হাসান হাদী : গতকাল মহান জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট এর উপর আলোচনা করেন সাতক্ষীরা-০৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আ. লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য প্রফেসর ডা. আ ফ ম রহুল হক। সোমবার সকাল ১১টার পর তিনি জাতীয় সংসদে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বক্তৃতায় তিনি, সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কটি ভোমরার রাস্তার সাথে সংযুক্তকরা, সাতক্ষীরায় একটি অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা, জেলার প্রধান সড়কগুলোর জরুরি সংস্কার, আশাশুনির জলাবদ্ধতা, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ, স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্তকরণ প্রভৃতি দাবি উত্থাপন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শুরু করা বক্তৃতার প্রথমেই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি তিনি বলেন, “আমি আমার নির্বাচনী এলাকা ১০৭-সাতক্ষীরা-৩ এর জনগনকে ধন্যবাদ জানাই। তাঁরা আমাকে এই মহান সংসদে এসে তাঁদের কথা বলার সুযোগ করে দেওয়ায় তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।” সংসদে দেয়া তার বক্তব্যের চুম্বক অংশ ডেইলি সাতক্ষীরা’রর পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো- এলাকার উন্নয়ন বিগত ৮ বছরে বর্তমান সরকারের উন্নয়নে বাংলাদেশের চেহারাই বদলে গেছে। আমি দক্ষিণবঙ্গ তথা সাতক্ষীরার জন প্রতিনিধি। আইলা ও সিডর বিধ্বস্ত এলাকা সাতক্ষীরা। সব সময় যা অবহেলিত ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেখানে সুন্দরবনে বিশ্ব মানের পর্যটন কেন্দ্র, যশোর-সুন্দরবন রেললাইন, ভোমরা স্থলবন্দর, সাতক্ষীরা শহর বাইপাসসহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ব্যবস্থা করে সাতক্ষীরার মানুষকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করেছেন। আমি তাদের পক্ষ হতে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার নির্বাচনী এলাকার দেবহাটা উপজেলা এই অর্থ বছরের মধ্যেই শত ভাগ বিদ্যুায়িত হবে। আশাশুনি, কালিগঞ্জও প্রায় একই অবস্থা। এজন্য আমি বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। মাননীয় স্পীকার, আমার নির্বাচনী এলাকায় বিগত ৮ বছরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বুধহাটা-গাজীরহাট ভায়া বদরতলা ২০ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং, কাঁদাকাটির হলদিয়াপোতা হতে প্রতাপনগর পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং, মরিচচাপ নদীর উপর চাপড়া বেইলি ব্রিজ সংস্কার, শোভনালী ব্রিজ নির্মাণ, বড়দল ব্রিজ নির্মাণ, বাঁশতলা ব্রিজ নির্মাণ, ৪১টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ, প্রচুর গ্রামীন, উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে, পারুলিয়া-শশাডাঙ্গা ৫০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মান, দরগাপুর ও তারালিতে ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ, আশাশুনি ও দেবহাটা কলেজসহ স্কুল-কলেজ সরকারীকরণ ও এমপিওভ’ক্ত করা হয়েছে।প্রচুর মসজিদ-মন্দির সংস্কার ও মেরামত করা হয়েছে। তাছাড়া ১০ কোটি ও ১২.