রহমান মাসুম, মনিরুল ইসলাম মনি, আসাদুজ্জামান আসাদ, শাকিলা ইসলাম জুইসহ প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র সাংবাদিকরা তাকে নিবৃত করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

এরপর বেশকিছু সময়ের জন্য সভা মুলতবী রাখা হয়। মধ্যাহ্ন বিরতির পর পূনরায় সভার বাকী কার্যক্রম শুরু হয়। এতে তারা সভায় অংশ না নিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ করে চলে যান। যথারীতি সভা শুরু হলে উপস্থিত সকল সদস্য শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গঠনতন্ত্রের আলোকে আহসানুর রহমান রাজিবকে সদস্যপদ বাতিলের প্রস্তাব করলে তা সর্বসস্মতভাবে গৃহীত হয়। এরপর ২১ এপ্রিল নির্বাচনের তারিখ নির্ধারন করে নির্বাচনী তপশীল ঘোষনা এবং তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। তাদের এহেন কর্মকান্ডে অধিকাংশ সদস্য মূখ ফিরিয়ে নেয়ায় এবং আগামী নির্বাচনে পরাজয়ের আশাংকা অনুমান করে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করে কতিপয় সদস্য ঘোলা পনিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা শুরু করছে। এমনকি সাধারন সভার পরদিন বুধবার সকালে প্রেসক্লাবে স্বাভাবিকভাবে গিয়ে ১৮-২০ জন সদস্য জড়ো হয়ে একটি কথিত আহবায়ক কমিটি ঘোষনা হয়েছে বলে অপপ্রচার শুরু করেছেন। যা গঠনতন্ত্র পরীপন্থি এবং ধৃষ্টতা। প্রেসক্লাব কোনোভাবেই তাদের এই অপচেষ্টাকে সফল হতে দেবেনা। বরাবরই যখনই প্রেসক্লাব যখন স্থীতিশীল অবস্থা বিরাজ করে গঠতান্ত্রিক ধারাবহিকতা রক্ষা করার চেষ্টা করে ঠিক তখনই ওই মহলটি প্রেসক্লাবকে অস্থিথিশীল করতে তৎপর হয়। প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ মনে করে নির্বাচনে জয়পরাজয় থাকবে। পক্ষ-বিপক্ষ থাকবে। নির্বাচন ভন্ডুল করে যদি কেউ ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করেন তাদের বিরুদ্ধে প্রেসক্লাব গঠনতন্ত্র অনুযায়ি পদক্ষেপ নিতে পিছপা হবেনা।

আমরা আশাকরি এরপর কোনো ব্যাক্তি বা গোষ্টির স্বার্থ সংরক্ষণ করতে সদস্যরা ভুলপথে পরিচালিত হবেন না। একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে প্রেসক্লাবের সদস্যরা গঠততান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে সমন্বিতভাবে উদ্যোগী হবেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি