নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির বিরুদ্ধে এবার নিয়ম ভঙ্গ করে পৌরসভার ঠিকাদারি কাজে অংশগ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শহরের কাছারীপাড়া এলাকার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে ঠিকাদার এম.এম মজনু।
তবে, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তিনি মেয়র পদ হারাবেন বলেই হয়তো ঠিকাদারি কাজে অংশগ্রহণ করেছেন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। ঠিকাদার এম.এম মজনু তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ পৌরসভার জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রতিষ্ঠানিকরণ প্রকল্পের সাড়ে চার কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
যেটি সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬৩৭৫৯৮০ নাম্বারের সি.আর.আই.এম/এস.এ.টি পি.ও.ইউ /ডাব্লুউ. এস- ০১ প্যাকেজের কাজ। তিনি তার অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি মের্সাস সাজেদা ও কোম্পানি এর মাধ্যমে এবারও টেন্ডারে অংশ গ্রহন করেছেন। এর আগে তিনি মের্সাস সাজেদা ও কোম্পানি এর মাধ্যমে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল ব্যাংক এর সাতক্ষীরা শাখার মের্সাস তাজকিন আহমেদ নামীয় হিসাব নং-০০২৮১১১০০৪৮৭৬ থেকে ০৬৮৮২৫৩ ও ০৬৮৮২৫০ পে-অর্ডার এর মাধ্যমে টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করেন। যে বিষয়ে মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মচারী বলেন, মেয়র মহোদয় একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার তিনি পৌরসভার সকল লাভজনক কাজ নিজে করে থাকেন। ইতিপূর্বে তিনি পৌরসভার সম্প্রসারণ এর কাজ অন্য ঠিকাদারের কাছ থেকে জোরপূর্বক ক্রয় করে তিনি তা নিজে বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি এবি ব্যাংক এর সাতক্ষীরা শাখার ৬১৯৭৮৮৩ চেক এর মাধ্যমে মোঃ তাজকিন আহমেদ নামীয় ৪২১২২৭৪১৪৪৩০০ নং থেকে ৪ (চার) লক্ষ টাকা ঠিকাদার খোকাকে প্রদান করে উক্ত পৌরসভা ভবণ সম্প্রসারণ করার কাজ ক্রয় করে নেন । স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, পৌরসভা আইন অনুযায়ী মন্ত্রণালয় যদি কোন ব্যবস্থা নেন তাহলে মেয়র পদে তিনি আর থাকতে পারবেন না। এছাড়া তিনি তার নির্বাচনী হলফনামায়ও মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এব্যাপারে কেউ নির্বাচন কমিশনে চ্যালেঞ্জ করলে মেয়রের মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা হবে। এ ব্যাপারে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামন বলেন, স্থানীয় সরকার পৌরসভা আইন-২০০৯ অনুসারে পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলররা ঠিকাদারি কাজে অংশ গ্রহন করতে পারবেন না। সাতক্ষীরা পৌর সভার মেয়র যেটি করেছেন, অন্যায়ভাবে করেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। নতুন করে যদি আবার ঠিকাদারি কাজে অংশগ্রহণ করে থাকেন তাহলে সেটাও ক্ষমতার অপব্যবহার। একারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবেন বলে তিনি আরো জানান। তবে, এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতির মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে তিনি তার ফোনটি রিসিভ করেন নি। উল্লেখ্য ঃ এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মেয়রের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা পৌরসভার ১১জন কাউন্সিলর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে তার প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন। এরপর গত (২৭ এপ্রিল) মেয়রের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করেন দুদক। এ সব তদন্তে তার বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঠিকাদার এমএম মজনু।##