জাতীয়

ডিবি পরিচয়ে তুলে এনে যুবদল নেতাকে হত্যার চেষ্টা

By Daily Satkhira

June 11, 2017

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চাঞ্চল্যকর বিএনপি নেতা ফজল মেম্বারসহ ৩ হত্যা মামলার আসামী যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম অস্থায়ী জামিনে এসে এলাকায় বিএনপি সমর্থিত পরিবারের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়াগেছে। আতঙ্কিত পরিবার গুলো ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। শুক্রবার রাতে ডিবি পরিচয়ে নিহত ফজল মেম্বারের ছোট ভাই যুবদল নেতা সাখায়াত হোসেনকে ঢাকার গাজীপুরের আশুলিয়া ভাড়াটিয়া বাসায় সেহরী খাবার সময় দু’জন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরন করে। জামগড় থেকে তুলে এনে সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের পশ্চিম নলসন্ধা গ্রামে ভাড়া করা নৌকায় ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা করে বলে জানাগেছে।

পুলিশ, স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালে ৪ নভেম্বর উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের পশ্চিম নলসন্ধা গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক (ফজল মেম্বার), বিএনপি কর্মী কোরবান আলী ও নৌকার মাঝি ইউসুফ আলীকে বাড়ী ফেরার পথে অপহরণ করে একই গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাই, নুরুল ইসলাম ও নুরনবীসহ একদল প্রতিপক্ষ। অনেক খুজাঁখুজির পর পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভূয়াপুর যমুনা নদীর দুর্গম এলাকা থেকে ফজল মেম্বার ও ইউসুফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ৪ বছরেও বিএনপি কর্মী কোরবান আলী বা তার লাশ উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় ফজল মেম্বারের স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ কোন আসামী না ধরতে পারায় এলাকাবাসীর সহায়তায় র‌্যাব নুরুল ইসলামকে আটক করে। সেই মামলায় গত মাসে হাইকোর্ট থেকে ৬ মাসের অস্থায়ী জামিনে এসে নুরুল ইসলাম বিএনপি সমর্থকদের উপর নির্যাতন শুরু করে। গত ২৯ শে মে তারা বিএনপি সমর্থক বিল্লাল উদ্দিন ও শফিকুল ইসলামকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। লুটে নেয় নূরল ম্যাম্বারের ভাতিজা আঃ আলীম ও মোগলার ২৯ মন ধান।

গুরুতর আহত সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমাকে গাজীপুরের আশুলিয়া ভাড়াটিয়া বাসা থেকে শুক্রবার রাতে সেহরী খাবার সময় হত্যা মামলার আসামী আব্দুল হাই, ফরিদ, রতন, হালিম, নূর নবী, নুরুল ইসলাম, জোরন সহ আরো দু’জন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাসায় ডুকে আমাকে অপহরন করে প্রথমে গোপলপুরের হ্যাম নগর নিয়ে যায়। অপহরনকারীরা পরিকল্পনা মাফিক আমাকে যমুনা নদীতে নিয়ে একটি ভাড়া নৌকায় তুলে নদীর মাঝখানে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে পঙ্গু করে দেয়। আমি মারা গেছি ভেবে তারা আমাকে নৌকায় ফেলে রেখে পুলিশকে ফোন দিয়ে চলে যায়। শনিবার সকালে আমাকে তারাকান্দি তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ রক্তাক্ত এবং প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ ফাড়িতে নিয়ে আসে। পুলিশ ফাড়ীতে এনে টাকা দাবী করে এবং এক পর্যায়ে আমাকে লাথিও মারে বলে তিনি অভিযোগ করেন। গুরুত্বর আহত সাখায়াত হোসেনকে উদ্ধার করে প্রথমে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনিত হলে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।

তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এস আই রুস্তম আলী জানান, সাখাওয়াত হোসেন একজন ওয়ারেন্টেভুক্ত আসামী। ফোন পেয়ে তাকে পিংনা নৌ ঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কে বা কাহারা তাকে নির্মম ভাবে মেরেছে তাহা জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে অফিসার ইনর্চাজ রেজাউল ইসলাম খান বলেন, সাখায়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ডাকাতী ও নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলা রয়েছে। প্রতিপক্ষরা তাকে ধরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।