৫০ কোটি ব্যয়ে নাভারন-সাতক্ষীরা ও সাতক্ষীরা সা্ির্কট হাউজ থেকে বাকাল ব্রিজ রাস্তার মেরামত ও সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। উন্নয়ন চলমান প্রক্রিয়া। আশাতিরিক্ত উন্নয়নের পরও কিছু সমস্যা থেকে যায়। আমার এলাকার ঠিক সে রকম কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে চাই। আশাশুনি উপজেলায় জলাবদ্ধতা : মাননীয় স্পীকার আশাশুনি উপজেলায় জলাবদ্ধতা এখন বিশাল আকার ধারণ করেছে। এর কারন জলমহাল ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। জলমহালগুলোর ভিতরে বড় বড় খাল আছে। বর্ষার পানি এসব খালে স্থাপিত শরিগাতী, ঘলঘলে, গাবতলা ও মোকামখালি স্লুইস গেটের মাধ্যমে বর্ষার পানি বেতনা নদীতে নিষ্কাশিত হয়ে থাকে। বিগত জোট সরকারের সময়ে ১০ বছর মেয়াদী ইজারা নিয়ে এসব খাল বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে ক্রস বাধ দিয়ে মাছের চাষ করা হচ্ছে। এজন্য পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় আশাশুনি উপজেলায় জলবদ্ধতা হচ্ছে। তাছাড়া বাঁশদহ ও সাপমরা নদী দুইটি ইছামতির সাথে সংযোগ আছে। তবে পলি জমি নদী ২টির উৎস মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বাঁশদহ ও সাপমরা নদী দুইটি খনন করা হলে আশাশুনির একাংশের জলবদ্ধতা দূর করা সম্ভব। মাননীয় স্পীকার পার্শ্ববর্তী তালা উপজেলায় একই অবস্থা বিরাজ করছে। মাননীয় স্পীকার আমি আপনার মাধ্যমে এ বিষয়ে মাননীয় ভূমি ও পানি সম্পদ মন্ত্রী মহোদয়ের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সড়ক ও সেতু বিভাগ : সাতক্ষীরা-দেবহাটা-কালিগঞ্জ-শ্যামনগর-মুন্সিগঞ্জ, আশাশুনি-শ্যামনগর ভায়া ঘোলাকোলা, সাতক্ষীরা-আশাশুনি রাস্তাগুলো দ্রুত মেরামত করা আবশ্যক। রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। খুলনা-সাতক্ষীরা রোড বহু পুরনো। ভারত-বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বানিজ্যের বিরাট অংশ সাতক্ষীরার ভোমরা বর্ডারের মাধ্যমে হয়ে থাকে যা খুলনা হয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে যায়। ভোমরা স্থল বন্দরের উন্নয়ন চলছে। বর্তমানে এই রাস্তায় প্রতিদিন শত শত ট্রাক চলাচল করে। অচির ভবিষ্যতে এটা আরো বাড়বে। ২ লেনের রাস্তার হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। রাস্তাটি ৪ লেনের করা হলে সড়ক যোগাযোগ আরো উন্নত হবে। সাতক্ষীরা শহর বাইপাশ সড়কটি মেডিকেল কলেজ পার হয়ে ভোমরা বার্ডার চেকপোস্টের সাথে সংযোগ হবার কথা। যখন এ বাইপাশ রাস্তাটি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয় তখন এভাবেই ডিজাইন করার কথা ছিল। কিন্তু আমি কিছুদিন আগে সাতক্ষীরায় গিয়ে দেখলাম বাইপাশ সড়কটি মেডিকেল কলেজের নিকটবর্তী স্থানে গিয়ে ভোমরা বোর্ডার রাস্তার সঙ্গে মিলেছে। ফলে মেডিকেল কলেজটি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এজন্য আমাদের দাবি হলো বাইপাশ সড়কটি ভোমরা বার্ডার চেকপোস্টের সাথে সংযোগ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আশাশুনি উপজেলার মানিকখালি ব্রিজ নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কাজ শুরু হয়নি। কাজটি দ্রুত সম্পাদন করা প্রয়োজন। মানিকখালি ব্রিজ থেকে বড়দল পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করা আশু প্রয়োজন। তাছাড়া আশাশুনি-শ্যামনগর রাস্তার ঘোলাকোলা পয়েন্টে একটা ব্রিজ নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমি আপনার মাধ্যমে মাননীয় সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। স্বাস্থ্য খাত : মাননীয় স্পীকার, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নাই। ফলে শিক্ষার্থীরা সঠিক মানের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ থেকে এবার প্রথম ব্যাচ ইন্টার্নি করছে। মেডিকেল কলেজে জনবল সংকটের কারনে ইন্টার্নির সুযোগ না থাকায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ইন্টার্নি করতে যেতে হয়। