নিজস্ব প্রতিনিধি : সপ্তাহ ব্যাপি আনন্দ মেলার অনুমতি নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের কঠোর নজরদারির পরেও কলারোয়ার একশ্রেণির সুযোগ সন্ধানীরা প্রশাসনের অনুমতির শর্তকে তোয়াক্কা না করে চালাচ্ছে লটারি নামক জুয়া। অথচ যাদের এটি দেখভাল করার কথা তারা ঘুমিয়ে রয়েছেন। ২০ টাকা মূল্যের এই জুয়া লটারি কিনতে বিভিন্ন লোভনীয় পুরষ্কার ঘোষনা এবং ফলচাতুরির মাধ্যম নিয়ে চলেছে তারা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কলারোয়ার স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি বিশেষ এক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরকে ম্যানেজ করে বিক্রি করে চলেছে এই অবৈধ লটারি টিকিট। আর এই লটারির নেশায় স্বর্বশান্ত হতে চলেছে উপজেলার যুবসমাজ ও নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন।
এছাড়াও রাত গভীর হলেই মেলায় চলছে নগ্ন নৃত্য ও জুয়ার আসর। কার সাজির মাধ্যমে এক দিন এক এক এলাকায় প্রথম দ্বিতীয় পুরস্কার পাইয়ে দেওয়ার মাধ্যমে টিকিট বিক্রির হুযোগ তুলে দেওয়া হচ্ছে। কলারোয়ার সচেতন মহলের দাবি সর্বানাশা উঠাও বাচ্চা লটারি এখনই বন্ধ করা হোক।
এবিষয়ে কলারোয়ায় লটারি পরিচালনাকারি মোসলেমের কাছে জানতে চাইলে, লটারির কথা অকপটে স্বীকার করেন এবং জুয়া অশ্লীল নৃত্যের কথা অস্বীকার করে বলেন, জনৈক আনিস সাংবাদিকদের বিষয়টি দেখছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে কলারোয়ায় আনন্দ মেলার অবৈধ লটারী বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা। তারপরও কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছে লটারী নামক জুয়া। অবৈধ লটারীর পরিচালক খুলনা সোনাডাঙ্গার স্বপন এর খুঁটির জোর কোথায়। আনন্দ মেলায় অবৈধ লটারীর বন্ধ না হওয়ায় এজন্য স্বপন ও মোসলেমের নেতৃত্বে একটি টিম বিভিন্ন মহলে ছুটছে দিন-রাত।
আনন্দ মেলার নামে এসব লটারী কিনে প্রতারিত হচ্ছে হাজারো মানুষ। সেই সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বাড়ছে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে। আনন্দ মেলার অবৈধ লটারীর ক্রয় করে পুরস্কারের আশায় অনেক পারিবারে অশান্তি দেখা দিয়েছে খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে। এসব লটারীর মূল ক্রেতা রিকশা-ভ্যানচালক, চা দোকানদার, মুদি দোকানদার, দিনমজুর, স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরাসহ নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। পুরস্কারের আশায় প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার লটারী টিকিট ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছেন তারা। এ ছাড়া লটারীর ড্র হয় গভীর রাত পর্যন্ত। এতে মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বেড়েছে। এদিকে মেলার গেটের বাইরে ও ভিতরে স্টলে গরীব মানুষের রক্ত চোষা লটারীর টিকিট বিক্রি করার হিড়িক চলছে। অবৈধ লটারীর টিকিট কিনতে স্কুল- কলেজের শিক্ষার্থীরা, ভ্যান চালক, বয়-বৃদ্ধরা ভিড় করছে। আনান্দ মেলায় এই অবৈধ লটারীর পরিচালক খুলনা সোনাডাঙ্গার স্বপন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা বাইরে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। এখন আমরা গেট টিকিট বিক্রি করছি এবং গেট টিকিটে লটারী চলছে । অবৈধ লটারি টিকিট বাণিজ্য বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল। এব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের এনডিসি সাংবাদিকদের জানান, মেলার অনুমতি দেওয়া হলেও সেখানে লটারির কোন অনুমতি নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন জানান এই কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস জানান, আমাদের জায়গা থেকে কয়েকবার টিকিট বিক্রির গাড়ী আটক করেছি। কিন্তু তারপরও লটারী তারা চালাচ্ছেন। আমাদের দপ্তর ছাড়াও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীরও দায়িত্ব রয়েছে। আপনি তাদের সাথেও কথা বলেন। কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নাসির উদ্দীন মৃধা বলেন, আমি ছুটিতে আছি। থানায় ফিরে বিস্তারিত বলতে পারবো।