দেবহাটা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তবর্তী শাখরা-কোমরপুর সংযোগ আয়রন ব্রীজ এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজটি পার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। দ্রুত সংস্কার করা না হলে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ভূক্তভোগীরা দ্রুত ব্রীজ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, কুলিয়া, পারুলিয়া, লাবণ্যবতী খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি দুটি উপজেলার সাথে মিশে গেছে। তৎকালিন সময় নৌকায় পার হতেন দুপাড়ের মানুষ। মানুষের এই দূর্ভোগ কমাতে ১৯৯১ সালে খালের উপর আওয়ামী লীগ দলীয় সরকার ক্ষমতাকালিন তৎকালিন যোগাযোগ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু চলাচলের সুবিধার্থে দুই উপজেলার সংযোগ সৃষ্টির লক্ষে ব্রীজটি নির্মান পরবর্তী উদ্বোধন করেন।
ব্রীজটি ভোমরা স্থলবন্দর টু কালিগঞ্জ বাইপাস সড়ক হিসাবে ব্যবহার হয়। দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় ব্রীজের কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে বসেছে। কিন্তু কয়েক যুগ পার হওয়ায় বর্তমানে ব্রিজটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে যোগ হয়েছে চরম ভোগান্তি। ৫০ টি পাতের ব্রিজের প্রায় ৩০টি নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ভেঙ্গে ব্রিজের নিচের পানি ও মাটি দেখা যাচ্ছে। টিনের পাত ভেঙে নষ্ট হওয়ায় যানবহনের চাকা আটকে ছোট-বড় দূর্ঘটনা লেগেই আছে প্রতিনিয়ত।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, এই ব্রীজটি দিয়ে শাঁখরা বাজার, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদ, শাঁখরা-কোমরপুর এজি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শাঁখরা-কোমরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভোমরা ইউনিয়ন দাখিল মাদ্রাসা, পোষ্ট অফিসসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে দৈন্দিনিক চলাচল করতে হয়। এছাড়া ভোমরাস্থল বন্দরের বিভিন্ন পণ্য আনা নেওয়া করা হয় ব্রীজটি দিয়ে। বর্তমানে ব্রীজটি নড়বড়ে ও একাধীক স্থানে ভেঙে যাওয়ায় ব্রীজ দিয়ে সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে পথচারী শহিদুল ইসলাম বলেন, ব্রিজটি দীর্ঘ দিন ধরে নষ্ট হলেও দেখার কেউ নেই। ভোমরা বন্দরের মত ব্যস্ততম সড়কের সাথে মিলিত হওয়া ব্রিজটি যদি চলাচল বন্ধ হয় তাহলে হাজারও মানুষের দূর্ভোগের শেষ থাকবে না। বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে বাড়তি খরচ যোগ হবে। স্থানীয় বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস জানান, ব্রীজটির টিনের পাত নষ্ট হওয়ায় চলাচলের ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। আমরা খুব ভয়ে ব্রীজ পার হচ্ছি। জানি না কবে এই সমস্যার সমাধন হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল আলিম জানান, শাখরা-কোমরপুর ব্রীজটি সংস্কার খুবই জরুরী। এই ব্রীজ দিয়ে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে। কিন্তু ব্রীজটি সংস্কার না হওয়ায় সর্বস্থরের মানুষের খুবই কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। আমরা দাবি করছি যাতে দ্রæত সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ দ্রুত সমস্যা সমাধান করেন। সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আল-ফেরদাউস আলফা জানান, নির্মানের দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় ব্রিজটির আয়ূকাল শেষ হয়েছে। যার ফলে ভেঙে যাচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ২০২১ সালের ৪ জানুয়ারী সন্ধ্যায় মুজিব বর্ষের উপহার গৃহহীনদের ঘর উপহার কর্মসূচি পরদর্শনে এসে ব্রীজটির করুণ দশা পরিদর্শন করেন সাবেক জেলা প্রশাসক এস,এম মোস্তফা কামাল। তিনি সংস্কারের আশ্বাস দিলেও কোন উদ্যোগ দেখা মেলেনি। এদিকে ব্রীজটিতে পুরোপুরি চলাচল বন্ধ হওয়ার আগে সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।