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ শহর থেকে একটু দূরে অবস্থিত। ফলে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে। তাইঅতিদ্রুত মেডিকেল কলেজে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করা প্রয়োজন। ১০ শয্যা বিশিষ্ট দরগাপুরও তারালি হাসপাতাল নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে। কিন্তু জনবল নাই। তাই চালু করা যাচ্ছে না। সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য সহকারী প্রশিক্ষণ স্কুল (ম্যাটস) জনবলের অভাবে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। মাননীয় স্পীকার হাসপাতালগুলোতে ডাক্তারদের উপস্থিতিও নিশ্চিত করা দরকার। আমি আপনার মাধ্যমে মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সুপেয় পানির ব্যবস্থা : মাননীয় স্পীকার, সাতক্ষীরা সিডর ও আইলায় বিধ্ব¯ত একটি এলাকা। এ এলাকায় সুপেয় পানির খুব অভাব। লবনাক্ততা ও সুপেয় পানির অভাবে অত্র এলাকার মানুষ পেটের পীড়াসহ নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। মাননীয় স্পীকার খাবার পানির কষ্টের কথা বক্তব্যের মাধ্যমে উপলব্ধি করানোটা কষ্টকর। এক কলস খাবার পানি সংগ্রহের জন্য মানুষকে মাইলের পর মাইল কলসি নিয়ে হাটতে হচ্ছে। এজন্য আমার নির্বাচনী এলাকার দেবহাটা ও আশাশুনিতে ডিপটিউব ওয়েলও পানি শোধনাগার স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমেসুপেয় পানি সরবরাহ করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করা দরকার। এলজিইডি’র রাস্তা সংস্কার ও উন্নয়ন : মাননীয় স্পীকার, আমার নির্বাচনী এলাকার দেবহাটা উপজেলার প্যারাসাইটিং রোডগুলো প্রশস্ত, সখিপুর-ভাতশালা, জলিল হ্যাচারী-কমরপুর, নলতা-আশাশুনি রাস্তার সংস্কার খুবই প্রয়োজন। সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ : মাননীয় স্পীকার, বর্তমান সরকার সাতক্ষীরাতে প্রচুর সাইক্লোন সেন্টার কাম স্কুল নির্মাণ করেছে। তবে আমার নির্বাচনী এলাকার দেবহাটা, আশাশুনি ও কালিগঞ্জে আরো কিছু সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা প্রয়োজন। মাননীয় স্পীকার আমার নির্বাচনী এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা, এলজিইডি’র রাস্তা সংস্কার ও উন্নয়ন, বাজার-ঘাট উন্নয়ন ও আরো কিছু সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি মাননীয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্তকরণ : মাননীয় স্পীকার, আমার এলাকাসহ সারাদেশে প্রচুর স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। ২৬ হাজার রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারীকরণ করা হয়েছে। মাননীয় স্পীকার আরো কিছু স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্ত করা হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। এজন্য আমি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা : মাননীয় স্পীকার, উপকূলীয় জনপদের ১৯টি জেলার মধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। দেশে স্মরণকালের যত প্রাকৃতিক দূর্যোগ হয়েছে তার মধ্যে আইলা, সিডর নদী ভাঙ্গন ইত্যাদি বিপর্যয়গুলো সাতক্ষীরা জেলায় বার বার আঘাত এনেছে। ফলে এ জনপদের (১) বিদ্যমান অবকাঠামো প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং (২) প্রয়োজনের তুলনায় এখন সড়ক, ব্রিজ/কালভার্ট, সাইক্লোন সেন্টার, পোল্ডার, বাঁধ, হাট-বাজার, গ্রোথ সেন্টার, সংযোগ সড়ক, নির্মাণ, গুদাম ঘর এর অভাব রয়েছে। বিপুল সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে সাতক্ষীরা আজ সবার নজরে এসেছে। একানে চিংড়ি সম্পদ, সুন্দরবন, উন্নতমানের সুমিষ্ট আম, বরই, সবজি আজ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। সাতক্ষীরার এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সাতক্ষীরায় একটি অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার ব্যবস্তা গ্রহণের জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেবা খাতে ১৫% ভ্যাট : মাননীয় স্পীকার, ১৯৯১-৯২ সালে তৎকালিন বিএনপি সরকার ভ্যাট প্রথা চালু করেন। তা সময়ের প্রয়োজনে অনেক সংশোধন করা হয়েছে। মাননীয় অর্থমন্ত্রী এবার আরো সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছেন। যেগুলো যৌক্তিক তা রাখার পক্ষে আমি। তবে মাননীয় অর্থ মন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি সেবা খাত যেমন – বিদ্যুত বিলের উপর ১৫% ভ্যাট আরোপ করা হলে বিরুপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। তাই আমার প্রস্তাব বিদ্যুত বিলের মত সেবা খাতের উপর বর্তমানের ৫% ভ্যাট বহাল রাখা হোক।
