নিজস্ব প্রতিনিধি : ত্রিমুখি দ্বন্দ্বে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাতক্ষীরা পৌরসভার ১৪ জন ঠিকাদার। কাজ শেষ হওয়ার প্রায় ২ বছর অতিবাহিত হলেও বিল উত্তোলন করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তারা।দিন দিন বাড়ছে ব্যাংকের সুদের পরিমান। অথচ সাতক্ষীরা পৌরসভার ফান্ডে প্রায় দেড় মাস যাবত টাকা জমা থাকলেও তা ঠিকাদারদের ভাগ করে দেওয়ার কোন উদ্যোগই নেওয়া হচ্ছে না বলে ভুক্তভোগী ঠিকাদারগণ জানিয়েছেন। ঠিকাদাররা জানান, গত প্রায় ২ বছর পূর্বে সাতক্ষীরা পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে আই ইউ আই ডি পি প্রকল্পের কাজ করেন। যার মূল্য ৪কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। পৌর আইন অনুযায়ী কোন ঠিকাদারের কাজ শেষের ৬৫ দিনের মধ্যে পুরো টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু দেড় বছর অতিবাহিত হলেও বিল নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। ফলে মন্ত্রণালয়ে ঠিকাদাররা যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করে। যা পরবর্তীতে সাতক্ষীরা এজি অফিস থেকে ছাড় হয়ে পৌরসভার ফান্ডে জমা হয়েছে। কিন্তু দেড় মাস যাবত টাকাটা ফান্ডে থাকলেও ঠিকাদাররা টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। মেয়র, কাউন্সিলর ও নির্বাহীর দ্বন্দ্বের কারনে টাকাটা ছাড় করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদারগন। মেয়র সাহেবের কাছে গেলে তিনি বলেন, নির্বাহীর সাথে যোগাযোগ করতে, আর নির্বাহী বলছেন, একাউন্টটেন্ডের সাথে যোগাযোগ করুন। একাউন্টটেন্ড বলছেন কাউন্সিলরদের সাথে সমঝোতা করতে। এভাবেই তাল বাহানা করে দিনের পর দিন হয়রানি করা হচ্ছে ঠিকাদারদের। আব্দুস সাত্তার নামের একজন ঠিকাদার বলেন, ব্যাংক থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পৌরসভার কাজ করেছি। প্রায় ২ বছর ধরে টাকা না পেয়ে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি। দিন দিন ব্যাংকের সুদ বেড়ে যাচ্ছে। নিজেরাও শূন্য হাতে সংসার পরিচালনা করতে পারছি না। ঠিকাদার আলতাফ হোসেন, আব্দুস সালাম, সুমুনুর রহমানসহ ১৪ জনই একই সুরে অভিযোগ করে বলেন, ফান্ডে এককোটি টাকা থাকার পরও ত্রিমুখি দ্বন্দ্বের কারনে দিশেহারা পড়েছি। আমাদের বিল দেওয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে বিল পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। এবিষয়ে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, প্রকৌশলী, সচিব এবং একাউন্টটেন্ড কে দ্রুত টাকাগুলো ঠিকাদারদের মধ্যে বন্টন করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। এছাড়া প্রায় ১ মাস পূর্বেই আমি বিধিমোতাবেক বন্টনের জন্য ফাইলে লিখেও দিয়েছি। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তবে খুব দ্রুত তাদের মধ্যে ওই টাকা ভাগ করে দেওয়া হবে। সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী নাজিম উদ্দীন বলেন, আমার কাছে ফাইল আসা মাত্রই আমি ছেড়ে দেই। কিন্তু ফাইল না আসলে কিভাবে ছাড়বো। পৌরসভার সচিব মীর লিয়াকত আলী বলেন, কোন ঠিকাদার কত টাকা নিবেন এই সিদ্ধান্ত ঠিকাদাররা নিজেরাই নিতে পারছেন না। যে কারণে তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে সম্প্রতি সাতক্ষীরা পৌর মেয়র এবং প্রধান নির্বাহীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। এনিয়ে সাতক্ষীরা পৌরবাসীর মধ্যে চরম উদ্বেগ লক্ষ করা যাচ্ছে। নির্বাহীর সাথে যোগ দিয়েছেন পৌর কাউন্সিলগন।