জাতীয়

ঢাকায় গণপরিবহনে ৪৭ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির শিকার

By Daily Satkhira

June 03, 2022

অনলাইন ডেস্ক: ৪৭ শতাংশ নারী কোনো না কোনোভাবে যৌন হয়রানির শিকার হন বলে এক জরিপে উঠে এসেছে। ‘ঢাকা শহরে গণপরিবহনে হয়রানি : কিশোরী এবং তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব’ শিরোনামে জরিপটি পরিচালনা করেছে আঁচল ফাউন্ডেশন।

শুক্রবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনের তথ্য উপস্থাপন করেন আঁচল ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য ফারজানা আক্তার।

জরিপে রাজধানীর গণপরিবহনে বাস, ট্রেন, লেগুনা, রাইড শেয়ারিং ইত্যাদিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আজিমপুর, মিরপুর, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, বারিধারাসহ বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবী নারী ও কিছুসংখ্যক গৃহবধূর ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়।

জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, গণপরিবহনে চলাচল করা কিশোরী, তরুণী ও নারীদের ৬৩ শতাংশ নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন। এর মধ্যে প্রায় ৪৭ শতাংশ যৌন হয়রানির শিকার হন। যৌন হয়রানির শিকার এ নারীদের ৪৫ শতাংশ পরবর্তী সময় মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

যৌন হয়রানির মধ্যে রয়েছে, গণপরিবহনে ওঠা-নামার সময় চালকের সহকারীর অযাচিত স্পর্শ, বাসে জায়গা থাকার পরও যাত্রীদের গা ঘেঁষে দাঁড়ানো, বাজেভাবে স্পর্শ করা, ধাক্কা দেওয়া, বাজে মন্তব্য। জরিপে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ নারী ঝামেলা এড়াতে এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেননি বলে জানান।

যৌন নিপীড়নকারী ব্যক্তিদের মধ্যে যাত্রীর সংখ্যাই বেশি। গণপরিবহনের চালক ও চালকের সহকারীর হাতেও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন অনেকে। নিপীড়নকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা বেশি।

জরিপে ১৩ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৮০৫ নারী অংশ নেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থী ৮৬ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যৌন হয়রানির পাশাপাশি ১৫ শতাংশ বুলিং, ১৫ শতাংশ সামাজিক বৈষম্য, ১৫ শতাংশ লিঙ্গবৈষম্য ও ৮ শতাংশ শারীরিক গঠন নিয়ে হয়রানির শিকার হন।

কারা যৌন নিপীড়ন করেছেন- জানতে চাইলে জরিপে অংশ নেওয়া ৭৫ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, তারা অন্য যাত্রীদের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছেন। ২০ শতাংশ চালকের সহকারী, ৩ শতাংশ হকার এবং ২ শতাংশ চালকের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছেন ।

অনুষ্ঠানে গণপরিবহনে হয়রানি প্রতিরোধে ১০ দফা প্রস্তাব করেছে আঁচল ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে রয়েছে পরিবহনে আসনের বেশি যাত্রী না তোলা, গণপরিবহনের ভেতর ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন, গণপরিবহনের সংখ্যা বাড়ানো, নারীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করা, বাসের চালক, তত্ত্বাবধায়ক ও সহকারীর পরিচয় উল্লেখ করে নেমপ্লেট বাধ্যতামূলক করা, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম নেওয়া ইত্যাদি।