সাতক্ষীরা

শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভোমরা বন্দরে গমের ভূষির এলসিতে চাল : ১৫০০ বস্তা চাল আটক

By daily satkhira

October 13, 2022

নিজস্ব প্রতিনিধি : অধিক মুনাফা লাভের আশায় কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে গমের ভূষির এলসি খুলে বাসমতি চাল আমদানিকালে বিজিবি ও শুল্ক কর্তৃপক্ষ দুই ট্রাক চাল আটক করেছে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ভোমরা বন্দরের পার্কিং ইয়ার্ডের তিন নং গেট ও বৃহষ্পতিবার সকাল ৯টার দিকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা ভোমরা অফিসের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদরের আলীপুর এলাকা থেকে একটি ট্রাকভর্তি চাল আটক করা হয়েছে। ওই দুই ট্রাকে ১৫০০ বস্তার বেশি চাল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভোমরা বন্দরের প্রশাসনিক শুল্ক কর্মকর্তা দয়াল মন্ডল জানান, আমদানিকারক সংস্থা যশোরের চুকনগরের ভাই ভাই স্টোর্স এর স্বত্বাধিকারি জয়দেব মণ্ডল গমের ভূষির এলসি খোলেন। সিএন্ড এফ এজেন্ট সাব্বির এন্টার প্রাইজের লাইন্সেসে বুধবার বিকেলে ছাড় করায় সিএন্ডএফ হারু ঘোষ। এরমধ্যে ভোমরা বন্দরের পার্কিং ওয়ার্ডের তিন নং গেট থেকে বাসমতি চাল ভর্তি একটি ট্রাক(ঢাকা মেট্রো-ট-২২-৭৭৪৩) আটক করে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া বৃহষ্পতিবার সকাল ৯টার দিকে আলীপুর এলাকা থেকে একটি বাসমতি চাল ভর্তি ট্রাক(ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৫৮২৯) ও ভূষি ভর্তি ট্রাক (যশোর-ট-১১-১৫৭৩) আটক করে বিজিবি। তাদের আটককৃত ট্রাকে মোটা চাল ও বাসমতি চালের শুল্কসহ জরিমানা আদায় করা হবে। প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

এঘটনায় কাস্টমসের কেউ জড়িত আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কাস্টমসে গিয়ে বিস্তারিত তথ্য নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

ভোমরা সিএণ্ডএফ এজেন্ট এ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মকছুদ খান জানান, গমের ভুষির এলসি খুলে বাসমতি ও মোটা চাল ভর্তি একটি ট্রাক বুধবার রাতে বন্দরের পার্কিং ইয়ার্ড থেকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া বিজিবি পার্কিং ইয়ার্ডের বাইরে থেকে একটি চাল ভর্তি ট্রাক ও ভুষি ভর্তি ট্রাক আটক করেছে। ভোমরা বিজিবি’র কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার অহিদুল ইসলাম জানান, শুল্ক কর্মকর্তা ও সিএণ্ডএফকে ম্যানেজ করে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বুধবার বিকেলে গমের ভূষির পরিবর্তে চাল আনা হচ্ছে মর্মে তিনি খবর পান। পার্কি ইয়ার্ডে ভারতীয় ট্রাক তেকে নয়টি ট্রাকে চাল ও ভূষি তোলা হয়।

এর মধ্যে আটককৃত ট্রাক দুটির একটিতে ভূষি থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অপরটিতে থাকা চাল পরিমাপ করে শুল্ক বিভাগে জমা দেওয়া হবে। ওই ট্রাকে ২৬ কেজি বস্তার ৭৭০ বস্তা বাসমতি চাল আছে বলে ট্রাক চালক তাদেরকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যেখানে এক কেজি গমের ভুষির শুল্ক এক টাকা ৪০ পয়সা সেক্ষেত্রে মোটা চালের শুল্ক ৮.৮০ টাকা। বাসমতি চালের শুল্ক অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে শুল্ক বিভাগ ও সিএণ্ড এফ এর কতিপয় সদস্যকে ম্যানেজ করেই সরকারের এ বিশাল শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হচ্ছিল বলে তিনি মনে করেন। আটককৃত চাল ৩৩ ব্যাটালিয়নে নিয়ে পরিমাপ নির্ধারণ করার পর শুল্ক গুদামে জমা দেওয়া হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ি জানান, বুধবার সন্ধায় একজন পরিদর্শক শুল্ক কর্মকর্তা ও কয়েকজন মিসএণ্ডএফ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কাগজপত্র যাঁচাই বাছাই শেষে ওই মাল ছাড় করা হয়। সেক্ষেত্রে কাস্টমস কর্মকর্তাদের যোগসাজস ছাড়া কোন ভাবেই চালের পরির্বতে ভূষি দেখিয়ে এলসি করানোর সুযোগ নেই। কাস্টমসের কতিপয় কর্মকর্তারা অবৈধ সুবিধা নিয়ে এধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।