কাতারের মানুষের জন্য দুধ আসত সৌদি আরব থেকে। সপ্তাহখানেক আগে সৌদি আরবসহ সাত দেশ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে কাতারের সঙ্গে। তাই এক সপ্তাহ ধরে দুধ আমদানিও বন্ধ। কাতারের এক ব্যবসায়ীর বিষয়টা পছন্দ হয়নি। তিনি অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে চার হাজার গরু কিনেছেন। কাতার এয়ারওয়েজের ৬০টি ফ্লাইটে এগুলোকে কাতার আনা হবে। চলতি বছর জুলাই থেকে দুধ নিয়ে আর কোনো দুশ্চিন্তা করতে হবে না কাতারবাসীর।
ব্লু মবার্গ ও গালফ টাইমস জানিয়েছে, এসব গরু কিনেছেন পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং নামে একটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্তা মোতাজ আল- খায়াত। জুলাইয়ের পর থেকেই তিনি দুধের অভাব পূরণ করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সৌদি আরবকে। ধনাঢ্য ওই ব্যবসায়ী বলেছেন, ‘এখন সময় কাতারের জন্য কাজ করার।’
সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগে চলতি মাসের শুরুতে সৌদি আরব, বাহরাইন, আরব আমিরাত, ইয়েমেন, মিসর, লিবিয়া ও মালদ্বীপ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। গত ৫ জুন থেকে শুরু হয় অবরোধ। দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের জন্য সৌদি আরবের ওপর নির্ভর করত কাতার। অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি আমদানি হতো সৌদি আরব থেকেই।
রয়টার্সসহ একাধিক বার্তা সংস্থা জানায়, কাতারের বাজারে এর প্রভাব দেখা যায়। তবে কাতারের সরকার তা স্বীকার করছে না। তুরস্ক থেকে আসছে দুগ্ধজাত পণ্য, ইরান পাঠিয়ে ফল আর সবজি। একইসঙ্গে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের প্রতি নাগরিকদের আগ্রহী করার জন্য প্রচার করছে দেশটির সরকার।
আবাসন ব্যবসার পাশাপাশি কাতারে কৃষিভিত্তিক ব্যবসাও করছেন আল-খায়াত। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও দেশটির সরকারের একটি উদ্দেশ্য। আর আল-খায়াত সে লক্ষ্যেও কাজ করছেন। তাঁর খামারটি ৭০টি ফুটবল মাঠের সমান। ভেড়া রাখছেন সেখানে। যা দুধ আর মাংস দিচ্ছে। এখন তিনি গরুই আমদানি করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
দোহায় নিজের কার্যালয়ে বসে আল-খায়াত জানান, মধ্য জুলাই থেকে আমদানি করা চার হাজার গরু দুধের চাহিদা পূরণ করবে। গরু আসার আগেই যথাযথ ব্যবস্থা করেছেন তিনি। ব্যবসায়ী আল- খায়াত বলেন, ‘প্রতিদিন কেউ অভাবের সংকটে পড়বে না। সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।
আল-খায়াতের ওই কথায় কাতারের মানুষেরও বিশ্বাস আছে। একটি সুপারমার্কেটে দুধ কিনতে এসেছিলেন উম ইসা (৪০) নামে এক ব্যক্তি। তুরস্ক থেকে আসা দুধ কিনেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো কিছুর অভাব নেই। সেটা আমাদের সরকার নিশ্চিত করেছে। এজন্য সরকারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের কোনো ভয় নেই।’