জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের জিম টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরান আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সহযোগী শামীম মিয়াকেও আটক করেছে র্যাব। গত ১০ জুন রূপগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রবিবার (১১ জুন) র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান এ তথ্য জানিয়েছেন। র্যাব জানায়, ইমরান বর্তমানে নব্য জেএমবির কেন্দ্রীয় দাওয়াত কমিটির শুরা সদস্য। ঢাকার গুলশান, বনানী ও মিরপুর এলাকার দাওয়াতী শাখার আমির হিসেবে কাজ করছে সে। এছাড়া আরও ১০টি জেলার দাওয়াতী কার্যক্রম সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ হয় তার মাধ্যমে। ইমরান কৌশলে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিদের অর্থায়ন করে আসছে। তবে তার কারখানার আর কেউ জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত আছে কিনা তা জানাতে পারেননি র্যাব সদস্যরা। র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান জানান, ইমরান আহমেদ আর্থিকভাবে খুব সচ্ছল। বিভিন্ন অভিযানে নিহত ও আটক জঙ্গিদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা আটকের পর স্বীকার করেছে সে। আটক জঙ্গি আব্দুল হাকিমের জামিনের জন্য তার স্ত্রীকে দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে ইমরান। এর বাইরে জেএমবি সদস্যদের অস্ত্র ও বিস্ফোরক কেনার জন্য বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। ইমরানের বাসা, কারখানা ও অফিস থেকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধকরণের প্রচুর বই উদ্ধার করা হয়। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে এসব বই সংগ্রহ করে কাজে লাগিয়েছে ইমরান। বিশ্বের ৩০টির বেশি দেশে ভ্রমণ করেছে সে। র্যাব জানায়, ২০১২ সালে এক বন্ধুর মাধ্যমে জসিম উদ্দিন রাহমানির সঙ্গে পরিচয় ও সখ্য গড়ে ওঠে ইমরান আহমেদের। জসিম উদ্দিন গ্রেফতার হওয়ার পর সে আব্দুল হাকিমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে। এ সময় তারা ব্যবসায়িকভাবেও সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়ে। গত বছর আব্দুল হাকিমকেও গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর নন্দীপাড়া মসজিদের খতিব শায়খ আরিফের সঙ্গে সখ্য হয় ইমরানের। তার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পরই ইমরান রিক্রুটমেন্টের দিকে আসে। কেন্দ্রীয় দাওয়াত বিষয়ক শুরা বোর্ডের আমির হিসেবে আছে আরিফ। ইমরান আহমেদের বাসায় বিভিন্ন সময় জেএমবির উচ্চপর্যায়ের নেতা ও সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছিল বলে জানা গেছে। মূলত তার বাসা সেফ হাউজ হিসেবে ব্যবহার করতো বলে জানান র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান। সম্প্রতি সিলেটের আতিয়া মহলে অভিযানের পূর্বে সেখানে অবস্থান করছিল নব্য জেএমবির সমন্বয়ক ও সামরিক শাখার প্রধান সাজিদ। কিন্তু অভিযানের আগেই সে আতিয়া মহল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এরপর ঢাকায় এসে মহাখালীতে ইমরানের বাসায় আশ্রয় নিয়ে চার-পাঁচদিন অবস্থান করে। পরবর্তীতে ঢাকায় যেসব জেএমবি সদস্য অবস্থান করছিল তাদের নিয়ে নাশকতার পরিকল্পনা সাজানোর জন্য একাধিকবার সভা করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে এটা আর বাস্তবায়ন হয়নি। র্যাব জানায়, নব্য জেএমবির সমন্বয়ক সাজিদ গত ২৬ মে থেকে জঙ্গিদের ব্যবহৃত অ্যাপসে সক্রিয় (অ্যাক্টিভ) নেই। তার অবস্থান এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যদিও বিভিন্ন বোর্ডের সেসব প্রধান রয়েছে তাদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে মনে করে র্যাব।