নিজস্ব প্রতিনিধি : সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের দেয় চাউলের ডিলারের বিরুদ্ধে ভোক্তাদের দেয় চাউলে ওজনে কম দেয়া ও তাদের সাথে অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে শিবপুর ইউনিয়নের ৫ টি ওয়ার্ড থেকে প্রায় সহস্রাধিক ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছেন। শিবপুর ইউনিয়নের ওই চাউলের ডিলারের নাম কাজী হাবিবুর রহমান। তিনি নেবাখালী গ্রামের মৃত. কাজী খলিলুর রশিদের ছেলে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, শিবপুর ইউনিয়নের হত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বর্তমান খাদ্যবান্ধব সরকারের দেয়া চাউলের ডিলার কাজী হাবিবুর রহমান তার প্রতিষ্ঠানে চাউল নিতে আসা অত্র ইউনিয়নের ৪, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের দরিদ্র মানুষ দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর তিনি চাল বিতরণ শুরু করলেও বিভিন্ন অজুহাতে তিনি অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগ করেন। তার কথার প্রতিবাদ করলে সেদিন ওই প্রতিবাদকারীকে চাউল পেতে অসহনীয় বেগ পোহাতে হয়। শুনতে হয় কটুবাক্য। এমনকি সরকারের দেয়া চাউল নিয়েও তিনি অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেন। তবে, ওই ডিলারের বিরুদ্ধে চাউল নিতে আসা অনেকে গুরুতর অভিযোগ এনে বলেন, তার কাছ থেকে ৩০ কেজি চাউল নেওয়ার পর বাড়ীতে এসে মাপজোঁক করার পরে অনেকে ২/৩ কেজি চাউল কম পেয়েছে। তাছাড়া, ডিলার হাবিবুর রহমান চাউল বিতরনকালে যে সব ভাষা প্রয়োগ করেন তা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পর্যায়ে পড়ে বলে অনেকে জানান। অভিযোগের পক্ষে স্বাক্ষরকারী অনেকের সাথে কথা বলে সত্যতা মিলেছে। ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী এলাকাবাসীর পক্ষে মো. ইউনুস আলী বলেন, তিনি চাউলের ওজন কম দেন। ৩০ কেজি চাল দিলে মেপে ২৭ কেজি পাওয়া যায়। তিনি যে ভাষা দরিদ্র মানুষের ব্যবহার করেন তা এতো বেশী খারাপ যে সে ভাষা মুখে আনাও পাপ। গোদাঘাটা গ্রামের অভিযোগকারী রেহেনা খাতুন বলেন, ওখান থেকে চাউল আনার পর মেপে দেখিনি তবে অনেকের সাথে তিনি খারাপ ব্যবহার করেন। একই এলাকার আহম্মদ আলী বলেন, তার ভাষা খুব খারাপ। হাজী মানুষের ভাষা এতো খারাপ তা আমি আগে অন্য কারোর দেখিনি। তবে চাউলের ওজনে কম দেয় কিনা মেপে দেখিনি। আলমগীর হোসেন বলেন, আমার চাউলে ওজনে কম পাইনি তবে তার ভাষা ভালোনা। আফসার আলী বলেন, ১৫ টাকা কেজি দরে চাউল কিনে মেপে দেখিনি। তবে তার আচরণগত দিক খুব খারাপ। আমাকে একদিন গালি দিয়েছিল। অধিকাংশ মানুষের সাথে তিনি টক টক কথা বলেন। উক্ত বিষয়ে জানার জন্য শিবপুরের ডিলার হাবিবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই ইউনিয়নে আমি আগেও চাউলের ডিলার ছিলাম। একটি চক্র তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সফল করতে এলাকার কিছু মানুষ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করিয়েছে। তবে ওই অভিযোগে যাদের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে বলে দাবী করা হচ্ছে তা প্রকৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর না। নকল স্বাক্ষর। আমার বিরুদ্ধে যে অবিযোগ আনা হচ্ছে তা মিথ্যা। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিবপুর ইউনিয়নের একজন প্রবীণ শিক্ষক বলেন, যে ব্যক্তি দরিদ্র মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে তার ডিলারশিপ বাতিল করা দরকার। জনবান্ধব-উন্নয়নমুখী সরকারের দেয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য প্রদেয় চাউল নিয়ে ডিলার কাজী হাবিবুর রহমান যে কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তা সরকারের জন্য হুমকিস্বরুপ। স্থানীয় সচেতন মহল শিবপুর ইউনিয়নের ডিলার কাজী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করত: তার ডিলারশিপ বাতিলের জন্য উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এধরনের কোন অভিযোগ আমার হাতে আসেনি। আপনার মাধ্যমে প্রথম জানতে পারলাম। তারপরও তদন্তের জন্য খাদ্যকর্মকর্তাকে বলছি। সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাতক্ষীরা সদরের ফুডইন্সপেক্টর আব্দুল বাসিত বলেন ইউনও মহোদয় তদন্তের জন্য উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তের কাজ চলছে।