সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে চান্স পাইয়ে দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ!

By daily satkhira

January 17, 2023

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সরকরি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার নামে প্রতারণা করে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে উত্তর কাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য সাইফুল ইসলামের নামে।

অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লাবসা ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের মোঃ মোবারক হোসেনের ছেলে ও উত্তর কাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবগঠিত পরিচালনা কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য।

অভিযোগ অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত লটারি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে সাতক্ষীরা পৌরসভার ০১নং ওয়ার্ডের উত্তর কাটিয়া এলাকার এ.এস.এম আলমগীর হুসাইন আল-ফারুকী (তোতা) ও আমিনা সুলতানা দম্পতির সন্তান ইমাম হোসেন। ইমাম হোসেনের দাদা হাসানুজ্জামান হাসান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার।

সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভর্তির লটারি প্রক্রিয়ায় ইমাম হোসেনের নাম ভর্তির জন্য নির্ধারিতদের তালিকায় না এলেও অপেক্ষমান তালিকায় পঞ্চম হিসেবে তার নাম আসে। আর এই অপেক্ষমান তালিকায় তার নাম থাকার সুযোগটিই গ্রহণ করে প্রতারক সাইফুল ইসলাম।

ইমাম হোসেনকে অপেক্ষমান তালিকা থেকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষকদের খুশি করার নাম করে ইমাম হোসেনের বাবা এ.এস.এম আলমগীর হুসাইনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক সাইফুল ইসলাম। অথচ কোনরকম টাকা-পঁয়সা ছাড়াই স্বচ্ছ এবং নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অপেক্ষমান তালিকা থেকে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীতে ভর্তির সুযোগ পায় ইমাম হোসেন। এদিকে প্রতারক সাইফুল ইসলামের কাছে সেই ২০হাজার টাকা ফেরত চাইলে তিনি তা ফেরত না দিয়ে বরং তালবাহানা করতে থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাইফুলের স্থায়ী কোন পেশা না থাকলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উচ্চমহলে তার যোগাযোগ আছে বলে প্রচার করে সহজ-সরল মানুষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছেন তিনি।

ছেলের ভর্তির নামে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইমাম হোসেনের বাবা এ.এস.এম আলমগীর হুসাইন বলেন, আমার ছেলেকে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের খুশি করার নামে আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে সাইফুল। ওয়েটিং লিস্টে থাকলে টাকা না দিলে ভর্তি করানো যাবে না বলে আমাকে বিভ্রান্ত করে তিনি আমার কাছ থেকে এই টাকা নিয়েছেন। পরবর্তীতে আমার ছেলে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভর্তির সুযোগ পেলেও সাইফুল সেই টাকা ফেরত না দিয়ে বরং তালবাহানা করছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ২০হাজার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি ওই ছেলেটাকে ভর্তি করানোর জন্য আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করি। আমাকে অনেক দৌড়ঝাপ ও পরিশ্রম করতে হয়েছে তার পারিশ্রমিক হিসেবে টাকাটা নিয়েছি। স্কুলের শিক্ষকদের খুশি করতে কোন টাকা নেয়নি এবং ভর্তির জন্য শিক্ষকদেরও কোন টাকা দেওয়া লাগেনি। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই তো ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে তাহলে আপনার টাকা নেওয়াটা কি ঠিক হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এটা যেমন ঠিক, তেমনি আমি ছেলেটাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য পারিশ্রমিক হিসেবে টাকাটা নিয়েছি শিক্ষকদের দেওয়ার জন্য না।

এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রকৃতপক্ষে ইমাম হোসেন তো এ.এস.এম আলমগীর হুসাইনের ছেলে না। ওনাদের কোন এক আত্মীয়ের ছেলে। ওনারা বরং আমার সাথে বাচ্চাটির পরিচয় গোপন করে প্রতরণা করেছে। পরিচয় গোপন করে ভর্তি করাতে আমার বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করা গেগেছে তার পারিশ্রমিক হিসেবেই আমি টাকাটা নিয়েছি।