নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার সুন্দরবনে প্রবেশের তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়াসহ ৬ দফা দাবিতে মানবন্ধন করেছে জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালীরা। ১৪ জুন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনি ফরেস্ট অফিসের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি আজিবর রহমান।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সন্তানদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিনিধি কল্যাণ ব্যাণার্জি, জেলে পরিবারের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আজিজুর রহমান, জাগো যুব ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ ফারুক হোসেন, সুন্দর প্রেসক্লাবের সহ- সভাপতি আব্দুল হালিম, সাংবাদিক আক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, রবিউল ইসলাম।
বক্তারা বলেন, নদীকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা বলে এবং ইলিশের বেড়ে উঠার সুযোগ করে দিতে তিন মাস জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালীদের সুন্দরবনে প্রবেশের পাশ বন্ধ রাখা হয়। অথচ সুন্দর সাতক্ষীরার রেঞ্জের নদীতে ইলিশ মাছ ধরা পড়ে না। এছাড়া নদীতে বিশ্রাম দেওয়া তো দুরের কথা নিয়মিত কার্গোসহ অন্যান্য যান চলছে নদীতে। মাছ বা কাকড়া ধরা বন্ধ নেই। ফরেস্ট অফিসের কতিপয় কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে কিছু জেলেদের পাশ দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে হাজার হাজার জেলে বাওয়ালীরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়া যে সময় বাংলাদেশের জেলেদের পাশ বন্ধ রাখা হয়েছে সে সময়ে পাশ^বর্তী দেশ ভারতে পাশ দেওয়া হচ্ছে। ফলে সে দেশের জেলেরা আমাদের রেঞ্জের মাছ, মধু, কাকড়া ধরে নিয়ে লাভবান হচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, পাশ বন্ধ থাকলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালীকে ৮৬ কেজি চাউল দেওয়ার কথা থাকলেও সঠিকভাবে তা দেওয়া হয়নি। সাতক্ষীরায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৩১ হাজার। অথচ চাউল পেয়েছে মাত্র ১৯৭৯ জন। এছাড়াও অনিবন্ধিত প্রায় লক্ষাধিক জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালী রয়েছে। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। বক্তারা অবিলম্বে পাশ ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান। জেলেদের ৬দফা দাবিগুলো হচ্ছে- ৩ মাসের পাশ বন্ধ উঠিয়ে নিতে হবে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনের বন বন্ধ রেখে রায় মঙ্গল নদীসহ সকল নদী মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। পাশের রেভিনিউ আগের মতো আনতে হবে। সাতক্ষীরা রেঞ্জে সাগরে মাছ ধরার জন্য ফিসিং বোর্ডের লাইসেন্স দিতে হবে। সুন্দরবনের সকল ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের আর্থিক অনুদান দিতে হবে। মৎস্য বিভাগকে জেলে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে। মানববন্ধন শেষে ৬ দফা দাবিতে ফরেস্ট অফিসারের কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন তারা।