সাতক্ষীরা

স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হতে পারেননি সাতক্ষীরার রফিকুল পথে পথে ভাজা বিক্রি করে কষ্টে জীবন কাটে এই বীর সৈনিকের

By daily satkhira

September 20, 2016

আসাদুজ্জামান: বঙ্গবন্ধুর ডাকে একাত্তরের রণাঙ্গণে যারা অস্ত্রহাতে নিয়ে পাক সেনাদের পরাজিত করেছিলেন। যাদের রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে, সেই সব বীর সেনাদের কেউ কেউ স্বাধীনতার ৪৪ বছর পার হলেও আজও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। পাননি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃতি বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। এমনই একজন সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছা এলাকার মৃত নেছার উদ্দীন মোড়লের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম। বাইসাইকেল যোগে পথে পথে ভাজা বিক্রি করে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নিয়ে এখন অত্যন্ত কষ্টে জীবন কাটে এই বীর সৈনিকের। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের সনদপত্র থাকার পরও মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ধর্না দিচ্ছেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে স্বশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন রণক্ষেত্রে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কাকডাঙ্গা সম্মুখযুদ্ধ। কমান্ডার শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পাকবাহিনীর বিপক্ষে তিনি সেখানে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার ফলে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৯ম সেক্টরের সর্বাধিনায়ক মেজর জলিলের তিনি নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। মুক্তিযুদ্ধে নিজের ব্যবহৃত অস্ত্র জমা দেয়ার সনদপত্র থাকলেও সেটি তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘটনা বর্ণনাকালে তিনি সাংবাদিকদের কাছে তার সহযোদ্ধা তিনজনের সনদপত্রসহ মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত সুপারিশকৃত বিভিন্ন কাগজপত্র দেখান। তিনি আরো জানান, তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন উর্দ্ধতন দপ্তরে এবং সাবেক ও বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের কাছে বার বার ধর্না দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। অবহেলিত বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তার সাথে যুদ্ধকালীন সময়ের তিন জন মুক্তযোদ্ধা সুপারিশও করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন একাত্তরের এই বীর যোদ্ধা।