নিজস্ব প্রতিনিধি : অবশেষে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খরাইল গ্রামের খালের মুখের পাটা অপসারণ করে পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে মাস্তাক আহম্মেদ এর কবল থেকে ১৪০ বিঘা জমি দখলে নিয়েছেন ৯০জন জমির মালিক।
বৃহষ্পতিবার সকাল ৮ট থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পানি নিষ্কাশন হয়। ভবানীপুর গ্রামের ওয়ার্কার্স পার্টির সক্রিয় কর্মী দেব কুমার মণ্ডল জানান, খরাইল বিলে তাদের গ্রামসহ খরাইল, বারাত, মীর্জাপুর , বারাত ও দেওয়ানীপাড়ার কৃষকদের ২৫০ বিঘা জমি লীজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছিলেন যশোরের কেশবপুর উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক চুয়াডাঙা গ্রামের মোস্তাক আহম্মেদ। ১৫ চৈত্র তিনিসহ ৯০ জন জমির মালিক জানিয়ে দেন যে ৩০ চৈত্র মেয়াদ শেষ হলে তারা ওই জমি আর নতুন করে লীজ দেবেন না।
এতে বেপরোয়া হয়ে মোস্তাক আহম্মেদ তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জমির মালিকদের উপর হুমকি ধামকি দেওয়া শুরু করেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জমি না ছাড়ায় তারা বিষয়টি তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার বিশ্বাসের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নোটিশ পেয়েও নির্ধারিত সময়ে ঘের ছেড়ে চলে যাননি মোস্তাক আহম্মেদ। উপরন্তু রবিবার পুলিশের একটি বিশাল টিম জবরদখলকারি মোস্তাক আহম্মেদ এর পক্ষ নিয়ে তালা উপজেলা খরাইল, বারাত, মীর্জাপুর, ভবানীপুর এলাকায় টহল দিয়েছে। মোস্তাক আহম্মেদ এর সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা জমির মালিকদের হুমকি দিয়ে বলে“ এক সপ্তাহ আর কখনো পুরবে না। জমি ফিরিয়ে নিতে এলে রক্তের হোলি খেলা হবে ।
এর পরপরই মোস্তাক আহম্মেদ ছোবহান মাষ্টার ও মুক্তিযোদ্ধা গুরুপদ মণ্ডলের মাধ্যমে জমির মালিক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সস্মেলন করেন। বারাত এর ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, অ্যাড. কেসমত আলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে খারাপ মন্তব্য করেন ।
এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সাংসদ বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য অ্যাড. মুস্তাফা লুৎফুল্লাহতেতুলিয়া, কুমিরা ও ইসলামকাটির তিন চেয়ারম্যান ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে জরুরী সিদ্ধান্ত দেন। সে অনুযায়ি গত বুধবারের মধ্যে মোস্তাক আহম্মেদ জমি ছেড়ে না দিলে বৃহষ্পতিবার গ্রামবাসিকে সাথে নিয়ে জমির মালিকরা খালের মুখ কেটে পানি সরিয়ে দিয়ে জমি দখলে নেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির তালা উপজেলা শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবারের মধ্যে মোস্তাক আহম্মেদ জমি ছেড়ে না দেওয়ায় বৃহষ্পতিবার সকাল ৮টার দিকে খরাইল, ভবানীপুর, বারাত, দেওয়ানীপাড়া, মীর্জাপরিসহ বিভিন্ন গ্রামের চার শতাধিক নারী পুরুষকে নিয়ে খরাইল গ্রামের খালের মুখের পাটা অপসারন করে পানি সরানোর কাজ শুরু করা হয়। এ সময় গ্রামবাসির হুঙ্কারে ঘেরের বাসা থেকে পালিয়ে যায় মোস্তাক আহম্মেদ এর তিন কর্মচারি। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। গভীর রাতে ২৫০ বিঘা জমির পানি অপসারিত হয়। ৯০ জন কৃষক তাদের ১৪০ বিঘা জমি বুঝে নেন। গ্রামবাসির সঙ্গে অংশ নেন, কুমিরা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা হিরন্ময় মণ্ডল, মোঃ নজরুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাফ হোসেন। ভবানীপুর গ্রামের ভবতোষ মণ্ডল জানান, তারা পাঁচ ভাই ১৮ বিঘা, গোব্দি মণ্ডল সাত বিঘা, দেবু মণ্ডল ১৫ শতক, নবীন ঘোষ সাড়ে চার বিঘাসহ প্রায় ৯০ জন কৃষক মোস্তাক আগম্মেদ এর দখলে থাকা ১৪০ বিঘা জমি ফিরে পেয়েছেন।