সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে ঘিঞ্জি জীবন ; যেন বস্তির চোরা গলি

By Daily Satkhira

June 12, 2017

মোসলেম আহমেদ/আজহারুল ইসলাম/সোহেল পারভেজ : সাতক্ষীরা শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্রে নাগরিক জীবন এত দুর্দশার হতে পারে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। রাস্তাটির অতি নিকটে ডিসি অফিস ও জজ কোর্ট। কিন্তু রাস্তাটি দেখলে যে কারও মনে হতে পারে এ যেন শহরতরির কোন বস্তির চোরা গলি। কথা হচ্ছে সাতক্ষীরা পৌরসভার শহিদ কাজল সরণির পলাশপোল নিকারি পাড়া মোড় থেকে নবজীবনের দিকে যেতে বিশিষ্ট বীজ ব্যবসায়ী মেছের আলীর বাড়ি পর্যন্ত সড়ক সংলগ্ন এলাকাটি নিয়ে। পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে এই এলাকার জনজীবনে প্রথম শ্রেণির পৌরসভার নাগরিক সুবিধা যেন সোনার হরিণ। রাস্তাটির দু’পাশের প্রায় শতাধিক পরিবারকে বছরের পর বছর বাস করতে হচ্ছে চরম নোংরা পরিবেশে। অথচ জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্রের এই সড়কটি দিয়ে সহজেই শত শত মানুষ প্রতিদিন ডিসি অফিস, জজ কোর্ট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যাতায়াত করতে পারে। রাস্তাটির দুপাশের ড্রেন থেকে উপছে পড়া নোংরা পানিতে এলাকার পরিবেশ যেমন দূষিত হয়ে থাকে তেমনি রাস্তায় পানি জমে বিটুমিন উঠে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য থাকে প্রায় সারাবছর। আর বর্ষা মৌসুমেতো এলাকাবাসীর দুর্দশার কোন শেষ থাকে না। যেমন এখন নেই। পথচারীরা তবুও একটু ঘুরে বিকল্প পথে যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু স্থানীয়দের দুর্গতির অন্ত নেই। প্রতিদিন এই ড্রেনের নোংরা পানি উপছে পড়া পথ দিয়ে শিশুদের স্কুলে যেতে হয়। ভ্যান-রিক্সা এপথ দিয়ে যেতেই চায় না। তাই মানুষকে বাড়তি ভোগান্তিও পোহাতে হয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, “সাংবাদিকসহ বিভিন্ন লোকজন ছবি তুলে নিয়ে যায়, কিন্তু আমাদের দুর্দশা লাঘবে কোন কার্যকর ব্যবস্থা পৌর কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করছেই না। আমাদের দুরাবস্থারও কোন পরিবর্তন হচ্ছে না।” এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিসমিল্লাহ হ্যাচারির স্বত্বাধিকারী সাতক্ষীরা জেলা শিল্প ও বণিক সমিতি’র পরিচালক আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম বলেন, “অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্তার কারণে এই জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এখানে ড্রেন নির্মাণ করা হয় আনুমানিক ১৯৯৮ সালে এবং রাস্তা সংস্কার করা হয় ২০০৯ সালে। কিন্তু ড্রেনটি একেবারেই অপরিকল্পিতভাবে করা হয়। ড্রেনটি যদি ভালোভাবে লেভেলিং করা হয়Ñ অর্থাৎ টপ টু বটম ১.৫ ফুট উঁচু করা হয় তাহলে হয়ত সমাধান হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভার সংশ্লিষ্ঠ ৮নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর মোঃ শফিকুল আলম বাবু গত রবিবার বলেন, “তিন থেকে চার দিনের মধ্যে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।” অন্যদিকে, সাতক্ষীরা পৌর সভার মেয়র আলহাজ্ব তাজকিন আহমেদ চিশতির সাথে তার কার্যালয়ে এই প্রতিবেদকদের কথা হয়। তিনি বলেন, “আমি নিজে এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। কিন্তু কোন সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না। কারণ পানি বের করবার কোন কার্যকর পথ খুঁজে পায়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমিও কিছুটা অনিশ্চিত।” তিনি আরও যোগ করেন, “কয়েকদিন আগে গণপূর্ত বিভাগের একজন প্রৌকশলীকেও সেখানে পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি আমার মাথায় আছে। সমাধানের একটা পথ নিশ্চয়ই বের করতে পারব।”

মোসলেম আহমেদ/আজহারুল ইসলাম/সোহেল পারভেজ : ডেইলি সাতক্ষীরা’র মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান ইন্টার্নশিপ কর্মসূচির ইন্টার্ন ও সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।