নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার আশাশুনির প্রতাপনগরে দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করতে একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন, চাকলা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী শাহানাজ পারভীন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রতাপনগরের তেলেখালী মৌজায় ১০ একর ১৫ শতক সম্পত্তির রেকর্ডীয় মালিক যথাক্রমে কালু, পুটি, ইসমাইল ও সোনাই। প্রত্যেকের সেখানে ২ একর ৫৩.৭৫ শতক সম্পত্তি রয়েছে। চার জনের মধ্যে কালুর ওয়ারেশ মোনতাজ গংয়ের কাছ থেকে ২৫ মে ২০১৬ তারিখে ৪৮ শতক, ০৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে কালুর ওয়ারেশ এলাহী বক্স গংয়ের কাছ থেকে ৬.৭৫ শতক, আদিলদ্দী ও ফতেমা গংয়ের কাছ থেকে গত ১৬ জুন ২০১৯ তারিখে ৭ শতক সম্পত্তি, মোকছেদ গংয়ের কাছ থেকে ৪.২৫ শতক সম্পত্তিসহ মোট ৬৬ শতক সম্পত্তি ক্রয় করি।
এছাড়া বায়না সূত্রে আরো ১১ শতক সম্পত্তিসহ মোট ৭৭ শতক সম্পত্তি ক্রয়ের পর জমির মালিকগণের কাছ থেকে সীমানা নির্ধারণ পূর্বক শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি পূর্বের রেকর্ডীয় সোনাইয়ের ওয়ারেশগণ উক্ত সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের ষড়যন্ত্র শুরু করে। অথচ তারা কালুর শরিক নন। কালুর ওয়ারেশগনের কোন সম্পত্তি ভাগ কখনোই তারা পাবে না। শুধুমাত্র গায়ের জোরে ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনীর সহযোগিতায় আমাদের ক্রয়কৃত সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের পায়তারা শুরু করে। এমনকি জীবিকার তাগিদে আমরা বাইরে ছিলাম। সে সময় আমার কন্যা তার স্বামীকে নিয়ে সেখানে বসবাস করে আসছিল। আমরা বাইরে থাকার সুযোগে আকবর আলী, আজগর আলী জোয়াদ্দার, আব্দুল গফফার জোয়াদ্দার, কওছার আলী, ইয়াহিয়া জোয়াদ্দার, ছাব্বির, শিল্পী খাতুন, জাহানারা খাতুন, ফাতেমা খাতুন, কোহিনুর খাতুন ও ইয়াছিনগং বিগত ১১ মে ২০২০ তারিখে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের সম্পত্তিতে নির্মিত ঘরভাংচুর করে জোরপূর্বক দখল করে সেখানে তারা একটি পাকা ঘর নির্মান করে। এনিয়ে আমার স্বামী আনোয়ার হোসেন ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়ের করে। বিষয়টি মিমাংসার সর্বশেষ নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে গত ২২ জুন ২০২২ তারিখে ইউপি সদস্য, সরকারি ভূমি জরিপকারী সেখানে উপস্থিত হয়ে মাপজরিপ করে সীমানা নির্ধারন পূর্বক সমাধান করে দেন। সে সময় তারা বিষয়টি মেনে নিলেও গত ২৩ জুলাই ২০২২ তারিখে তারা ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে আমাদের ঘরে আগুন দিয়ে ঘর দখল করে নেয়। আমাদের হয়রানি করতে আকবর আলী জোয়াদ্দার পরিকল্পিত নাটক সাজিয়ে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলা দায়েরের জন্য তারা নিজেরা নিজেদের মাথা কেটে হাসপাতাল থেকে একটি ইনজুরির সনদপত্র গ্রহণ করে। উক্ত মামলায় আদালত আশাশুনি থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গন্য করতে নির্দেশ দেন। এঘটনায় পুলিশ আমার স্বামীকে আটক করে কারাগারে পাঠাই। অথচ মামলার এজাহারে যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, সে তারিখে সেখানে কোন ধরনের মারপিটের ঘটনাই ঘটেনি। স্বামীকে কারাগারে পাঠিয়ে সম্পত্তি দখল নেওয়ার জন্যই এ মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এছাড়া উক্ত সম্পত্তি নিয়ে আমরা আদালতে ১৪৫ ধারা জারি করলেও আকবরগং আদালতের সে নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে গত ২৩ জুলই ২০২২ তারিখ রাত ২টার দিকে সেখানে থাকা আমার ঘরে আগুন দেয় এবং ঘরে থাকা মালামাল লুটপাট করে দখল করে নেয়। এ ঘটনায় পরদিন সকালে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা আমার মামলাটি গ্রহণ করেনি। এরপর গত ২৪ জুলাই ২০২২ তারিখে পুলিশ নিষেধাজ্ঞার নোটিশ নিয়ে আমাদের বাড়িতে যান। অথচ আকবর গং সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের ঘরে আগুন দিয়েছি মর্মে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে।
আমি উক্ত মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় ওই মামলাবাজ অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে নিজের সম্পত্তি রক্ষা এবং জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।##