শিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষকের আন্তরিকতাই বদলাতে পারে বাংলাদেশের ভাগ্য

By daily satkhira

September 18, 2022

প্রাথমিক শিক্ষা সকল শিক্ষার মৌলভিত্তি। আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ।‘শিশুর পিতা ঘুমিয়ে আছে সব শিশুরই অন্তরে।’ প্রাথমিক শিক্ষার দায়বদ্ধতা তাই জাতি গঠনে অনেক খানি। আমাদের আর্থ সামাজিক অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষার শিশুদের ভিতর ভিন্নতা অনেক।

কেউ ধনী পরিবার থেকে আসে। কেউ বা আসে গরিব পরিবার থেকে। তাই শিশুদের চাহিদা ভিন্নমুখী হয়। পিতা -মাতা তার সব থেকে প্রিয় বস্তুটিকে শিক্ষকদের হাতে তুলে দিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে, কবে তার ছেলে বড় হয়ে তাদের কোলে ফিরে আসবে। এজন্য জাতি গঠনে, সমাজ গঠনে প্রাথমিক শিক্ষকের দায়িত্ব অনেকখানি। তাদের অবহেলা ও কর্তব্যহীনতায় তিলে তিলে শেষ হতে পারে অনেক শিশু। যে বাবা মা নিজেদের সামান্য রোজগারের সামান্য অংশ তুলে দেয় সন্তানের মানুষ হওয়ার জন্য। আর সেই রক্ত জল করা অর্থে সন্তন মানুষ না হলে হতাশার কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না তাদের। দৈনন্দিন রুটিন অনুযায়ী কোন শিক্ষক যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে কোন শিশুই নিরক্ষর থাকার সম্ভাবনা নাই। শিশু বান্ধব বিদ্যালয় গঠনে সরকার যা দিচ্ছে তা দিয়ে সুন্দর পরিবেশ গড়া অবশ্যই সম্ভব। দরকার শিক্ষকের আন্তরিকতা।

শিক্ষকের আন্তরিকতাই পারে সব শ্রেণি পেশার শিশুদেরকে স ম মর্যাদা দিয়ে মানুষ করে তুলতে। বাংলাদেশের শতকরা ৮০% লোক গ্রামে বাস করে।

অধিকাংশ গ্রামের মানুষ লিখতে পড়তে জানে না। তাদের সন্তানের লেখাপড়ার জন্য তাই তাদেরকে প্রাথমিকের শিক্ষকের স্বরনাপন্ন হতে হয়। যে সমস্ত গ্রামগুলিতে জন মজুরের সংখ্যা বেশি সেই সমস্ত গ্রাম গুলিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের আন্তরিকতা ছাড়া ঐ গ্রাম সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রতি বছর বহু সংখ্যক শিশু প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী শেষ করে ইটভাটাসহ শিশুশ্রমে যুক্ত হয়, যার হিসাব কেউ রাখে না। যার ফলে গ্রাম সমাজে অশিক্ষা পেতে যাচ্ছে। তারা না পারছে শিক্ষায় থাকতে না পারছে কোন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে যুক্ত হতে। অবশেষে তারা বাল্য বিবাহের শিকার হচ্ছে। প্রতিটি প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকের আন্তরিকতাপূর্ণ কর্মকান্ডই বাঁচাতে পারে এসব শিশু। সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য সংরক্ষণ, হোমভিজিট, শ্রেণিতে দুর্বল শিশু সনাক্তকরণসহ তাদের পর্যাপ্ত কিওব্যাক দিলে শিশুদের আত্মবিশ^াস বাড়বে এবং কোন শিশু ঝড়ে পড়বে না। পঞ্চম শ্রেণি পাশে একটা শিশুর যে যোগ্যতা গুলো অর্জিত হওয়া দরকার সেগুলো অর্জিত হলে তারা লেখাপড়ায় যেমন উৎসাহ পাবে তেমনি শিক্ষা থেকে দুরে সরে যাবে না। গ্রাম্য সমাজ হবে সুশিক্ষিত সুন্দর। প্রতিটি গ্রামের শিশুরা উন্নত হলে উন্নত হবে গ্রাম।

লেখক : উত্তম কুমার দাশ প্রধান শিক্ষক, আড়ংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়