বেতন স্কেলের অসামঞ্জস্যতা : মাননীয় স্পীকার, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে স্বাধীনতার পর এমন পে-স্কেল দিয়েছে যে সরকারী কর্মচারীরা খুবই খুশী। তবে বেতন স্কেলে কিছু অসামঞ্জস্য রয়েছে যা দূর করা প্রয়োজন। যেমন বেতন স্কেলের ৭ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা ১০ বছর পূর্তিতে ৫ম গ্রেড এবং ১৬ বছর পূর্তিতে ৪র্থ গ্রেড পাবে। এখন দেখা যাচ্ছে ৫ম গ্রেড থেকে উচ্চতর ৪র্থ গ্রেড নিলে কর্মকর্তার বেতন হ্রাস পায়। আবার কোন ক্যাডারে সর্বোচ্চ পদ ৩য় গ্রেড। তাও মাত্র একটি। উপরোক্ত অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ১৬ বছরে একজন কর্মকর্তা ৪র্থ গ্রেড পাবার পর বাকী জীবন অর্থাৎ আরো ১৫-১৬ বছর তার গ্রেড ৪র্থই থাকবে। এতে কর্মকর্তা হতাশ হয়ে যাবেন। সরকার যে এত ভাল পে স্কেল দিলো তা বুমেরাং হয়ে যাবে। এগুলো দূর করা প্রয়োজন। মাননীয়স্পীকার, একটি পেশাজীবি সংগঠনের শীর্ষ পদে দীর্ঘ দিন থাকার কারনে পেশাজীবিরা এসব বিষয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেন। তাই এগুলো মাননীয় অর্থ মন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য উপস্থাপন করলাম। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট : মাননীয় স্পীকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট শুধু সংখ্যাগত দিক থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু আনুপাতিকহারে হ্রাসপাচ্ছে।বিগত ৫ বছরের বাজেট ও প্রকৃত ব্যয়ের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায় আনুপাতিক হারে হ্রাস পাচ্ছে। মাননীয় স্পীকার, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন ও সাফল্য আজ বিশ্বে সমাদৃত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এজন্য অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন। ২০৩০ সালের মধ্যে Sustainable Development Goals (SDGs) বাস্তবায়ন করতে হবে। এই উন্নয়ন ও সাফল্য ধরে রাখা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য খাতের বাজেট বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বাজেট মাননীয় স্পীকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা আমাকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র সভাপতি’র দায়িত্ব প্রদান করেছেন, এজন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতাকে আবারও কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সুযোগ্য মন্ত্রী স্থপতি ও কবি ইয়াফেস ওসমানের নেতৃত্বে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের মত এ মন্ত্রণালয়েও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। আমাদের বহু বছরের স্বপ্ন রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তব। মাননীয় স্পীকার , বর্তমান জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে। ভবিষ্যত প্রজম্মকে বিজ্ঞানমুখী করার জন্য আরো অর্থ প্রয়োজন। বিশেষ ভাবে স্কুল কলেজে বিজ্ঞানচর্চা আরো প্রসারের জন্য এখাতে বাজেট বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তাই আমি আপনার মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মাননীয় অর্থ মন্ত্রীর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।