সাতক্ষীরা

ব্যবসায়িক চুক্তিভঙ্গ করে কোটি টাকা আত্মসাতের চক্রান্ত :  ডিসি-এসপির হস্তক্ষেপ কামনা 

By daily satkhira

June 20, 2023

নিজস্ব প্রতিনিধি : জাপা নেতা ছাত্তার মোড়ল কর্তৃক ব্যবসায়িক চুক্তি ভঙ্গ করে খাতাপত্র আটক রেখে হিসাব না দিয়ে কোটি কোটি অর্থ অবৈধভাবে আত্মসাতের চক্রান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের জি এম শফিউল্যাহ্ বাহার।

মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে জি এম শফিউল্যাহ্ বাহার অভিযোগ করে বলেন, আমার পিতা মৃত মো: শমসের আলী গাজী জীবিত থাকা অবস্থায় শমসের আলী বিগত ১৯৯৪ সাল হতে বন্দকাটি গ্রামের মৃত কোরবান আলী মোড়লের পুত্র আঃ ছাত্তার মোড়লের সাথে চিংড়ী/মৎস্য চাষ করতেন। পিতা এবং ছাত্তার মোড়ল যৌথভাবে ৬টি মৎস্য খামার (প্রকল্প) ছিলো। যার মধ্যে বিসমিল্লাহ-০১ প্রকল্পে কাকড়াবুনিয়া মৌজায় আমার পিতার ১২৭ বিঘা জমির মালিকানা রয়েছে। বিসমিল্লাহ-০৩ প্রকল্পের ১ হাজার ৮ বিঘা জমি রয়েছে। সেখানে মোট ১১০৭ অংশের মধ্যে আমার পিতার ৫০০ অংশ এবং ছাত্তার মোড়ল ৫০০ অংশ ও অন্যান্য শেয়ার ১০৭ অংশ। প্রকল্প- ০৪ ঘোলা মৌজায় ২৫৬ বিঘা জমির উপর, সেখানে ১০০ অংশের মধ্যে আমার পিতার ৬০% এবং ছাত্তার মোড়ল ৪০% অংশ রয়েছে।

তিনি বলেন, আমার পিতা উক্ত ছাত্তার মোড়লকে ভাইয়ের মত শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস করতেন। সে কারণে সরল বিশ্বাসে প্রকল্পগুলোর শুরু থেকেই ব্যবসার সকল হিসাব নিকাশ এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ছাত্তার মোড়ল পালন করতেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে উল্লেখিত ৩টি প্রকল্পের সময় লাভের টাকা, তথাকথিত ব্যাংক জমার নামে মজুদ টাকা এবং খাতাপত্র আটক রেখে অংক বদলিয়ে অসাধু উপায়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এটা নিয়ে আমার পিতা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পিতা গুরুতর অসুস্থ্ থাকা অবস্থায় আমরা চার ভাই জি এম হাবিবুল্যাহ, জি এম শফিউল্যাহ বাহার, জি এম রবিউল্যাহ বাহার ও জি এম সাইফুল্লাহ বাহার ছাত্তার মোড়লের কাছে ব্যবসায়ের সঠিক হিসাব নিকাশ দাবি করলে সে কোন হিসাব বা খাতাপত্র দিবে না বলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে হাকিয়ে দেয়। প্রকল্পের মধ্যে শুধুমাত্র বিসমিল্লাহ প্রকল্প-০৫ প্রকল্পে হতে আমার পিতার অংশীদারিত্ব ফেরত নিয়েছি। এছাড়া অন্য প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার কোন ভাগ না দিয়ে পূর্বের ন্যায় অবৈধভাবে আত্মসাতের গভীর চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।

এঘটনায় উপায়ন্তর হয়ে আমরা শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন ও কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করি। দুই উপজেলা চেয়ারম্যানের সম্মুখে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে শালিস হয়। সেখানে ছাত্তার মোড়ল স্বীকার করেন যে, আমার কাছে তারা অনেকগুলো টাকা পাবে। ২০১৯ সাল থেকে তাদের প্রতি বছরের টাকা প্রতি বছরেই বুঝিয়ে দেবো। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে তাল বাহানা করে যাচ্ছেন। এদিকে আমার পিতা ২০২১ সালের ১০ জুন আমার পিতা মারা যান। ২৫ বছর একসাথে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন অথচ পিতার মৃত্যুর পর ছাতার মোড়ল দেখতেও আসেনি এবং জানাজা নামাজেও অংশ গ্রহণ করেনি।

শালিসের পর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি নামমাত্র কিছু টাকা আমাদের দিয়েছেন। কোন সঠিক হিসাব আমাদের দেয়নি। এমনকি গত ২০২২ সালের ২০/১২/২২ তারিখের প্রকল্প ০৩ ও ০৪ এর মের থেকে খাতা সরিয়ে নিজের কাছে রেখেছেন ছাত্তার মোড়ল। এছাড়া আমাদের হয়রানি করতে ছাত্তার মোড়ল আমার ছোট ভাই জি এম রবিউল্যাহ’র বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে এবং বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে র‍্যাব-পুলিশ পাঠানোর ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

বিগত ২০১৩ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সকল খাতাপত্র হাজির করে সঠিকভাবে হিসাব নিকাশ করে সমুদয় পাওনা টাকা আমাদের বুঝিয়ে দিয়ে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।