ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরার সাবেক এসপি আলতাফ হোসেনকে চাকুরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। গত ১৮ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ শৃঙ্খলা বিভাগ-১ এর ৪৪.০০.০০০০.০৫৭.২৭.০০৪.১৯.৭৭ নং স্মারকে সিনিয়র সচিব মো: আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আলতাফ হোসেন, পিপিএম (বিপি নং-৭২০১০০৮১৯০) বর্তমানে সিলেট রিজিয়ন এর ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত। তিনি সাতক্ষীরার পুলিশ হিসেবে কর্মরত থাকাকালে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানা এলাকায় পুলিশ কর্তৃক স্বর্ণ চোরাকারবারী জনৈক বিপ্লব চ্যাটার্জির নিকটে থাকা ১২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধারপূর্বক, পাটকেলঘাটা থানায় উদ্ধারকৃত স্বর্ণের জব্দ তালিকা তৈরি হওয়ার বিষয়টি পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন-কে অবহিত করা হয়। কিন্তু উক্ত ঘটনায় থানায় স্বর্ণ চোরাচালানের মামলা রেকর্ড না হয়ে মাদক মামলার রেকর্ড করা হয়। স্বর্ণ উদ্ধারের ঘটনাটি মাদক উদ্ধারের ঘটনায় সাজানোর বিষয়টি জানা সত্ত্বেও দায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়া এবং এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অসত্য প্রতিবেদন প্রেরণের উত্থাপিত অভিযোগের অনুসন্ধান প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র এ বিভাগে প্রেরণ পূর্বক তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ অধিদপ্তর, ঢাকা হতে গত ০৪ মার্চ, ২০১৯ তারিখের ৬৯ নম্বর স্মারকে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। তদপ্রেক্ষিতে গত ০৯ জুলাই, ২০১৯ তারিখের ৩১ নম্বর স্মারকে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা নম্বর ০১/২০১৯ রুজুকরণসহ অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী প্রেরণ করা হয়। অতঃপর অভিযুক্ত কর্মকর্তা গত ০৪ আগস্ট, ২০১৯ তারিখে ব্যক্তিগত শুনানীতে অংশগ্রহণের ইচ্ছা পোষণপূর্বক অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণীর জবাব প্রদান করেন এবং গত ২১শে অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ ব্যক্তিগত শুনানীতে উপস্থিত হন।
সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ, পুলিশ অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত তথ্যাদি এবং শুনানীতে অংশগ্রহণকালে তার বক্তব্য ইত্যাদি পর্যালোচনায় অভিযোগটি তদন্ত হওয়া সমীচীন মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় গত ২৫ জুন, ২০২০ তারিখের ১৪ নম্বর স্মারকে অতিরিক্ত ডিআইডি মোঃ আতাউল কিবরিয়া (বিপি-৬৮৯৮০২৭৯৯), বিভাগীয় মামলাটি তদন্তপূর্বক মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা জনাব মোঃ আতাউল কিবরিয়া গত ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ তারিখে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিররুদ্ধ আনীত অভিযোগসমূহ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গত ০৩ নভেম্বর, ২০২০ তারিখের ৩৯ নম্বর স্মারকে ২য় কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। তদপ্রেক্ষিতে গত ০৫ জানুয়ারী, ২০২১ তারিখের ১৬ নম্বর স্মারকে তিনি ২য় কারণ দর্শানোর জবাব প্রদান করেন। কিন্তু আলতাফ হোসেন, কর্তৃক ০৫ জানুয়ারী, ২০২১ তারিখের ১৬ নম্বর স্মারকে দাখিলকৃত দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৪(৩) (গ) বিধিমোতাবেক গুরুদন্ড হিসেবে তাকে “চাকরি হইতে অপসারণ”-এর সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক প্রস্ত—াবিত গুরুদন্ড আরোপের বিষয়ে The Bangladesh public Service Commission (Consultation) Regulations, , ১৯৭৯ এর ৬ নং রেগুলেশন মোতাবেক গত ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ তারিখের ২৬ নম্বর স্মারকে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। কমিশন আলতাফ হোসেন কে সরকারি চাকরি হইতে অপসারণ”-এর সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণপূর্বক গত ০৪ এপ্রিল, ২০২২ তারিখের ২২ নম্বর স্মারকে পত্র প্রেরণ করে।
আলতাফ হোসেন, এর বিরুদ্ধে রুজুকৃত এ বিভাগীয় মামলায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি মোতাবেক ‘অসদাচারণ’-এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন প্রস্তাবিত দন্ডের সাথে একমত পোষণ করায় একই বিধিমালার ৪(৩)(গ) বিধিমতে গুরুদন্ড হিসেবে তাকে “চাকরি হইতে অপসারণ”-এর বিষয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি আপন করেন।
এমতাবস্থায় আলতাফ হোসেন এর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী আনীত “অসদাচরণ (Misconduct)” এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় একই বিধিমালার ৪(৩)(গ) বিধি মোতাবেক গুরুদন্ড হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে তাকে “চাকরি হইতে অপসারণ করা হলো।