আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রামীণ মানুষের একটি অতিপরিচিত ফলের নাম “করমচা”। এটি খেতে টক হলেও কাচা অবস্থায় এই ফলটি সবুজ, আর পাকলে রক্তের মতো লাল হয়। কাটাযুক্ত গুল্মজাতীয় এই ফলটির রয়েছে বহু পুষ্টিগুণ। তবে, গ্রামীণ এই ফলটি এখন অনেকেই শখের বশে বাড়ির ছাদে, বাগানে বা টবে লাগাচ্ছেন। এর ইংরেজি নাম ইবহমধষ পঁৎৎধহঃ বা ঈযৎরংঃ’ং ঃযড়ৎহ. বিশ্ব কোষ উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে, করমচায় ফ্যাট বা কোলেস্টেরল না থাকায় তা ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য খুব ভাল। ওজন কমাতে সাহায্য করা এই ফলটি খাবারে রুচি বৃদ্ধি করে। মৌসুমী সর্দি-জ্বর, স্কাভি, দাঁত ও মাড়ির নানা রোগ প্রতিরোধে ফলটি অতুলনীয়। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোসহ গায়ের চুলকানি ও ত্বকের নানা রোগ প্রতিরোধে জুড়ি নেই করমচার। শরীরের দূরণ বহিষ্করণে সহায়তা করে করমচা যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষতমা বাড়ায়। পেটের অসুখ নিরাময়, শরীরের ক্লান্তি দূর, বাতরোগ ও ব্যথা নিরাময়ে কাজ করে করমচা। এছাড়াও করমচাতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন এ যা চোখের জন্য উপকারী। করমচা গাছের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলে কালাজ্বর দ্রুত নিরাময় হয়। করমচা গাছের মূলে রয়েছে হৃদরোগ নিরাময়ী উপকারী ক্যারিসোন, বিটাস্টেরল, ট্রাইটারপিন, ক্যারিনডোনা ও লিগনাম। কাঁচা করমচার রস কৃমিনাশক হিসেবেও খুব ভাল। উইকিপিডিয়ায় আরও বলা হয়েছে, প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় রয়েছে এনার্জি ৬২ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ১৪ গ্রাম, প্রোটিন ০.৫ গ্রাম, ভিটামিন-এ ৪০ আইইউ, ভিটামিন সি ৩৮ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লেভিন .১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন .২ মিলিগ্রাম, আয়রন ১.৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২৬০ মিলিগ্রাম ও কপার ০.২ মিলিগ্রাম। করমচার বিষয়ে উদ্ভিদবিদ মনিরুল ইসলাম জানান, করমচা একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা থেকে শুরু করে ফল পর্যন্ত পুষ্টিগুণে ভরা। এজন্য বাড়িতে প্রতিবেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে করমচা লাগানো যেতে পারে।