নিজস্ব প্রতিনিধি : কালিগঞ্জে জমিজমার বিরোধের জেরে মিথ্যা বাল্যবিবাহের নাটক সাজিয়ে নাবালিকা কন্যাসহ পরিবারের সদস্যদের সম্মানহানি এবং হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোত্তালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন, কালিগঞ্জের রতনপুর ইউনিয়নের গোয়ালপোতা গ্রামের মৃত আবুল গাজীর স্ত্রী ইয়ারুন নেছা।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আমি একজন বিধবা নারী। একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে মরহুম স্বামীর ভিটেবাড়ীতে অতিকষ্টে বসবাস করে আসছি। স্বামীর ওয়ারেশ আমি এবং আমার একমাত্র কন্যা। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর রতনপুর ইউনিয়ন ১,২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মোছা: নূর নাহার খাতুন অবৈধভাবে আমার স্বামীর সম্পত্তি দখলের পায়তারা চালিয়ে আসছিলো। ইতোমধ্যে নূর নাহারের লোকজন আমাদের উপর কয়েকবার হামলা ও মারপিটও করে। কোনভাবেই সুবিধা করতে না পেরে সম্পত্তির লোভে নূর নাহার তার পুত্রের সাথে আমার ৭ম শ্রেণি পড়–য়া নাবালিকা কন্যার বিবাহের প্রস্তাব দেয়।
কিন্তু আমার কন্যা নাবালিকা হওয়ায় বিবাহে রাজি না হওয়ায় মহিলা মেম্বর আমার উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং নানা ভাবে হয়রানির চক্রান্ত করতে থাকে। একপর্যায়ে আমার নাবালিকা কন্যাকে রেজাউল ইসলামের পুত্রের সাথে বিবাহ দিয়ে মর্মে একটি ভিত্তিহীন মিথ্যা প্রচার করতে থাকে। এমনকি সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার নাবালিকা কন্যা এবং ওই ছেলের ছবি সংযুক্ত করে পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে। অথচ আমার নাবালিকা কন্যাকে আমি বিবাহ দেইনি। এঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তার উপর আমরা হামলা করেছি মর্মে থানায় মিথ্যা অভিযোগ এবং সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। পরে উল্টো মহিলা মেম্বর নূর নাহার খাতুনতার স্বামী জাহিদুন্নবী মুন্না, পুত্র শিমুল, তাদের সহযোগি মিয়ারাজের স্ত্রী জেসমিন, আবু সাঈদের স্ত্রী ফিরোজা খাতুন, আলমগীর হোসেনের ২য় কন্যা লাকী আক্তার, ইয়াছিন আলীর স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুনসহ কতিপয় ব্যক্তি সংঘবদ্ধ হয়ে আমাকে এবং রেজাউল ইসলামের স্ত্রী সালমাকে বেধড়ক মারপিট করে।এছাড়া আমার নাবালিকা কন্যার গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে এবং তার পুত্র শিমুল আমার কন্যার জামা কাপড় ছিড়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। বর্তমানে সালমা খাতুন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এঘটনার পর থেকে আমার নাবালিকা কন্যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, মান সম্মানের কারনে সে বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।
তার বিবাহ হয়নি অথচ একটি ছেলের ছবির পাশে তার ছবি সংযুক্ত করে পত্রিকায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন করানো হয়েছে। এধরনের মিথ্যাচারের কারনে দুটি জীবন নষ্টের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে। রেজাউল ইসলামের পুত্র সদ্য এইচ এসসি পাশ করেছে, আমার কন্যা ৭ম শ্রেণিতে পড়ে। তারা দুজইন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। বাংলাদেশের আইনে কোনভাবেই মেয়ের ছবি দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও শুধুমাত্র আমাদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে এবং হয়রানি করতে এধরনের জঘন্য কাজ করা হয়েছে। বর্তমানে আমার কন্যাকে সব সময় সাথে সাথে রাখতে হচ্ছে। না জানি যে কোন সময় আমার কন্যা আত্মহত্যা বা অন্য কোন দুর্ঘটনা না ঘটিয়ে বসে। তিনি পর সম্পদ লোভী ওই মহিলা মেম্বরসহ তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আমার নাবালিকা কন্যার ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহারের সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।